শনিবার ● ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০১৭
প্রথম পাতা » ফটো গ্যালারী » বিশ্বনাথে প্রশাসনকে না জানিয়ে বাসিয়া পুনঃখনন কাজ শুরু
বিশ্বনাথে প্রশাসনকে না জানিয়ে বাসিয়া পুনঃখনন কাজ শুরু
বিশ্বনাথ প্রতিনিধি :: (১৩ ফাল্গুন ১৪২৩ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় রাত ১১.৫১মি.)
সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার মধ্যে দিয়ে বয়ে যাওয়ার খড় স্রোতা বাসিয়া নদীর পুনঃখনন কাজ চলাকালে উপজেলা সদরস্থ এলাকায় নদীর (বাসিয়া) তীরে গড়ে উঠা অসংখ্য অবৈধ স্থাপনা রক্ষা করতে ‘বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (বাপাউবো) সিলেট’র কর্মকর্তারা পায়তারা করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এদিকে ‘বাসিয়া নদী’র পুনঃখনন কাজ শুরু হলেও স্থানীয় প্রশাসন এব্যাপারে কিছুই জানেন না, এমনকি লিখিতভাবে কিছু জানানো হয়নি বলে জানা গেছে।
প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ১২ নভেম্বর স্থানীয় প্রশাসনকে অবহিত করে বাসিয়া নদী পুনঃখননের জন্য নদীর সীমানা নিধারণ করা হয়। সেই সীমানা নির্ধারণের খুঁটি এখনও বিদ্ধমান রয়েছে।
কিন্তু ১৫ ফেব্রুয়ারী স্থানীয় প্রশাসনকে না জানিয়েই ঢাকা থেকে বিশ্বনাথে এসে ‘বাপাউবো’র ট্রাস্কফোর্স দলের কর্মকর্তাদের সাথে নিয়ে নদী সার্ভে করেন বাপাউবোর কর্মকর্তারা।
অভিযোগ রয়েছে, উপজেলা পরিষদের সামন থেকে (পূর্ব দিক থেকে) প্রথমে ৩৩মিটার প্রস্থ ধরে ৭কিলোমিটার অংশে বাসিয়া নদী পুনঃখননের জন্য সীমানা নির্ধারণের মাপ দেওয়া হলেও ট্রাস্কফোর্স দলের সার্ভের সময় নদীর পূর্ব দিক (উপজেলা পরিষদের সামনের অংশ) থেকে প্রায় সাড়ে ৩শত মিটার অংশ ছেড়ে দিয়ে সার্ভে করা হয়। অথচ ওই ছেড়ে আসা অংশেই রয়েছে সবচেয়ে বেশি অবৈধ স্থাপনা। যেগুলোর বেশির ভাগই দ্বিতল-তৃতল ভবন। উভয় সময়ই সার্ভের সময়ই উপস্থিত ছিলেন বাপাউবো সিলেট’র উপ-প্রকৌশলী দিপক চন্দ্র দাশ।
এদিকে বাসিয়া নদীর তীরে থাকা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের জন্য ১৭২টি অবৈধ স্থাপনার তালিকা প্রস্তুত করেছে স্থানীয় প্রশাসন। তা উচ্ছেদের জন্য উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষ বরাবর প্রেরণের জন্য চলতি মাসের আইন-শৃংঙ্খলা কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। সেই সিদ্ধান্ত গ্রহণের ১৬ দিন পেরিয়ে গেলেও এর কোন অগ্রগতি হয়নি। অন্যদিকে দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় জনশ্রুতি থাকা ‘অবৈধ স্থাপনাগুলো রক্ষা’র জন্য অবৈধ দখলদাররা ৩ কোটি টাকার ফান্ড গঠন করেছেন সংবাদটি উপজেলাবাসীর কাছে সত্য বলে বিশ্বাস হতে শুরু করেছে ‘ওই সাড়ে ৩শত মিটার’ অংশ ছেড়ে সার্ভের করার কারণে।
পাউবো কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে এলাকাবাসীর অভিযোগ, নদীর তীরের অবৈধ স্থাপনা রক্ষা করার জন্যই নদীর পূর্ব দিকের সাড়ে ৩শত মিটার ছেড়ে ট্রাস্কফোর্স দলের কর্মকর্তাদের সাথে নিয়ে সার্ভে করেছেন বাপাউবো সিলেট’র কর্মকর্তারা। এরপূর্বে অবৈধ স্থাপনাগুলো রক্ষা করার জন্যই গোপনে নদীর প্রস্থের মাপ কমিয়ে এনেছেন সেই কর্মকর্তারা। এর ফলে বর্তমানে সেই মাপ কোথাও ২০মিটার, কোথাও ২৫মিটার এবং কোথাও ৩১মিটার নিধারণ করা হয়েছে।
সকল অভিযোগ মিথ্যা দাবি করে বাপাউবো সিলেট’র নির্বাহী প্রকৌশলী সিরাজুল ইসলাম বলেন, প্রশাসনকে অবহিত করেই নদী পুনঃখনন কাজ শুরু হয়েছে। আর কাজের ডিজাইন অনুযায়ীই নদী পুনঃখনন কাজ সম্পন্ন করা হবে। ওই ৩শত মিটার (ছেড়ে আসা অংশ) পূর্বে সার্ভে করা হয়ে ছিল, যার পরিমাপ আমাদের কাছে রয়েছে। এজন্য শুধু নতুন ৭ কিলোমিটার অংশে সার্ভে করা হয়েছে। তাই ৭কিলোমিটারের সাথে ওই ৩শত মিটার অংশেও পুনঃখনন কাজ সম্পন্ন করা হবে। কোন ছাড় দেওয়া হবে না।
নদীর পুনঃখনন কাজ শুরুর বিষয়টি জানা নেই, কেউ লিখিতভাবেও জানান নি বলে দাবি করেছেন বিশ্বনাথ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অমিতাভ পরাগ তালুকদার।