মঙ্গলবার ● ২৮ মার্চ ২০১৭
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » পুলিশ হেফাজতে আতিয়া মহল
পুলিশ হেফাজতে আতিয়া মহল
সিলেট প্রতিনিধি :: (১৪ চৈত্র ১৪২৩ বাঙলা: বাংরাদেশ সময় রাত ৮.৫৪মি.)সিলেটের দক্ষিণ সুরমার শিববাড়ি এলাকায় আতিয়া মহলে সেনাবাহিনীর অভিযান প্রায় শেষ। এখন ভবনটি পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে চলে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বাহিনীটি। তবে আজ ২৮ মার্চ মঙ্গলবার বিভিন্ন সময় আতিয়া মহল থেকে সাত আটটি বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়।
সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার এস এম রোকনউদ্দিন সন্ধ্যা পৌনে ছয়টার দিকে সিএইচটি মিডিয়াকে বলেন, পুলিশ এখন আতিয়া মহল ভবনটি বুঝে নিয়েছে।
আজ সকালে আতিয়া মহলে সেনাবাহিনীর প্যারা কমান্ডো দলের অভিযান চালায়। সেখানে উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে ওই ভবনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে থাকা বিস্ফোরক দ্রব্য শনাক্ত ও নিষ্ক্রিয় করা হয় বলে সেনাবাহিনীর দায়িত্বশীল একটি সূত্র এ তথ্য জানায়। সূত্রটি জানায়, আতিয়া মহলের যেখানে-সেখানে অবিস্ফোরিত অবস্থায় হাতে তৈরি গ্রেনেড ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে। এ ধরনের গ্রেনেড খুব বিপজ্জনক। বিশেষ করে যদি পিন খোলা অবস্থায় কোনো গ্রেনেড পড়ে থাকে, তাহলে যেকোনো সময় বিস্ফোরিত হতে পারে। সে ক্ষেত্রে সেগুলো শনাক্ত ও উদ্ধার করা জীবনের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে।
সকাল থেকে আতিয়া মহলে সেনাবাহিনীর প্যারা কমান্ডো দলের অভিযান চলে। বেলা একটার দিকে চারটি বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। বিকেল চারটা ৪০ মিনিট ও পাঁচটার দিকে আরও দুটি বিস্ফোরণ শোনা যায়। এ সময় ধোয়া দেখা গেছে।
আতিয়া মহলের আশপাশের এলাকায় কড়া নিরাপত্তাব্যবস্থা আজও রয়েছে। আতিয়া মহল ঘিরে তিন বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে সাধারণের চলাচলে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জানিয়েছে, অভিযান শেষ না হওয়া পর্যন্ত সিলেট-ফেঞ্চুগঞ্জ সড়কে চলাচল নিয়ন্ত্রিত থাকবে। গণমাধ্যমকর্মীরাও নির্দিষ্ট দূরত্বে অবস্থান করছেন।
গতকাল সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে সেনা গোয়েন্দা পরিদপ্তরের ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ফখরুল আহসান সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছিলেন, আতিয়া মহলে আর কোনো জঙ্গি জীবিত নেই। সবাই অভিযানে নিহত হয়েছে। সেখান থেকে একজন নারী ও একজন পুরুষের মৃতদেহ বের করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। আরও দুটি মৃতদেহ পড়ে রয়েছে, যাদের শরীরে সুইসাইডাল ভেস্ট (আত্মঘাতী হামলার জন্য বিস্ফোরকভর্তি বন্ধনী) বাঁধা। ব্রিফিংয়ে আরও জানানো হয়, আতিয়া মহলের ওপর সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা হলেও সেখানে প্রচুর বিস্ফোরক বিপজ্জনক অবস্থায় পড়ে রয়েছে। তাই অভিযান শেষ হচ্ছে না।
তবে আজ সেনাবাহিনী জানায়, আতিয়া মহল থেকে চারটি মৃতদেহ বের করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে। পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের কর্মকর্তারা জানান, নিহত চারজনের মধ্যে একজন মাঈনুল ইসলাম ওরফে মুসা। তাঁরা জানান, মুসা যে ছবি দিয়ে বাড়ি ভাড়া নিয়েছিলেন, সেই ছবির সঙ্গে পুলিশের কাছে থাকা ছবির মিল দেখে তাঁরা পরিচয় নিশ্চিত হয়েছেন।
আতিয়া মহল নামের পাঁচতলা এই বাড়ি গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত আড়াইটায় ঘিরে ফেলে পুলিশ। গত শুক্রবার ঢাকা থেকে পুলিশের বিশেষায়িত ইউনিট সোয়াট গিয়ে অভিযানে অংশ নেয়। এরপর গত শনিবার সকাল থেকে সেনাবাহিনীর প্যারা কমান্ডো দল ‘অপারেশন টোয়াইলাইট’ নামে অভিযান শুরু করে। এই অভিযানের মধ্যেই শনিবার সন্ধ্যায় দুই দফা বিস্ফোরণে দুই পুলিশ কর্মকর্তাসহ ছয়জন নিহত এবং আরও ৪৪ জন আহত হন।