মঙ্গলবার ● ১৮ এপ্রিল ২০১৭
প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম বিভাগ » রাঙামাটি জেলা পরিষদের মাসিক সভা
রাঙামাটি জেলা পরিষদের মাসিক সভা
ষ্টাফ রিপোর্টার :: (৫ বৈশাখ ১৪২৪ বাঙলা : বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৬.৪১মি.) রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বৃষ কেতু চাকমা বলেছেন, এ জেলা তথা দেশের সার্বিক উন্নয়নে সকলের সাথে সমন্বয় রেখে কাজ করতে হবে। পার্বত্য জেলা পরিষদ কর্তৃক জেলার উন্নয়নে অনেক কিছু করার সুযোগ রয়েছে। এক্ষেত্রে সমন্বয়হীনতা উন্নয়নে বাঁধা সৃষ্টি করতে পারে। তিনি বলেন, সরকার উন্নয়ন এবং জনস্বার্থে আমাদেরকে নিয়োগ দিয়েছে। সে লক্ষ্যে আমাদের সকলকে কাজ করে যেতে হবে। তিনি পরিষদের হস্তান্তরিত বিভাগের কর্মকর্তাদের প্রতিটি সভায় উপস্থিত থেকে সমস্যা-সম্ভাবনা ও উন্নয়নের কথা তুলে ধরার আহ্বান জানান। ১৮এপ্রিল মঙ্গলবার সকালে রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত পরিষদের মাসিক সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম জাকির হোসেনের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত মাসিক সভায় রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য চানমনি তঞ্চঙ্গ্যা, সাধন মনি চাকমা, থোয়াইচিং মং, ত্রিদীপ কান্তি দাশ, সান্তনা চাকমা, স্মৃতি বিকাশ ত্রিপুরা, অমিত চাকমা রাজু, জানে আলম, জ্ঞানেন্দু বিকাশ চাকমা, রেমলিয়ানা পাংখোয়া’সহ হস্তান্তরিত বিভাগের কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
সভায় স্বাস্থ্য বিভাগের সিভিল সার্জন, ডাক্তারের শূন্যপদ পূরণের লক্ষ্যে মন্ত্রণালয়ে নিয়মিত পত্র যোগাযোগ ও বিভিন্ন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জায়গা পুনরুদ্ধারে যথাযথ পদক্ষেপ অব্যাহত রয়েছে বলে সভাকে অবহিত করেন। গত ১ এপ্রিল থেকে ৬ এপ্রিল পর্যন্ত ৬ থেকে ১২ বছরের শিশুদের কৃমিনাশক ট্যাবলেট খাওয়ানো হয়েছে।
স্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের কর্মকর্তা জানান, জেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের নতুন ভবনের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। আগামী এক মাসের মধ্যে ভবন সমাপ্তির কাজ বুঝিয়ে দেওয়ার সম্ভাবনা আছে বলে তিনি জানান। এছাড়া বিভিন্ন উপজেলায় কমিউনিটি ক্লিনিকের মেরামতের কাজ চলছে।
কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের কর্মকর্তা জানান, জেলার বিভিন্ন উপজেলার ৪শত জন চাষীদের মাঝে আউশ ধান এর বীজ ও সার প্রদান করা হয়েছে ।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বলেন, চলতি মাসের ২৪এপ্রিল প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী শিক্ষার মান উন্নয়নে শিক্ষকদের সাথে মতবিনিময়ের জন্য রাঙ্গামাটি আসবেন। এছাড়া জেলার বিদ্যালয়ের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী শিক্ষার্থীদের মাতৃভাষায় পাঠ দানের লক্ষ্যে শিক্ষকদের ১৪দিন ব্যাপী প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এর ফলে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষকরা ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর শিক্ষার্থীদের নিজ মাতৃভাষায় পাঠদান করতে পারবে।
মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জানান, জেলার শিক্ষার মান উন্নয়নে চলতি মাসে শিক্ষকদের পিডিএম প্রশিক্ষণ প্রদান কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা জানান, মৎস্য সম্প্রসারণ কার্যক্রমের অংশ হিসেবে চলতি মাসে ২টি ব্যাচে মৎস্য চাষীদের প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে। এছাড়া স্থানীয় মৎস্যচাষীদের সুবিধার্থে কাউখালী হ্যাচারিতে রেনুপোনা উৎপাদন করা হচ্ছে। তিনি আরো জানান, প্রতিমাসের ৩য় সপ্তাহের বুধবার মৎস্য বিভাগে গণশুনানীর আয়োজন করা হবে।
জেলা সমাজ সেবা বিভাগের কর্মকর্তা বলেন, সমাজসেবা কর্তৃক তালিকাভুক্তদের মাঝে ক্ষুদ্রঋণ, বয়স্ক ভাতা, মুক্তিযোদ্ধা ভাতা, প্রতিবন্ধী শিক্ষা ভাতা নিয়ম অনুযায়ী প্রদান করা হচ্ছে।
ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইন্সটিটিউট এর কর্মকর্তা জানান, ২৬মার্চ স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে ঢাকা বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে রাঙামাটি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইন্সটিটিউটের শিল্পীরা ডিসপ্লেতে অংশগ্রহণ করে ৩য় স্থান হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে। এছাড়া পার্বত্য চট্টগ্রামের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের সবচেয়ে বড় সামাজিক উৎসব বিজু, সাংগ্রাই, বৈসুক, বিহু ২০১৭ উপলক্ষ্যে চলতি মাসের ৬-৮ এপ্রিল পর্যন্ত রাঙামাটি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইন্সটিটিউটে মেলার আয়োজন করা হয়েছিল। মেলায় বিভিন্ন নৃ-গোষ্ঠীর শিল্পীদের পরিবেশনায় নৃত্যানৃষ্ঠান ও সঙ্গীত পরিবশেন করা হয়।
সভায় হস্তান্তরিত বিভাগের কর্মকর্তাগণ তাদের বিভাগের স্ব স্ব কার্যক্রম উপস্থাপন করেন এবং বিভিন্ন সমস্যা ও সম্ভাবনার কথা তুলে ধরে মতামত ও পরামর্শ প্রদান করেন।