সোমবার ● ২৭ ফেব্রুয়ারী ২০১৭
প্রথম পাতা » শিরোনাম » ওসমানীনগরে দুই গ্রামবাসীর সংঘর্ষে নিহত-১: আহত শতাধিক, সিলেট-ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ
ওসমানীনগরে দুই গ্রামবাসীর সংঘর্ষে নিহত-১: আহত শতাধিক, সিলেট-ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ
বিশ্বনাথ (সিলেট) প্রতিনিধি ::(১৫ ফাল্গুন ১৪২৩ বাঙলা: বাংলাদেশ সন্ধ্যা ৭.৪৭ মি.) সিলেটের ওসমানীনগরে দু গ্রামবাসীর সংঘর্ষে জগন্নাথপুর উপজেলার আশার কান্দি ইউনয়নের মৃত শরফ উদ্দিনের পুত্র সাইফুল ইসলাম (১৬) নিহত হয়েছেন। রবিবার সকাল ১১টার দিকে উপজেলার সাদিপুর ইউনিয়নের বাংলাবাজারে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত ৬০ জন আহত হয়েছেন। এ দিকে খবর পেয়ে উপজেলার আওমীলীগের সমর্থকরা সিলেট-ঢাকা মহাসড়ক তাজপুর এলাকায় সড়ক অবরোধ করে।
এসময় ঢাকা-সিলেট মাহাসড়কের এ অংশে প্রায় দুই ঘন্টা যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। সংঘর্ষে ।
এ ঘটনার প্রতিবাদে বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থকদের শাস্তির দাবি করে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক ২ঘন্টা অবরোধ করে স্থানীয় আওয়ামীলীগের নেতা-কর্মীরা। রবিবার ঘটনাকে কেন্দ্র করে উপজেলাজুড়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। যে কোন সময় আবারও সহিংসতায় জড়িয়ে পড়তে পারে । পরিস্থিতি শান্ত রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
এ ঘটনায় ৪জনকে আটক করা হয়েছে। মামলার প্রস্তুতি চলছে। গুলিবিদ্ধরা হচ্ছেন, জগন্নাথপুর উপজেলার উত্তর কালনিরচর গ্রামের মৃত রহমত উল্লার পুত্র আতাউর রহমান (২৬), হানিফ উল্যার পুত্র দিলদার আলী (১৬),মৃত মনাই মিয়ার ছেলে আলাই মিয়া (৪০)।
পুলিশ ও স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, ওসমানীনগর উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থী জগলু চৌধুরীর প্রচারণাকে কেন্দ্র করে গত শনিবার বিকালে বাংলাবাজারে ওসমানীনগরের দক্ষিন কালনিচর গ্রামের বাহার মিয়া গংদের সাথে জগন্নাথপুর উপজেলার উত্তর কালনীচরের আল আমিন গংদের মধ্যে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে হাতাহাতির ঘটনাও ঘটে।
এ সময় বাজারে অবস্থারত সামাজিক ব্যাক্তিবর্গ বিষয়টি আপোষে নিস্পত্তি আশ্বাস নিয়ে উভয় পক্ষকে শান্ত করেন।
শনিবার দিবাগত রাতে দক্ষিণ কালনীরচর গ্রামের লোকজন মসজিদের মাইক দিয়ে উত্তর কালনিরচর গ্রামের লোকজনকে হাঙ্গামার ডাক দেয়।
এ বিষয় নিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে সমাধানের জন্য রবিবার সকালে সালিশ বৈঠক বসে। রবিবার সকালে সালিশ বৈঠক চলাকালে দু’পক্ষের লোকজন আবারও সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
এ সময় উভয় পক্ষের মধ্যে দুই ঘন্টা সংঘর্ষ চলে। সংঘর্ষে দেশীয় ও আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করা হয়। প্রায় দুই ঘন্টা ব্যাপী সংঘর্ষে চলাকালে উভয়পক্ষে অন্তত ৫০ রাউন্ড গুলি বিনিময় হয় বলে প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়। সংঘর্ষ চলাকালে ঘটনা স্থলেই গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায় কিশোর সাইফুল। এছাড়া গুলিবিদ্ধসহ ইটপাটকেল ও দেশীয় অস্ত্রের আঘাতে ফুল মিয়া, আদিল আহমদ, আবুল হোসেন, আবদুল হক, আবদুর রউফ, জাহিদ, আতাউর, শরিফ মিয়া, মাসুম মিয়া সহ দুই পক্ষের শতাধিক লোক আহত হয়।
গুরুতর আহতদের সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও জগন্নাথপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ২৩ রাউন্ড রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে।
এদিকে সাইফুলকে তার স্বজনরা উপজেলা তাজপুররস্থ প্যারাডাইজ হাসপাতালে নিয়ে এলে ওই হাসপাতালের কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করার পর। আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থকদের গ্রেফতারের দাবি জানিয়ে ১২টার দিকে স্থানীয় আ’লীগ নেতাকর্মীরা লাশ মহাসড়কে রেখে অবরোধ কর্মর্সচি পালন করে। বিকাল ২টার দিকে পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে এসে দোষীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির প্রতিশ্রুতি দিলে অবরোধ প্রত্যাহার করেন আওয়ামীলীগ নেতৃবৃন্দ।
ওসমানীনরগ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবদুল আউয়াল চৌধুরী ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে সিএইচটি মিডিয়া প্রতিনিধিকে বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ২৩ রাউন্ড রাবার বুলেট ব্যবহার করেছে। নিহত সাইফুলের লাশ ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। হত্যা কান্ডের ঘটনায় মামলা দায়েরের করা হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে তিন ব্যক্তিকে আটক করা হয়।