রবিবার ● ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০১৭
প্রথম পাতা » খুলনা বিভাগ » গাংনীতে অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই
গাংনীতে অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই
মেহেরপুর প্রতিনিধি :: (৭ ফাল্গুন ১৪২৩ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় রাত ৮.৪১মি.) মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আজো গড়ে ওঠেনি শহীদ মিনার। এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা ফুল দিয়ে শহীদদের সম্মান জানাতে পারে না। অনেক প্রতিষ্ঠান শুধু জাতিয় পতাকা তুলে দায়িত্ব পালন করেন। কোন আলোচনা না করায় মহান ভাষা আন্দোলন কিংবা অমর একুশে ফেব্রুয়ারি সম্পর্কে কিছুই জানে না শিক্ষার্থীরা।
গাংনী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্র জানায়, ৬৭ টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং ৮টি মাদরাসা রয়েছে। এগুলোর মধ্যে মাত্র ৫ টি বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার রয়েছে। অপরদিকে উপজেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় ১৬১টি সরকারি, ৩টি রেজিঃ, একটি এবতেদায়ি মাদ্রাসা এবং ৬৪টি কেজি স্কুল রয়েছে । এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কোন শহীদ মিনার নেই। এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা অমর একুশে, ভাষা আন্দোলন কিংবা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস সম্পর্কে তেমন কিছুই বলতে পারেনি। আবার শিক্ষার্থীরা ফুল দিয়েও শহীদদের সম্মান জানাতে পারে না।
উপজেলা সদর ছাড়া গ্রামাঞ্চলের যেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার রয়েছে সেগুলো রয়েছে অযত্নে অবহেলায়। এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান একুশে ফেব্রুয়ারির দিন বন্ধ থাকে। কোনো কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শহীদ মিনারে স্থানীয় রাজনৈতিক দল ও সামাজিক সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান মাঝে মধ্যে ফুল দিয়ে থাকে। এখানে ভাষা আন্দোলন বা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে কোনো আলোচনা সভাও হয় না। শুধু পতাকা উত্তোলন করা হয়। ফলে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা সম্পর্কে তেমন কিছু শিখতে বা জানতে পারছে না।
মিকুশিস মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র মাসুদ সিএইচটি মিডিয়া প্রতিনিধিকে জানান, প্রতিষ্ঠানটি থেকে প্রভাত ফেরী ও শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনায় দোয়া করা হয়। শহীদ মিনার না থাকায় ফুল দিয়ে সম্মান জানাতে পারেনা শিক্ষার্থীরা। জুগিরগোফা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রী সুফিয়া জানান, শহীদ মিনার না থাকায় ছাত্ররা বাঁশ দিয়ে অস্থায়ী ভাবে শহীদ মিনার তৈরী করে ফুল দিয়ে শহীদদের সম্মান জানানো হয়। এদিকে শিমুলতলা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র শামীম জানায়, ওই ভোরে স্যাররা পতাকা তুলতে বলে। তাই পতাকা তুলে বাড়ি আসি। কোন আলোচনা কিংবা মিলাদ হয়না। বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার থাকলে ফুল দিয়ে শহীদদের সম্মান জানানো যেত।
রাইপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান সিএইচটি মিডিয়া প্রতিনিধিকে জানান, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে শহীদদের সম্মান জানানোর জন্য প্রতিটি বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নির্মাণ করা উচিৎ। এতে করে সবাই শহীদদের প্রতি যেমন সম্মান জানাতে পারে তেমনি শিক্ষার্থীরা এ দিবসটির তাৎপর্য বুঝতে পারবে।
গাংনী উপজেলা শিক্ষা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) এহসানুল হাবিব ও মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার হাবিবুল বাশার সিএইচটি মিডিয়া প্রতিনিধিকে জানান, সরকারী উদ্যোগে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার স্থাপন করা প্রয়োজন। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ও শহীদ দিবসে অন্ততঃ ফুল দিয়ে শহীদদের শ্রদ্ধা জানানো উচিৎ। তাছাড়া এ দিবসটি কি এবং এর তাৎপর্য শিক্ষার্থীদের মাঝে তুলে ধরতে যেমন দরকার শহীদ মিনার তেমনি উচিৎ দিবসটির তাৎপর্য তুলে ধরে আলোচনা সভার আয়োজন করার।