শুক্রবার ● ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০১৭
প্রথম পাতা » অপরাধ » প্রবাসী অধ্যুষিত বিয়ানীবাজারে মাদকের ভয়াল থাবা
প্রবাসী অধ্যুষিত বিয়ানীবাজারে মাদকের ভয়াল থাবা
সিলেট প্রতিনিধি :: (১২ ফাল্গুন ১৪২৩ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় রাত ৯.৩৫মি.) সিলেটের প্রবাসী অধ্যুষিত বিয়ানীবাজারে ইয়াবার ভয়াল থাবায় ক্ষতবিক্ষত তরুন সমাজ।
একশ্রেণীর স্বার্থপর লোক রাতারাতি বড়লোক হতে এবং নিজেদের লিপ্সা চরিতার্থ করতে গড়ে তুলছে ফেনসিডিল, হেরোইন, ইয়াবা, গাজাসহ মাদকব্যবসার সিন্ডিকেট। আর এদের টার্গেটে পরিনত হচ্ছে জাতীর ভবিষ্যত তরুন সমাজ।
মূলত হেরোইন ব্যবসায়ীরাই এই উপজেলায় আধুনিক মাদক হিসেবে খ্যাত ‘ইয়াবা’ ছড়াচ্ছে। কুশিয়ারা নদী তীরবর্তী এলাকার চিহ্নিত এবং ভয়ঙ্কর কয়েকজন মাদক ‘গডফাদার’ এবার নতুন করে ইয়াবা ব্যবসায় নেমেছেন।
আর তাদের পুরনো ব্যবসা হেরোইন তো আছেই। তাদের পাশাপাশি পৌরশহরের আশপাশ এলাকার বেশ কয়েকজন যুবকও নতুন করে এই ব্যবসায় নেমেছে।
আর এসব মাদক ব্যবসায়ীদের মাদকে আসক্ত হয়ে বিপথগামী হচ্ছেন উপজেলার যুবক ও তরুণরা। যার জন্য তাদের নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে তাদের পরিবার। তবে এসব ব্যবসায়ীদের ধরতে জিরো টলারেন্সে রয়েছে প্রশাসন। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকজনকে আটকও করেছে প্রশাসন।
বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, একসময় যারা হেরোইন বিক্রি করতো তারা এখন ইয়াবা বিক্রি করছে। বহনে সহজ, আধুনিক, সস্তা এবং দেশব্যাপী আলোচিত হওয়ায় বিয়ানীবাজারে দ্রুত বিস্তৃত হচ্ছে ইয়াবা। নিম্নমানের একেকটি ইয়াবা এখানে বিক্রি হচ্ছে সাড়ে ৩শ’ টাকায়। উন্নতমানের ইয়াবার মূল্য আবার ৬ শ’ টাকা। তবে উপজেলাজুড়ে নিম্নমানের ইয়াবাই বিক্রি হয় বেশী।
গত বছরের শেষের দিকে পৌরশহরের বলাই নামে আলোচিত এক মাদক ব্যবসায়ীকে ইয়াবাসহ গ্রেফতার করে পুলিশ। তাকে জিজ্ঞাসাবাদে ইয়াবা ব্যবসায় জড়িত অনেকের নাম জানায় সে। এছাড়াও ফতেহপুরের মনু, দাসগ্রামের বলকি, বৈরাগীবাজারের খশির এলাকার কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ী শিব্বির এর স্ত্রী, ছেলে ও বোনসহ আরো অন্তত: ১০ জন লোক ইয়াবা ব্যবসার সাথে জড়িত।
সম্প্রতি (চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে) উপজেলার মোল্লাপুর ইউনিয়নের নাগেশ্বর রাস্তার মুখ থেকে ২৮ পিছ ইয়াবাসহ আবুল কালাম (৩৫) নামক এক ইয়াবা ব্যবসায়ীকে আটক করে পুলিশ। এরপর তার বিরুদ্ধে মাদক দ্রব্য আইনে মামলা দায়েরের পর তাকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
ধৃত ইয়াবা ব্যবসায়ী কালাম একই ইউনিয়নের মাজরকান্দি গ্রামের মনির আলীর পুত্র। এ এর আগে জানুয়ারীর দ্বিতীয় সপ্তাহে পৌরশহরের আজির মার্কেট থেকে ২৫ পিস ইয়াবাসহ আটক করা হয় বড়লেখা উপজেলার শাহবাজপুর ইউনিয়নের ভবানীপুর গ্রামের আছদ্দর আলীর পুত্র রুহুল আমিন(২৭) কে। তার বিরুদ্ধেও মাদক দ্রব্য আইনে মামলা দায়েরের পর তাকে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
এছাড়াও জানুয়ারীর প্রথম সপ্তাহে সিলেট-বিয়ানীবাজার সড়কের খশির সড়ক ভাংনী সেতুতে সংলগ্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৩০ পিস ইয়াবাসহ শিব্বির আহমদ (৪৫) নামক একজনকে আটক করে বিয়ানীবাজার থানা পুলিশ। ধৃত শিব্বির উপজেলার কুড়ারবাজার ইউনিয়নের খশিরবন্দ হাতিটিলা গ্রামের মৃত মখদ্দছ আলীর পুত্র। তাকেও জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিয়ানীবাজার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) চন্দন কুমার চক্রবর্তী সিএইচটি মিডিয়াকে বলেন, আমরা খবর পাওয়া মাত্রই ইয়াবাসহ মাদক ব্যবসায়ীদের গ্রেফতার করছি। তিনি বলেন, ইয়াবা কিংবা যে কোন ধরণের মাদকের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান চলছে। আমরা মাদক ব্যবসায় নিয়ন্ত্রনের চেষ্টা করছি। মাদকের বিষয়ে আমাদের অবস্থান জিরো টলারেন্সে।
এরপরও যারা এখনো মাদকের পাশাপাশি ইয়াবার ব্যবসা করছেন তাদেরকে কোন অবস্থাতেই ছাঁড় দেয়া হবে না। আমাদের অভিযান অব্যাহত ছিল এবং থাকবে।