বুধবার ● ২৬ এপ্রিল ২০১৭
প্রথম পাতা » অপরাধ » গাবতলী কৃষি কর্মকর্তা শহীদের বিরুদ্ধে সার চুরীর বিচারের দাবীতে মানববন্ধন
গাবতলী কৃষি কর্মকর্তা শহীদের বিরুদ্ধে সার চুরীর বিচারের দাবীতে মানববন্ধন
বগুড়া প্রতিনিধি :: (১৩ বৈশাখ ১৪২৪ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় বিকাল ৫.৫০মি.) বগুড়ার গাবতলী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আ. জা. মু. আহসান শহীদ সরকারের বিরুদ্ধে সমগ্র উপজেলায় রাজস্বখাতে প্রদশর্নীভুক্ত সরকারী বরাদ্দকৃত সার চুরীর প্রতিবাদে ভূক্তভোগী কৃষকরা ২৬ এপ্রিল বুধবার সকাল ১১টায় থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত বগুড়ার সাতমাথায় মানববন্ধন ও কর্মবিরতী কর্মসূচী পালন করেন।
গাবতলী উপজেলা ভুক্তভোগী কৃষি সমাজের আয়োজনে কৃষি কর্মকর্তা আহসান শহীদ সরকারের বিরুদ্ধে সার চুরীর বিচার ও অপসারনের দাবীতে প্রধান মন্ত্রী ও কৃষি মন্ত্রী’র সুদৃষ্টি’সহ হস্তক্ষেপ কামনা করে মানববন্ধনে উপস্থিত থেকে প্রতিবাদ জানান কৃষক মোস্তাফিজুর রহমান টুকু, ফোরকান আলী, আইয়ুব আলী, ইউসুফ আলী, রাখিবুল হাসান, সিহাব উদ্দিন, ইব্রাহীম আলী, ইয়াছিন আলী, মিজানুর রহমান, শামীম আহম্মেদ, আব্দুর রহমান তপন, সালেক উদ্দিন, পিন্টু মিয়া, আলমগীর হোসেন, এনামুল হক, সাইদুজ্জামান ও প্রদশর্নীভুক্ত চাষী’সহ দুইশতাধিক কৃষক প্রমূখ। মানববন্ধনে ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকরা গঠিত তদন্ত কমিটির রিপোর্ট দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রকাশ করে দোষী ও দুর্নীতি পরায়ণ কৃষি কর্মকর্তা শহীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও কৃষকদের মাঝে ক্ষতিপুরন’সহ পুনঃরায় সার বিতরন করার জন্য জোর দাবী জানানো হয়।
উল্লেখ্য, গাবতলী কৃষি কর্মকর্তা আহসান শহীদ সরকার কৃষকদের মাঝে সার বিতরনে অনিয়মের অভিযোগের প্রেক্ষিতে গঠিত তদন্ত কমিটির রিপোর্ট ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে ফলে তদন্ত কমিটির রিপোর্ট দাখিল করতে গড়িমশি করা হচ্ছে বলে কৃষকরা অভিযোগ করেন। এছাড়াও কৃষকরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সার চুরীর বিষয়টি তদন্ত করতে গত ২৬শে ফেব্রুয়ারী বগুড়া কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক প্রতুল চন্দ্র সরকারের নির্দেশে জেলা প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা’কে প্রধান করে ও বগুড়ার অতিরিক্ত পরিচালক ও সিরাজগঞ্জ জেলা কৃষি অধিদপ্তরের প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা তাজুল ইসলাম পাটোয়ারী’কে প্রধান করে তিন সদস্য বিশিষ্ট পৃর্থক ভাবে দুইটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এরপর সার বিতরনে অনিয়মের বিষয়ে গত ২০শে র্মাচ গাবতলী কৃষি প্রশিক্ষণ কক্ষে ৪০জন চাষীর উপস্থিতিতে গোপনীয় ও প্রকাশ্য তদন্ত করা হয়। গঠিত তদন্ত কমিটি সামনে প্রকাশ্যে বেশির ভাগ প্রদশর্নী ভূক্ত চাষী তাঁরা সার কম পেয়েছি বলে অভিযোগ করে পুনরায় সার’সহ ক্ষতিপূরনের দাবী জানান। অনেক কৃষক তদন্ত কমিটি’কে কৃষি কার্ডে লেখা মোতাবেক সার না দিয়ে স্লিপের মাধ্যমে সার দেওয়া হইয়াছে বলে তাদের বক্তব্যে বলেন। চাষীরা কমিটিকে আরো জানান, আমাদের কার্ডে লেখাছিল ১২৯.৫কেজি কিন্তু আমাদের’কে সার দেওয়া হয়েছে ৩৭কেজি। ১৫০কেজি স্থলে সার দেওয়া হয়েছে ৯৫কেজি। ৮০কেজির স্থলে কৃষক সার পেয়েছে ৪৭কেজি। আবার কিছু সংখ্যক চাষীকে তাদের কথা বলতে না দিয়ে ধমক দেওয়া হয়েছে। এরপরেও ৪০জন চাষীর মধ্যে ২৫জন চাষী তাদেরকে সার কম দেওয়া হয়েছে বলে তদন্ত কমিটি’কে জানান। তদন্ত কমিটির সামনে চাষীরা যাহা কিছু বক্তব্যে বলেছে তা প্রতিবেদনে সঠিকভাবে লেখা হয়নি বলেও কৃষকরা অভিযোগ করেন। এমনকি তদন্ত কমিটি কার্যক্রম চলাকালে অভিযুক্ত কৃষি কর্মকর্তার সামনে কৃষকদের প্রশ্ন করা হলে চাষীরা বক্তব্যদানে বিভ্রান্তের মধ্য পড়ে যায়। ফলে বাঁধ্য হয়ে অনেক কৃষক সার কম পেলেও মিথ্যা বক্তব্য প্রদান করেন। ফলে তদন্ত সঠিক হয়নি বলে দাবী করে পুনঃতদন্ত চান চাষীরা। এরপরেও গত ১মাস অতিবাহিত হলেও সংশ্লিষ্ট কৃষি অধিদপ্তর বরাবরে আজও জমা দেওয়া হয়নি তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন (রিপোর্ট)। ফলে সার কম পাওয়ায় চাষীরা তদন্ত প্রতিবেদনে প্রতি আস্থা হারিয়ে ফেলায় চরমভাবে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এভাবে প্রকাশে তদন্ত কমিটির সামনে অভিযুক্ত কৃষি কর্মকর্তা দোষী সাব্যস্থ হওয়ার পরেও আজও তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশ না করে দোষী কৃষি কর্মকর্তার দুর্নীতি আড়াল করতে চেষ্টা করা হচ্ছে বলে তাঁরা জানান। এছাড়াও কৃষকরা তদন্ত প্রতিবেদনে অভিযুক্ত কৃষি কর্মকর্তা শহীদের বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না রবং তদন্তের নামে কৃষকদের সঙ্গে তালবাহানা ও ভয়ভীতি প্রদর্শন’সহ নানাভাবে হয়রানী করা হচ্ছে বলে কৃষকরা প্রতিবাদ করেন। একই সঙ্গে কৃষকরা গঠিত তদন্ত কমিটির রিপোর্ট দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রকাশ করে দোষী ও দুর্নীতি পরায়ণ কৃষি কর্মকর্তা’র দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও অপসারন এবং সার চুরীর বিচার দাবী জানান।