সোমবার ● ২৭ ফেব্রুয়ারী ২০১৭
প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম বিভাগ » আলীকদমে নানামূখি উৎকোচের চাপে উলুফুল ব্যসায়ীরা
আলীকদমে নানামূখি উৎকোচের চাপে উলুফুল ব্যসায়ীরা
হাসান মাহমুদ, আলীকদম (বান্দরবান) প্রতিনিধি :: (১৫ ফাল্গুন ১৪২৩ বাঙলা: বাংলাদেশ সন্ধ্যা ৬.১৪ মি.) নানামূখি করের চাপে মৃয়মান আলীকদমে উলুফুল ব্যবাসয়ীরা। আলীকদম থেকে ফাসিয়াখালী পর্যন্ত ৪৫ কিলোমিটার পথ পেরোতে ১০ থেকে ১২টি পয়েন্টে উৎকোচের ঘানি টানতে হয় ব্যবসায়ীদের। যার কারণে এলাকার বাহির থেকে ব্যবসায়ীরা আসতে চায়না। পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ে প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্ঠ স্থানীয়ভাবে বাটারী নামে পরিচিত এই উলুফুলের চাহিদা দেশে ও দেশের বাইরে প্রতিনিয়ত বেড়ে চলেছে। ঘরের বিভিন্ন আসবাবপত্র, শো-পিচ এমনকি ঘর পরিষ্কার ব্যবহৃত হয় বলে একে ফুলঝাড়–ও বলা হয়ে থাকে।
দেশের চাহিদা মিটিয়ে দেশের বাইরেও রপ্তানি হওয়ায় বিগত কয়েক বছরের তুলানায় এবছর উলুফুলের দাম বেড়েছে অনেকটাই।
প্রতি মৌসুমে এক থেকে দেড় মাস ফুল সংগ্রহ করে স্থানীয় বাজারে এনে বিক্রয় করে। স্থানীয় বাজার থেকে পাইকার এসে নিয়ে যায় দেশের বিভিন্ন স্থানে এমনকি বিদেশেও রাপ্তানীর বৈদেশিক মূদ্রা আয় করছে। কিন্তু দাম বাড়লেও লাভবান হচ্ছেনা ব্যবসায়ীরা।
নানা মূখি উৎকোচের চাপে তেমন লাভবান হতে পারছেনা বলে জানিয়েছেন উলুফুর ব্যসায়ি মোঃ মানিক। তিনি অভিযোগ করে বলেন আলীকদম থেকে ফাসিয়াখালি পর্যন্ত যতটি পয়েন্টে চেক পোষ্ট আছে প্রত্যেকটি পয়েন্টেই অবৈধভাবে আমাদের কাছ থেকে উৎকোচ গ্রহন করা হয়। ওই টাকা নাদিলে গাড়ি ভর্তি মাল নিয়ে আমাদেরকে নানা ভাবে হয়রানি করা হয়।
এছাড়াও আরো কয়েকজন ব্যবসায়ী জানায়, আমরা সরকারীভাবে ট্রান্সপোর্ট পাশ (টিপি) কাটিয়ে রাজস্ব পরিশোধ করে ব্যবসা করি। তবুও বাবু পাড়া চেক পোষ্ট, মাতামুহুরী ব্রীজ চেক পোষ্ট, কানামাঝি চেক পোষ্ট, তৈন চেক পোষ্ট, জেলা পরিষদের টোল ফাড়ি, লাইনঝিরি চেক পোষ্ট, ইয়াংচা চেক পোষ্ট, রিংভং চেক পোষ্ট, আলীকদম ইউনিয়ন পরিষদ, লামা ডিএফও অফিস এবং লামা থানাসহ প্রতিটি পয়েন্টে টাকা দিতে হয়। এসব পয়েন্টে টাকা দিতে গেলে প্রায় ৫০ হাজার টাকার মত লাগে। এর পর আমাদের আর কিছু থাকেনা। চলতি বছর আলীকদম উপজেলা থেকে ২৫ লক্ষ বুরুম বা পাঁচ কোট উলুফুল সংগ্রহ করার আশা থাকলেও এসব নানা মূখি উৎকোচের চাপে বাহির থেকে ব্যবসায়ীরা আসতে অনিহা প্রকাশ করছে। বুরুম প্রতি সরকারী রাজস্ব পচ্ছে ৩৫ পয়সা। কিন্তু ব্যবসায়ীরা এসতে না পারলে সরকার এসব রাজস্ব বঞ্চিত হবে।
এবিষয়ে আলীকদম উপজেলা আলীকদম মাতামুহুরী রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. আমির হামজা সিএইচটি মিডিয়া প্রতিনিধিকে বলেন, মাতামুহুরী ব্রিজ সংলগ্ন চেক পোষ্টের বিষয়ে আমি এধরণের অভিযোগ পেয়েছি এবং সাথে সাথে এর ব্যবস্থা নিয়েছি। বাবু পাড়ার চেক পোষ্টের বিষয়ে আমি তদন্ত করে দেখবো। যদি এটা সত্যি হয় তাহলে ২৪ ঘন্টার মধ্যে এর বিহীত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
অন্যদিকে লামা বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা কামাল উদ্দিন আহামদে এসব অভিযোগের কথা অস্বীকার করে বলেন, এসব মিথা বানোয়াট অভিযোগ। সরকারী কর ব্যতিত কোথাও কোন টাকা আদায় করা হয়না।