বৃহস্পতিবার ● ২ মার্চ ২০১৭
প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম বিভাগ » ক্ষুদ্র জাতিস্বত্তার সাহিত্য সংস্কৃতি জাতীয় সংস্কৃতিকে সমৃদ্ধ করেছে: বীর বাহাদুর এমপি
ক্ষুদ্র জাতিস্বত্তার সাহিত্য সংস্কৃতি জাতীয় সংস্কৃতিকে সমৃদ্ধ করেছে: বীর বাহাদুর এমপি
ষ্টাফ রিপোর্টার :: (১৮ ফাল্গুন ১৪২৩ বাঙলা: বাংরাদেশ সময় সন্ধ্যা ৭.২৫মি.) পার্বত্য বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি বলেছেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের ক্ষুদ্র জাতিস্বত্তার সাহিত্য সংস্কৃতি জাতীয় সংস্কৃতিকে সমৃদ্ধ করেছে। পাহাড়ের পিছিয়ে থাকা এসব জনগোষ্টীর কিছু আলোকিত মানুষ পার্বত্য সংস্কৃতিকে এতদুর এগিয়ে নিয়েছেন। তাদের অবদান অনস্বীকার্য। জীবদর্শায় এমন কিছু গুনীব্যাক্তিকে জেলা পরিষদ ও শিল্পকলা একাডেমি সম্মাননা দিয়েছে যা অনন্য দৃষ্টান্ত। এমন দৃষ্টান্ত আগামীতে সমাজের সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়ার বিকাশে অনন্য প্রেরণা যোগাবে। তিনি বলেন, যে জাতি গুনীজনদের সম্মান দেয়না তারা কখনোই সম্মানিত হতে পারেনা, দেশও এগোতে পারেনা। তিনি সামাজিক মূল্যবোধ বজায় রাখতে নিয়মিত সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়া কর্মকান্ড অব্যাহত রাখার উপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড বিকাশে রাঙামাটি শিল্পকলা একাডেমির নতুন ভবন নির্মার্ণে সংস্কৃতি মন্ত্রনালয়ের প্রকল্পে অর্ন্তরভুক্ত করতে পার্বত্য মন্ত্রনালয় থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলেও প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন। এছাড়া রাঙামাটি জেলায় ক্রীড়াঙ্গণের প্রাণ ফিরিয়ে আনতে রাঙামাটি জেলা ফুটবল লীগ শুরুর জন্য ১০লক্ষ টাকা বরাদ্ধ দেওয়ার ঘোষনা দেন।
২ মার্চ বৃহস্পতিবার সকালে রাঙামাটি জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে শিল্প ও সংস্কৃতির বিভিন্ন ক্ষেত্রে অসমান্য অবদান রাখায় রাঙামাটির ১০জন গুনী ব্যক্তিত্বকে শিল্পকলা একাডেমি সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্ত্যব্যে পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বৃষ কেতু চাকমার সভাপতিত্বে রাঙামাটি জেলা একাডেমি মিলনায়তনে গুনীজন সম্মাননা অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন রাঙামাটি ৩৩৩-ম-৩৩ আসনের সংসদ সদস্য ফিরোজা বেগম চিনু, রাঙামাটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মানজারুল মান্নান, পুলিশ সুপার সাঈদ তারিকুল হাসান, জেলা শিল্পকলা একাডেমির আহ্বায়ক ও রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ সদস্য মনোয়ারা আক্তার জাহান, রাঙামাটি পৌর মেয়র আকবর হোসেন চৌধুরী। স্বাগত বক্তব্য দেন জেলা শিল্পকলা একাডেমির সাধারণ সম্পাদক মুজিবুল হক বুলবুল। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন রাঙামাটি বেতারের উপস্থাপিকা শিখা ত্রিপুরা।
রাঙামাটি সংসদ সদস্য ফিরোজা বেগম চিনু বলেন, পাহাড়ের গুনীজনদের খুজে বের করে শিল্পকলা একাডেমি ও পার্বত্য জেলা পরিষদ সম্মাননা জানিয়ে তারা নিজেরাই সম্মানিত হয়েছেন। এতোদিন ধরে নিরবে নিভৃতে যারা কাজ করে গেছেন সে আলোকিত মানুষগুলো পাহাড়ের সাহিত্য সংস্কৃতিকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন। তারা আজ যে স্বীকৃতি পেয়েছেন তাতে পাহাড়ের বসবাসরত সকল অধিবাসী আন্দন্দিত ও গর্বীত। তিনি গুনী সম্মাননা প্রদান প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহবান জানান।
রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বলেন, পাহাড়ের সংস্কৃতিকে যারা লালন করে চলেছেন তাদের সম্মানিত করা নৈতিক দায়িত্ব। সে অনুভব থেকে জেলা পরিষদ সম্মাননা প্রদানে শিল্পকলা একাডেমিকে সহায়তা করেছে। তিনি বলেন, মানুষ সবসময় তার কর্মের স্বীকৃতি প্রত্যাশা করে। আর সে স্বীকৃতি তাকে সামনে অগ্রসর করে, উদ্দ্যেমি করে নতুন কাজের প্রেরণা যোগায়। তিনি সম্মাননা প্রাপ্ত প্রত্যক গুনীজন তাদের দীর্ঘ দিনের পরিশ্রমের সামান্যতম পূরণ হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
এবারের ২০১৫এর সম্মননা প্রাপ্ত গুনীজদের মধ্যে চারুকলায় রতিকান্ত তঞ্চঙ্গ্যা, যাত্রা শিল্পে নন্দ রাণী চাকমা, কন্ঠ সংগীতে ফনীন্দ্র লাল ত্রিপুরা, নৃত্যকলায় হুমায়ুন কবীর, যন্ত্র শিল্পে ধারশ মনি চাকমা ও ২০১৬এর সম্মননা প্রাপ্ত গুনীজনদের মধ্যে লোকসংস্কৃতিতে আনন্দলতা চাকমা, আবৃত্তিতে অঞ্জুলিকা খীসা, কন্ঠ সংগীতে অমর শান্তি চাকমা, নাট্যকলায় ঝিমিত ঝিমিত চাকমা ও যন্ত্র শিল্পে ঝুলন দত্তকে সম্মননা প্রদান করা হয়েছে।
পরে বাংলাদেশের শিল্প ও সংস্কৃতির ক্ষেত্রে অসমান্য অবদান রাখায় স্বীকৃতিস্বরুপ রাঙামাটির ১০জন গুনী জনকে সম্মাননা পদক দেয় রাঙামাটি জেলা শিল্পকলা একাডেমী।
পার্বত্য বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থেকে এই সকল গুনী ব্যক্তিদের হাতে সম্মাননা স্মারক তুলে দেন।
সাথে প্রত্যককে জেলা পরিষদ হতে ১০হাজার ও পার্বত্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ২৫হাজার মোট ৩৫হাজার টাকা দেওয়া হয়।
শেষে স্থানীয় নৃত্য ও সংগীত শিল্পীদের পরিবেশিত মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করেন অতিথিরা।