রবিবার ● ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০১৭
প্রথম পাতা » কৃষি » রাঙামাটিতে চাকমা ও মারমা ভাষা শিক্ষকদের মাঝে সনদ প্রদান
রাঙামাটিতে চাকমা ও মারমা ভাষা শিক্ষকদের মাঝে সনদ প্রদান
ষ্টাফ রিপোর্টার :: (৭ ফাল্গুন ১৪২৩ বাঙলা : বাংলাদেশ সময় বেলা ২.২৪মি.) রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ ও বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ইনিশ্যাটিভ ফর সোসিয়াল ডেভেলপমেন্ট (আইএসডির)’র যৌথ উদ্যোগে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্টীর চাকমা ও মারমা ভাষার উপর প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষকদের মাঝে নিয়োগপত্র ও সনদ বিতরণ করা হয়েছে।
১৮ফেব্রুয়ারি শনিবার বিকেলে রাঙামাটি জেলা শিল্পকলা একাডেমী মিলনায়তনে এক বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের মাধ্যমে জেলার ৭টি উপজেলার ৫০জন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষকদের হাতে সনদ ও নিয়োগপত্র তুলে দেয়া হয়। এর মধ্যে রাঙামাটি সদর উপজেলার ১৪জন, নানিয়ারচর উপজেলায় ৮জন, বাঘাইছড়ি উপজেলায় ৫জন, লংগদুতে ৭ জন, বরকলে ৭জন, কাউখালীতে ৬জন এবং জুরাছড়ি উপজেলার ৩জনকে চাকমা ও মারমা ভাষার শিক্ষকদের সনদ ও নিয়োগপত্র দেয়া হয়।
আইএসডি’র নির্বাহী পরিচালক প্রনব কুমার চাকমার সভাপতিত্বে নিয়োগপত্র প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বৃষ কেতু চাকমা।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বৃষ কেতু চাকমা বলেন, পার্বত্য এলাকার চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, তঞ্চঙ্গ্যা ও অন্যান্য ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীদের স্ব স্ব মাতৃভাষা রয়েছে। পৃথিবীতে টিকে থাকতে হলে ভাষা, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য সংরক্ষণ করা অত্যন্ত জরুরি। ভাষা,সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য টিকে থাকলে তবেই একটি জাতি টিকে থাকতে পারে। সেজন্য নিজস্ব জাতিসত্তার ভাষা সংরক্ষণে শিক্ষকদের এগিয়ে আসতে হবে। বর্তমান সরকার ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর ভাষা, সংস্কৃতি, ও ঐতিহ্য সংরক্ষণে অত্যন্ত আন্তরিক। এজন্য চলতি বছর থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ক্ষুদ্র জাতিসত্তার নিজস্ব ভাষায় পাঠ্যপুস্তক ছাপানো হয়েছে। ইতোমধ্যে এসব পাঠ্য বই বিভিন্ন প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বিতরণ করা হয়েছে। পরে আইএসডি’র এসব কর্মকান্ড পরিচালনার জন্য জেলা পরিষদ হতে দুই লক্ষ টাকা প্রদানের প্রতিশ্রুতী দেন চেয়ারম্যান।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন সহকারি প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মফিজুল ইসলাম ও চাকমা ভাষা গবেষক প্রসন্ন কুমার চাকমা প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন নাটঘর এর অধ্যক্ষ সজীব চাকমা।
নিয়োগপত্র প্রাপ্ত শিক্ষকরা জেলার ৭টি উপজেলার বিভিন্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহযোগি শিক্ষক হিসেবে সপ্তাহের একদিন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর শিক্ষার্থীদের পাঠদান করাবেন। তবে আপাতত তারা স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠীর ভাষা, বর্ণ, ইত্যাদি বিষয়ে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করবেন। পরবর্তীতে সরকার মাতৃভাষার মাধ্যমে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের ব্যাপারে কোন পদক্ষেপ নিলে সনদ ও নিয়োগপত্র প্রাপ্ত এসব শিক্ষকদের অগ্রাধিকার দেয়া হবে বলে অনুষ্ঠানে জানানো হয়।
শেষে স্থানীয় ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্টীর শিল্পীদের পরিবেশনায় পরিবেশিত হয় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।