মঙ্গলবার ● ১৮ এপ্রিল ২০১৭
প্রথম পাতা » গাজিপুর » অপরাধ অনুযায়ী শিশুদের আলাদা রাখতে হবে : মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান
অপরাধ অনুযায়ী শিশুদের আলাদা রাখতে হবে : মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান
গাজীপুর জেলা প্রতিনিধি :: (৫ বৈশাখ ১৪২৪ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় রাত ১০.০২মি.) জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক বলেছেন, শিশুদের অপরাধ অনুযায়ী ও বয়স ভিত্তিক শ্রেণী বিন্যাস করে আলাদা আলাদা করে রাখতে হবে। শিশুদের বিচার বড় আদালতে হতে পারবে না। ১৯৭৪ সালের এবং ২০১৩ সালের আইন অনুযায়ী শিশুদের বিচার শিশু আদালতে হতে হবে। শিশুদের জন্য আলাদা চার্জশীটের ব্যবস্থা নিতে হবে। সেই চার্জশীট বড়দের থেকে আলাদা হবে। এই বিষয়গুলো আমাদের পালন করতে হবে।
তিনি গাজীপুরের টঙ্গীতে অবস্থিত শিশু উন্নয়ন কেন্দ্র (বালক) পরিদর্শন শেষে ১৮ এপ্রিল মঙ্গলবার দুপুরে সাংবাদিকদের এ সব কথা বলেন।
তিনি বলেন, বিচারের জন্য একজন শিশুকে অবশ্যই আদালতে হাজির করতে হয়। সরকারের ইচ্ছা ও আদালত চাচ্ছে দ্রুততম সময়ে মামলা নিষ্পত্তির। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে এদেরকে হাজির করা অনেকটাই দুরূহ। যদি আইন অ্যালাও করে এবং সরকার যদি সেইভাবে প্রয়োজনীয় আইন সংশোধণ করে নেয়, তাহলে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের পক্ষে থেকে ইউএনডিপির’র সহয়তায় একটি প্রকল্প গ্রহণ করতে রাজি আছি- যার মাধ্যমে আমরা কোর্টের সাথে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে শিশুদের কানেক্ট করতে পারি।
তিনি বলেন, আমরা চাই বাচ্চারা যাতে অপরাধ জগতের সাথে পরিচয় না ঘটে। বাচ্চারা যাতে তার বাবা মায়ের সাথে থাকে। এর জন্য আমাদের নতুন আইনে ডাইভাসেশনের কথা বলা হয়েছে। বাচ্চারা কোন অপরাধ করলে তাদের জেলে না নিয়ে, শিশু উন্নয়ণ কেন্দ্রে বা কিশোর সংশোধন কেন্দ্রে না পাঠিয়ে, তাদেরকে তার পরিবারের কাছে সোপর্দ করে দেয়া, পরিবার যদি না পাওয়া যায় তবে সোসাইটির কারো কাছে সোপর্দ করা অথবা সরকারের যে সব সদন আছে, সেই সমস্ত জায়গা তাদের নিতে হবে। অপরাধীদের সাথে বাচ্চাদের যোগাযোগ থাকা ঠিক না। অপরাধ জগতের সাথে তাদের থাকা ঠিক না।
মানবাধিকার চেয়ারম্যান বলেন, এখন এখানে ৫ম শ্রেণী পর্য়ন্ত লেখাপড়া করানো হয়। আমরা মনে করি এই লেখাপড়াগুলো এইচএসসি পর্যন্ত যাওয়া উচিত। কারণ ১৮ বছর পর্যন্ত শিশু। এ বয়সে মানুষ এইচএসসি পাশ করে।
তিনি বলেন, এখানে যারা আছে তাদের যদি কাজের মধ্যে রাখতে পারি তবে মা-বাবার অভাব কম বোধ করবে। এর জন্য তাদের লেখা পড়ার মধ্যে রাখা। ৮ম শ্রেণী পর্যন্ত সবার জন্য শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা। তাদেরকে বিভিন্ন ট্রেডে সময় উপযোগি প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। যখন তার মামলা নিষ্পতি হয়ে যাবে, সাজা শেষ হয়ে যাবে। তখন যদি তাকে আমরা ছেড়ে দেই তখন সে একটা মানুষ হয়ে বাইরে যেতে পারবে। দেশের সে সম্পদ হয়ে যাবে। সে বিদেশেও কাজ করতে পারবে।
এসময় অন্যান্যের মধ্যে সুপ্রিম কোটের আপিল বিভাগের বিচারপতি এম ইমান আলী, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের পরিচালক (অভিযোগ) মো. শরিফ উদ্দিন, সহকারি পরিচালক মো. রবিউল ইসলাম, গাজীপুরের জেলা প্রশাসক এস এম আলম, সমাজসেবা অধিদফতরের উপপরিচালক শংকর শরন সাহা, গাজীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. সাখাওয়াত হোসেন, টঙ্গী শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের (বালক) তত্ত্বাবধায়ক মো. শাহজাহান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।