বুধবার ● ২৯ মার্চ ২০১৭
প্রথম পাতা » অর্থ-বাণিজ্য » মেহেরপুরে গম চাষে বাম্পার ফলন
মেহেরপুরে গম চাষে বাম্পার ফলন
মেহের আলী বাচ্চু, মেহেরপুর প্রতিনিধি :: (১৫ চৈত্র ১৪২৩ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় রাত ১০.২০মি.) মেহেরপুরের অন্য বছরগুলোর তুলনায় এবার গমের ফলন ভালো হয়েছে। অথচ আগের বছর ব্লাস্ট রোগের আক্রমণের কারণে কৃষি অফিস গম চাষের ব্যাপারে চাষিদের নিশেধ করেছিল। কৃষি অফিসের ভুল পরামর্শে গমের চাষের পরিবর্তে অনেকে পরিমাণ জমিতে করেছিলেন মসুরী চাষ। কিন্তু ভালো ফলন দেখে তারা এখন কেবল আক্ষেপই করছেন।
কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা নিরুৎসাহিত করার পরও জেলায় ৩ হাজার ৯৯০ হেক্টর জমিতে গম চাষ হয়েছে। যদিও গতবারের মতো এবারও গমক্ষেতে ব্লাস্ট রোগ হতে পারে বলে আশঙ্কা ছিল। কিন্তু ঝুঁকি নিয়েও যারা এবার গম চাষ করেছেন তারা যে আশা করে ছিলো তার অধিক বেশি ফলন পেয়ে এখন খুশি।
এরই মধ্যে জেলার বিভিন্ন স্থানে গম কাটা ও মাড়াইয়ের কাজ শুরু হয়েছে ।
গাংনী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রইচ উদ্দীন সিএইচটি মিডিয়াকে জানান, এ বছর রবি মৌসুমে জেলায় ৩ হাজার ৭৯০ হেক্টর জমিতে গমের চাষ হয়েছে। গত বছর হয়েছিল প্রায় ১৪ হাজার হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে সদর উপজেলায় দুই হাজার ১৯০ হেক্টর, গাংনী উপজেলায় ১ হাজার ৩৪০ হেক্টর এবং মুজিবনগর ২৫০ হেক্টর জমিতে গম চাষ হয়েছে।
হিজলবাড়িয়া গ্রামের গমচাষী শিপন হোসেন , ধর্মচাকী গ্রামের কৃষক শুকুর আলী জানান, এবার আমি ৪০ সতক জমিতে গম চাষ করেছি। তাতে ফলন হয়েছে ২০ মণ। আমি এরই মধ্যে জমি থেকে গম কেটে মাড়াই করেছি। আগের বছরে একই জমিতে ফলন পেয়েছিলাম মাত্র ১২মণ। শুকুরের এবার ৩৩ সতক জমিতে ১৬ মণ গম পেয়েছেন তিনি ।গত বছর মাত্র ৫মণ গম হয়েছিল।
একই গ্রামের মফিজুর রহমান জানান, ৫০ সতক জমিতে এবছর ফলন পেয়েছি ২৮ মণ।
সদর উপজেলার পিজিরপুর গ্রামের কৃষক আবুল কাশেম জানান, উচ্চ ফলনশীল জাতের বারি গম-২৫ চাষ করেছেন । গমচাষের শুরু থেকেই ব্লাস্ট নামের ছত্রাক জনিত রোগটির বিষয়ে এবার যথেষ্ট সজাগ ছিলেন তারা। তাই সময়মত জমির পরিচর্যা করাসহ ব্লাস্ট ছত্রাক থেকে বাঁচতে বালাইনাশক স্প্রে করেছিলেন। তাই ফলনও পেয়েছেন ভালো।
মুজিবনগর উপজেলার মনাখালি গ্রামের কৃষক সাহারুল ইসলাম , জানান, চলতি মৌসুমে কৃষি বিভাগ বারণ করার পরেও জমিতে বারি-২৬ জাতের গম চাষ করেছেন। মাঠে ফসলের অবস্থা ভাল। চাষকৃত জমিতে একর প্রতি ৪৫ থেকে ৫০ মণ গম পাওয়ার আশা করছেন।
মেহেরপুর জেলা কৃষি কর্মকর্তা এসএম মোস্তাফিজুর রহমান সিএইচটি মিডিয়াকে জানান, গত বছর মেহেরপুরসহ দেশের ৭টি জেলার গমক্ষেতে ব্লাস্ট রোগে আক্রান্ত হয়ে গমের দানা পরিপূর্ণ না হয়ে চিটা দেখা দিয়েছিল । একারণে এবছরও জেলায় গমক্ষেত গুলোতে এ রোগের আক্রমণের আশংঙ্কা ছিল। একারণে কৃষি বিভাগ থেকে কৃষকদের গম চাষ থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দেয়া হয়েছিল। তবে কৃষি বিভাগের পরামর্শ উপেক্ষা করে যেসব কৃষক গম চাষ করেছেন, কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে তাদের সময়মত গমক্ষেতে বিভিন্ন ধরনের ছত্রাকনাশক ওষুধ স্প্রে করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। তাই জেলার গমক্ষেত গুলোতে এবার ছত্রাকের প্রকোপ দেখা যায়নি। গমের দানাও বেশ ভালো হয়েছে। বাম্পার ফলনও হয়েছে।
তিনি আরো জানান, এবছর জেলায় মাত্র ১৫হেক্টর জমিতে এ রোগ দেখা দিয়েছে। মাত্র পাঁচ ভাগ ফসল ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।শতাব্দী, প্রদীপ, বারী ২৬, ২৮ ও কিছু নতুন বারী ৩০ জাতের গম চাষ হয়েছে জেলায়।