সোমবার ● ৯ নভেম্বর ২০১৫
প্রথম পাতা » উপ সম্পাদকীয় » আহ্সান উল্লাহ মাষ্টার চিরকাল বেঁচে থাকবেন মানুষের হৃদয়ে
আহ্সান উল্লাহ মাষ্টার চিরকাল বেঁচে থাকবেন মানুষের হৃদয়ে
শহীদ আহ্সান উল্লাহ মাষ্টার ৷ তিনি ছিলেন শিক্ষক, শ্রমিকনেতা, রাজনীবিদি, সমাজকর্মী, জননেতা ও দক্ষ সংগঠক৷ ছিলেন- নির্লোভ, নিরোগ, নিরহঙ্কার, পরোপকারী, ও দেশপ্রেমিক৷ জীবনভর দিয়েছেন সব সময় উজাড় করে, নেননি কিছুই৷ হৃদয় দিয়েই ভালোবাসতেন সুহৃদসহ ছোট- বড় সকলকেই, যে ভালোবাসা ছিল নিখাদ, নির্ভেজাল ৷ রাগ, ক্ষোভ, জেদ, বিরক্তি, অসহিষ্ণুতা, মুখভার এগুলোর একটিও তার মধ্যে দেখা যায়নি কোনদিন৷ তাঁর কথায় কিংবা ব্যবহারে কেউ আহত হয়েছেন এমন নজির নেই ৷ সংবাদকর্মীরা ছিল তাঁর খুব কাছের তথা আত্মীয়তুল্য আপনজন, যে কোন কাজে তাঁর কাছে কেউ সহযোগিতা চেয়ে পাননি এমন লোক খুঁজে পাওয়া যাবে না৷
মানুষকে আপন করে কাছে নেয়ার অমিত ক্ষমতা ছিল তাঁর ৷ তাঁর মধ্যে ছিল এমনই শক্তি, যে শক্তির ক্ষমতায় তিনি অল্প সময়ে যে কারো মন জয় করতে পারতেন৷ ফলে যেখানেই তিনি অংশ নিয়েছেন, সেখানেই ছিল তাঁর সর্বোচ্চ সাফল্য৷ তিনি ছিলেন বীরমুক্তিযোদ্ধা, গণমানুষের নেতা ও শ্রমিকদের বন্ধু৷ সততা ও নৈতিকতা ছিল তাঁর কাছে সবার আগে৷ এলাকার সাধারণ মানুষকে সঙ্গে নিয়ে তিনি প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলেন সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ ও অস্ত্রের ঝনঝনানির বিরুদ্ধে ৷ মাদকের বিরম্নদ্ধে তাঁর ছিল শক্ত অবস্থান ৷ সব মিলিয়ে তিনি সাধারণ মানুষের এতোটাই আপনজন হয়ে উঠেছিলেন- যে গাজীপুরের রাজনীতিতে তাঁর বিকল্প অন্য কাউকে ভাববার কোন কথা কখনো চিন্তা করতে পারেছিলেন না স্থানীয় জনগণ৷ হয়তো এটাই হচ্ছে তাঁর জন্য কাল৷ সঙ্গত কারণেই তিনি হয়ে যান অনেকেরই ঈর্ষার কারণ৷ বিশেষ করে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বি বিপরীত মেরুর অনেকেই তাঁকে সহ্য করতে পারছিলেন না৷ যার ফলে অকালেই প্রাণ দিতে হয়েছে তাঁকে৷ ঘাতকের বুলেট তাঁকে চিরতরে বিদায় দিয়েছে ৷ কিন্তু মানুষের হৃদয়ে তিনি বেঁচে আছেন- চিরকাল বেঁচে থাকবেন নিজের সততার জন্যে৷
শ্রমিকদের স্বার্থ রক্ষায় তিনি ছিলেন আপোষহীন৷ সত্যিকার অর্থেই তিনি একজন আদর্শ রাজনীতিবিদ ৷ এ দেশের রাজনীতির ইতিহাসে তাঁর নাম স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে৷ তিনি আমাদের দেশের আদর্শিক রাজনীতির এক উজ্জল নক্ষত্র৷
তিনি বহুবিধ গুণাবলীর অধিকারী ছিলেন, তিনি ছিলেন আপাদমস্তক দেশপ্রেমিক, নির্বিরোধ, সহজ- সরল ও মিশুক একজন মানুষ৷ আমি নির্দ্বিধায় বলছি- জীবনে এমন কোনো পরোপকারী পরিচ্ছন্ন মানুষ দেখিনি, যাকে আহ্সান উল্লাহ মাষ্টারের কাছাকাছি বসানো যায়৷ সেই স্বচ্ছ ও সত্ মানুষটাই এই নষ্ট সমাজে থাকতে পারলেন না৷ ২০০৪ সালের ৭ মে একদল সন্ত্রাসী টঙ্গীর নোয়াগাঁও এম এ মজিদ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এক জনসভায় এই নির্ভীক জনপ্রিয় নেতাকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করে৷ কিন্তু তিনি যুগে যুগে বেঁচে থাকবেন তাঁর কর্মে, আহ্সান উল্লাহ মাষ্টার’দের মৃত্যু নেই, তাঁরা মরতে পারে না৷ তাঁরা অজেয় চিরকাল আমাদের এই ভূবনে৷ আহ্সান উল্লাহ মাষ্টার চিরকাল বেঁচে থাকবেন মানুষের হৃদয়ে৷ লেখক: লায়ন মোঃ গনি মিয়া বাবুল।
আপলোড ৯ নভেম্বর ২০১৫ : বাংলাদেশ : সময়: বিকাল ৪.১৫মিঃ