সোমবার ● ২৭ ফেব্রুয়ারী ২০১৭
প্রথম পাতা » খাগড়াছড়ি » তাইন্দং উচ্চ বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ
তাইন্দং উচ্চ বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ
মাটিরাঙ্গা প্রতিনিধি :: (১৫ ফাল্গুন ১৪২৩ বাঙলা: বাংলাদেশ বিকাল ৫.২০মি.) খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা উপজেলাধীন তাইন্দং উচ্চ বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচনে অনিয়ম ও দুনীতি পেশী শক্তি প্রয়োগের অভিযোগ উঠেছে।
বিভিন্ন কাগজপত্র ও নির্ভরযোগ্য সুত্রে জানা গেছে,মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির নির্বাচনী নীতিমালা উপেক্ষা করে মো. সুরুজ মিয়া পিং মৃত-লাল মিয়া ভোটার নম্বর-০৫৯৭ ও মো. আবদুল লতিফ মজুমদার ভোটর নং-২০১‘কে অভিভাবক সাজিয়ে অবৈধ (ভুয়া) ভোটার বানিয়ে ভোট গ্রহন করা হয়েছে।
এদের মধ্যে আব্দুল লতিফ মজুমদারের কোন সন্তান সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করে না। আর মো. সুরুজ মিয়া ভোটারের সন্তান কুমিল্লা কোতয়ালী থানাস্থ স্মৃতি শিক্ষা কানন প্রি-ক্যাডেট স্কুলে ১ম শ্রেনী থেকে ৮ম শ্রেনী পর্যন্ত অধ্যয়নরত রয়েছে । জানা যায়,সুরুজ মিয়ার ছেলের নামে যে সনদপত্র জমা দেয়া হয়েছে ভোটার তালিকায় নাম অন্তরভুক্তির জন্যে তাতে কোন শ্রেনীর নাম, রোল নং, রেজি. নং এবং প্রাপ্ত নম্বর এর মতো গুরুত্বপুর্ণ তথ্য লিখা নেই।
উপস্থাপিত সনদটি বটতলী নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের (তাইন্দং) দেখানো হলেও সে ছেলেটি বর্তমানে কুমিল্লায় অধ্যয়নরত আছে। এ বিষয়ে বটতলী নিন্ম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের (তাইন্দং) এর প্রধান শিক্ষক মো. কামাল হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি সদোত্তর দিতে না পেরে ফোন কেটে দেন। তার কিছু সময় পর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও মাটিরাঙ্গা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মো. কামাল হোসেন স্বপ্রণোদিত হয়ে ফোনে বটতলী নিন্ম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রদত্ত ইবনে ইসরাত সৌরভ এর নামে অবৈধ সনদের বিষয়ে মুঠোফোনে আলাপকালে তাইন্দং উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচনে মৃৃত ভোট গ্রহনের বিষয়টি এক পর্যায়ে এই প্রতিবেদকের নিকট স্বীকার করেন। প্রত্যক্ষদর্শী সুত্রে জানা গেছে ভোট গ্রহন চলাকালে তিনিও ভোট কেন্দ্রে অবস্থান করছিলেন।
এ বিষয়ে একাধিক অভিভাবক সদস্য প্রার্থীরা অভিযোগ করে বলেন, ভোট গ্রহনকালে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবিরের নেতৃত্বে তার ছোট ভাই এমরান হোসেন, বিল্লাল হোসেন ও রাইটার বারেক ও তার মেয়ের জামাতা সাইফুলসহ তাদের সাঙ্গপাঙ্গ নিয়ে মোতালেব নামের জনৈক ভোটারকে মারধর ও অন্যান্য ভোটারদের হুমকি ধমকি দিয়ে কেন্দ্র দখলসহ প্রার্থী মো. আবু তাহের, মো. হুমায়ুন, আব্দুল মালেক, সাহারা বেগমকে জোর পুর্বক কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে।
এ বিষয়ে তাইন্দং ইউপি চেয়ারম্যান মো. হুমায়ুন কবির বলেন, নির্বাচন সুষ্ঠ হয়েছে বলে দাবী করে, নির্বাচনী রেজাল্ট সীটে প্রার্থীদের স্বাক্ষর না থাকার বিষয়টি সম্পর্কে উপজেলা শিক্ষার অফিসার জানেন বলে জানান।
নির্বাচনে প্রভাব খাটানোর বিষয়ে তিনি অস্বীকার করেন। অন্যান্য অনিয়মের বিষয়ে তিনি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে দায়ী করেন।
এ ছাড়াও মৃত ব্যক্তির ভোট গ্রহন করা হয়েছে অবৈধ বহিরাগতদের মাধ্যমে। মৃত ভোটারগুলোর মধ্যে,আব্দুর রহিম-ভোটার নং-৮৩৮, বিল্লাল হোসেন ভোটার নং-৭৩৮ উল্লেখযোগ্য।
অভিযোগ রয়েছে মাটিরাঙ্গা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মীর মো. মোহতাছিম বিল্লাহ বিভিন্ন সুবিধা গ্রহনের মাধ্যমে পছন্দের প্রার্থীদের বিজয়ী করতে অপরাপর প্রার্থীদের উপস্থিতি ছাড়াই ভোট গননা সম্পাদন করেন।
বিকাল ৪টায় ভোট গ্রহন শেষ হলেও বিভিন্ন অযুহাতে কাল ক্ষেপন ও পেশী শক্তির প্রভাব খাটিয়ে প্রার্থীদের ভোট গননা কক্ষের বাহিরে রেখে রেজাল্ট সীটে প্রার্থীদের কোন স্বাক্ষর না নিয়েই অবৈধভাবে রাত সাড়ে ৯টার দিকে ফলাফল ঘোষনা করেন। বিভিন্ন প্রার্থীরা রেজাল্ট সীটের কপি চাইলেও তিনি তা সরবরাহ না করে উল্টো রেজাল্ট সীট প্রত্যাশী প্রার্থীদের উপর চড়াও হন। ফলে উদ্বুদ্ধ অনাকাংখিত পরিস্থিতি মোকাবেলার ভয়ে তিনি দ্রুত ভোট কেন্দ্র ত্যাগ করেন।
এই প্রতিবেদন লিখার সময় এ বিষয়ে ২৭ ফেব্রুয়ারী বিকাল ৩ টা ২ মিনিটে মুঠোফোন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তার ফোন কখনো-“আউট গোয়িং অল ফরোয়াড“ কখনো-“অল কল ডায়ভার্টেড“ কখনো-অল কল এনাভেল টু কানেক্ট পাওয়া যায়। এ সময় স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. শাহীন সরকার নির্বাচনের অনিয়মের বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবহিত করিলে তিনি লিখিত ভাবে অভিযোগ করতে বলেন বলে জানিয়েছেন জনপ্রতিনিধিকে।