রবিবার ● ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০১৭
প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম বিভাগ » রাঙামাটির পর্যটন সেক্টরের উন্নয়নের মাধ্যমে জেলার উন্নয়ন সম্ভব : বৃষ কেতু চাকমা
রাঙামাটির পর্যটন সেক্টরের উন্নয়নের মাধ্যমে জেলার উন্নয়ন সম্ভব : বৃষ কেতু চাকমা
ষ্টাফ রিপোর্টার :: (৭ ফাল্গুন ১৪২৩ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৬.৪৮মি.)রাঙামাটির পর্যটন সেক্টরের উন্নয়ন করা গেলে বিদেশের ন্যায় রাঙামাটিতেও দেশী-বিদেশী পর্যটকদের ঢল নামবে বলে মন্তব্য করেছেন রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বৃষ কেতু চাকমা।
তিনি বলেন, দেশের অন্যান্য জেলার তুলনায় এ জেলায় রয়েছে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য, রয়েছে কৃত্রিম কাপ্তাই লেক ও পাহাড় যা একত্রে অন্য কোন জেলায় নেই। এ প্রাকৃতিক সম্পদগুলোকে কাজে লাগিয়ে পর্যটন সেক্টরের মাধ্যমে আমাদের এ জেলার অর্থনৈতিক উন্নয়ন ঘটাতে হবে। এর জন্য প্রয়োজন সকলের আন্তরিকতা ও সহযোগিতা।
১৯ফেব্রুয়ারি রবিবার রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের সভাকক্ষে আয়োজিত পরিষদের মাসিক সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
পরিষদের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা এসএম জাকির হোসেন এর পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সভায় রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্যা এবং হস্তান্তরিত বিভাগের কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
সভায় স্বাস্থ্য বিভাগের নবনিযুক্ত সিভিল সার্জন ডা. শহীদ তালুকদার বলেন, মন্ত্রণালয় কর্তৃক রাঙামাটিতে ইতিমধ্যে ৩৮জন নার্স প্রদান করা হয়েছে। তাদের জেলার বিভিন্ন উপজেলায় প্রদান করা হয়েছে। তিনি বলেন, এ জেলার শূন্য চিকিৎসকের পদ পূরণে মন্ত্রণালয়ে নিয়মিত যোগাযোগ অব্যাহত আছে।
এছাড়া রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতাল, নানিয়ারচর, বিলাইছড়ি ও বাঘাইছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের সীমানার মধ্যে যে সমস্ত অবৈধ স্থাপনা গড়ে উঠেছে সেগুলো উচ্ছেদের বিষয়ে প্রশাসন কর্তৃক শীঘ্রই পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে।
জনস্বাস্থ্য বিভাগের প্রকৌশলী বলেন, পূর্বের পানির বিলের পরিবর্তে ২০শতাংশ বাড়িয়ে নতুন বিল প্রদান করা হবে।
এছাড়া শহরের যে সমস্ত এলাকায় পানি সরবরাহের লাইন লিকেজ রয়েছে সেগুলো মেরামত করা হচ্ছে। তিনি বলেন, জেলার ৮টি উপজেলায় যে সমস্ত নষ্ট রিংওয়েল টিউবওয়েল রয়েছে সেগুলো মেরামতের বিষয়ে কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক বলেন, বর্তমানে বোরো মৌসুমের চাষাবাদ চলছে। জেলার বিভিন্ন উপজেলায় জুম ও অন্যান্য চাষীদের মাঝে আউশ ধান, ইউরিয়া ও অন্যান্য সার প্রদানের পরিকল্পনা নেয়্ াহয়েছে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বলেন, জেলার বিভিন্ন বিদ্যালয়ে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী শিক্ষার্থীদের মাঝে স্ব স্ব ভাষায় পাঠ্যবই প্রদান করা হয়েছে। জেলা পরিষদ-জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের সাথে চুক্তি মোতাবেক বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা ইনিশিয়াটিভ ফর সোসিয়াল ডেভেলপমেন্ট (আইএসডির) কর্তৃক চাকমা ও মারমা ভাষার অক্ষরের উপর প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষকরা জেলার বিভিন্ন বিদ্যালয়ে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী শিক্ষার্থীদের তাদের স্ব স্ব ভাষায় পাঠদান করাবে। এছাড়া সরজমিন তদন্ত পূর্বক জেলার বিভিন্ন উপজেলার বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো জাতীয়করণ করার লক্ষ্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পত্র প্রেরণ করা হয়েছে।
মাধ্যমিক শিক্ষা বিভাগের শিক্ষা কর্মকর্তা বলেন, চলতি মাসে ৭ম শ্রেণী বৃত্তি পরীক্ষা সমাপ্ত হয়েছে। পরীক্ষার্থীদের খাতা মূল্যায়ন করা হবে।
মৎস্য বিভাগের কর্মকর্তা জানান, জেলে নিবন্ধন ও মৎস্য চাষীদের কারিগরী প্রশিক্ষণ প্রদান কার্যক্রম চলছে।
জেলা সমাজসেবা বিভাগের কর্মকর্তা বলেন, সমাজসেবা কর্তৃক তালিকাভুক্তদের মাঝে ক্ষুদ্রঋণ, বয়স্ক ভাতা, মুক্তিযোদ্ধা ভাতা, প্রতিবন্ধী শিক্ষা ভাতা, সঠিকভাবে প্রদান করা হচ্ছে।
প্রাণী সম্পদ বিভাগের কর্মকর্তা জানান, চলতি মাসের ২৩-২৭ফেব্রুয়ারি ২০১৭পর্যন্ত প্রাণী সম্পদ বিভাগ কর্তৃক ‘সেবাসপ্তাহ’ পালন করা হবে।
জেলা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের কর্মকর্তা বলেন, আগামী মাস হতে বিভিন্ন বিষয়ের উপর বেকার যুবদের প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে। এছাড়া অন্যান্য প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চলছে।
সভায় হস্তান্তরিত বিভাগের অন্যান্য কর্মকর্তাগণ তাদের বিভাগের স্ব স্ব কার্যক্রম উপস্থাপন করেন এবং বিভিন্ন সমস্যা ও সম্ভাবনার কথা তুলে ধরে মতামত ও পরামর্শ প্রদান করেন।
পরিষদ চেয়ারম্যান বলেন, এ জেলায় বসবাসরত জনগণের কল্যাণ ও উন্নয়নের স্বার্থে সরকার আমাদের নিয়োগ দিয়েছেন। তাই সকল বিষয়ে আমাদের গুরুত্ব দিতে হবে।
তিনি বলেন, পরিষদের হস্তান্তরিত বিভাগ সবগুলোই গুরুত্বপূর্ণ এবং জনকল্যাণমূলক প্রতিষ্ঠান। কর্মকর্তাদেরকে পরিষদের প্রতিটি মাসিক সভায় উপস্থিত থেকে নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের কাজের অগ্রগতি, সমস্যা ও সম্ভাবনার বিষয়গুলো তুলে ধরতে হবে। তবেই কাজের অগ্রগতি ও জেলার উন্নয়ন ঘটবে।