বৃহস্পতিবার ● ৩০ মার্চ ২০১৭
প্রথম পাতা » অপরাধ » বন্ধ হওয়ার পরদিনই ৫টি অবৈধ ইটভাটা ফের চালু
বন্ধ হওয়ার পরদিনই ৫টি অবৈধ ইটভাটা ফের চালু
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি :: (১৬চৈত্র ১৪২৩ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় রাত ১১.০৪মি.) ঝিনাইদহে ৫ টি অবৈধ ইটভাটা পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে অভিযান চালিয়ে ভেঙ্গে গুড়িয়ে দেওয়ার মাত্র ২৪ ঘন্টা পরই আবারো পূর্বের নিয়মেই চালু করা হয়েছে। সম্পূর্ণ অবৈধ ব্যারেল চিমনির (ড্রাম) এ সকল ভাটা মালিকরা সকল আইন অমান্য করে ভাটা চালিয়ে যাচ্ছেন। এই ব্যারেল চিমনির ভাটা পরিবেশের জন্য মারাত্বক ক্ষতিকর। সেই সঙ্গে এই ভাটাগুলোতে পোড়ানো হচ্ছে হাজার হাজার মন কাঠ। ফলে উজাড় হচ্ছে এলাকার গাছপালা, বাগান।
প্রসঙ্গত, ঝিনাইদহে শতাধিক ইটভাটা রয়েছে। যার মধ্যে সনাতন পদ্ধতির ৫ টি ইটভাটা গত ২৩ মার্চ পরিবেশ অধিদপ্তর এক ভ্রাম্যমান অভিযান চালিয়ে ভেঙ্গে গুড়িয়ে দেন। এছাড়া ভাটাগুলো থেকে ৬ লাখ ৬০ হাজার টাকা জরিমানাও আদায় করা হয়। ভাটাগুলো হচ্ছে শৈলকুপা উপজেলার মনির ব্রিকস, বাবুল এন্ড কামাল ব্রিকস, রাহুল ব্রিকস, সদর উপজেলার সততা ব্রিকস ও কালীগঞ্জ উপজেলার এ.এস.বি.এম ব্রিকস। এগুলোর মধ্যে রাহুল ব্রিকস থেকে ৩ লাখ টাকা জরিমানা, সততা ব্রিকস থেকে ৬০ হাজার ও বাকিদের থেকে এক লাখ করে জরিমানা আদায় করে পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা।
পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ আতাউর রহমান সিএইচটি মিডিয়াকে জানান, ভেকু মেশিন দিয়ে ভাটার কিছু অংশ ভেঙ্গে দেওয়া হয়েছিল। সেই সঙ্গে চিমনি গুলোও ভেঙ্গে দেওয়া হয়। এরপর তারা তাদের ইট পোড়ানো কাজ শুরু করার কথা নয়। তারপরও কিভাবে করছে তার খোঁজ নিয়ে দেখা হবে। বাবুল এন্ড কামাল ব্রিকস ছাড়া অন্য ৪ টি ইটভাটা সরেজমিনে পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায় সবগুলো ভাটা পূর্বের মতোই চলছে। ভেঙ্গে ফেলা চিমনিগুলো আবার সোজা করে বসানো হয়েছে। সততা ব্রিকস এর চিমনি মাঝ থেকে ভেঙ্গে দেওয়ায় অর্ধেকটা দাড় করিয়ে কাজ চালানো হচ্ছে।
এ.এস.বি.এম ব্রিকস এর ভেঙ্গে দেওয়া ব্যারেল চিমনি সোজা করে ইট পোড়ানোর কাজ করছেন। ভাটার মধ্যে রয়েছে হাজার হাজার মট কাঠ। নাম প্রকাশ না করে ওই ভাটার একজন শ্রমিক জানান, বৃহস্পতিবার বিকালে পরিবেশ অধিদপ্তরের লোকজন এসে তাদের ভাটা ভেঙ্গে দেন। পরদিন বিকাল থেকে তারা আবার চালু করেছেন। শৈলকুপা উপজেলার চতুড়িয়া এলাকার রাহুল ব্রিকস আবার ইট পোড়াতে শুরু করেছে কর্তৃপক্ষ। এখানে পৃথক দুইটি স্থানে তিনটি ব্যারেল চিমনি ব্যবহার করে ভাটা চালানো হচ্ছে।
এই ভাটার পাশ্ববর্তী এক ব্যক্তি সিএইচটি মিডিয়াকে জানান, অভিযানের পরদিনই তারা আবার চালু করেছেন। একই ভাবে মনির ব্রিকস চালু করা হয়েছে। বাবুল এন্ড কামাল ব্রিকসও চালু করা হয়েছে বলে স্থানিয়রা জানিয়েছেন। এ ব্যাপারে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার দোকানঘর নামক স্থানে অবস্থিত সততা ব্রিকস এর মালিক সরোয়ার হোসেন জানান, বৃহস্পতিবার তার ভাটায় অভিযান চালিয়ে ৬০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। পাশাপাশি চিমনি ভেঙ্গে দেওয়া হয়। আবার চালু হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, সেভাবেই পড়ে আছে। চালু করতে পারছেন না। অন্যরা চালু করলেও তার পুজি কম থাকায় পড়ে আছে বলে দাবি করেন।
শৈলকুপার রাহুল ব্রিকস এর মালিক স্থানীয় পৌরসভার সাবেক মেয়র খলিলুর রহমান জানান, তার দুইটি ভাটায় ৩ লাখ টাকা জরিমানা করেছিল। যারা অভিযানে এসেছিল তারা চিমনি ভেঙ্গে দিয়ে গেছে। এখনও চালু করতে পারেননি বলে জানিয়ে বলেন, চেষ্টা করছেন ২/১ দিনের মধ্যে চালু করবেন। কিছু মাল থাকায় এই ব্যবস্থা নিয়ে এ বছরের মতো ভাটায় ইট পোড়ানো শেষ করবেন বলে জানান।
বিষয়টি নিয়ে রবিবার পরিবেশ অধিদপ্তর যশোর অঞ্চলের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ আতাউর রহমানের সঙ্গে কথা বললে তিনি সিএইচটি মিডিয়াকে বলেন, তারা আবারো অভিযোনে নামবেন। তিনি বলেন, এদের বিরুদ্ধে স্থানিয় প্রশাসন কিছু উদ্যোগ নিলে ভালো হয়। তাছাড়া মামলা দায়ের করা যায় কিনা সে বিষয়টিও তারা দেখবেন বলেও জানান তিনি।