বুধবার ● ১১ নভেম্বর ২০১৫
প্রথম পাতা » আন্তর্জাতিক » উলফা নেতা অনুপ চেটিয়াকে ভারতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে
উলফা নেতা অনুপ চেটিয়াকে ভারতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে
অনলাইন ডেক্স :: ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন উলফা’র প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক অনুপ চেটিয়াকে ভারতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
ঢাকার কারাগার থেকে ছাড়া পাওয়ার পরে বুধবার বাংলাদেশ সময় সকাল সাড়ে নয়টায় বাংলাদেশ বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে - ভারতের হরিদাশপুর পশ্চিমবঙ্গের কড়া নিরাপত্তার মধ্যে দিয়ে সীমান্ত পার করিয়ে দেওয়া হয় অনুপ চেটিয়াকে।
ভারত সরকার বা তাদের কোনও নিরাপত্তা এজেন্সি-ই এখনও পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে অনুপ চেটিয়ার বিষয়ে গণমাধ্যমকে কোন কিছু জানায় নি।
তবে দুটি পৃথক গোয়েন্দা সূত্র বিবিসি বাংলার কাছে নিশ্চিত করেছে যে পেট্রাপোল সীমান্ত এলাকা দিয়েই অনুপ চেটিয়াকে ভারতে নিয়ে আসা হয়েছে।
বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছেন, ”অনুপ চেটিয়া একজন ভারতীয় নাগরিক। আমাদের আইনের কারণে তিনি কারাগারে আটক ছিলেন। তার আটকাদেশ শেষ হওয়ার পর তিনি বিদেশী, তিনি দেশ ত্যাগ করতে চেয়েছেন। তাই আমরা তাকে ছেড়ে দিয়েছি।”
বি এস এফ বা পশ্চিমবঙ্গের পুলিশ – কেউই এই বন্দী হস্তান্তরের ব্যাপারে আনুষ্ঠানিকভাবে জড়িত ছিল না। কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা এজেন্সিগুলিই সরাসরি হস্তান্তরের কাজটি সেরেছে অত্যন্ত গোপনে।
একটি গোয়েন্দা সূত্র দাবী করছে, অনুপ চেটিয়াকে আন্তর্জাতিক চেক পোস্টের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে নয়, কাছাকাছি কোনও এলাকা দিয়ে সীমান্ত পার করানো হয়েছে।
কিন্তু যে হস্তান্তর আনুষ্ঠানিকভাবেই করা হচ্ছে, সেরকম একজন ব্যক্তিকে কেন অতি গোপনে চেক পোস্ট ছাড়া অন্য জায়গা দিয়ে সীমান্ত পার করানো হল, তা এখনও পরিষ্কার নয়।
ভারতীয় বার্তা সংস্থা পিটিআইয়ের দাবি, ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ব্যক্তিগত হস্তক্ষেপেই এই হস্তান্তর হয়েছে।
উলফার প্রতিষ্ঠাতা সদস্য এবং সাধারণ সম্পাদক, অনুপ চেটিয়ার বিরুদ্ধে ভারতে হত্যা, অপহরণ এবং চাঁদাবাজির অভিযোগ রয়েছে।ইউনাইটেড লিবারেশন ফ্রন্ট অফ আসাম বা উলফার এই নেতাকে ১৯৯৭ সালে গ্রেপ্তার করেছিল বাংলাদেশের পুলিশ।
অবৈধ অনুপ্রবেশ, জাল পাসপোর্ট বহন এবং অবৈধ বিদেশি মুদ্রা বহনের অভিযোগ বাংলাদেশে তার সাত বছরের কারাদণ্ড হয়েছিল।
কারাগারে থাকার সময় তিনি রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন করলেও তা প্রত্যাখ্যাত হয়।
তবে কারাদণ্ডের মেয়াদ শেষ হলেও, তার আশ্রয় আবেদনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত নিরাপত্তা হেফাজতে রাখতে আদেশ দিয়েছিল বাংলাদেশের উচ্চ আদালত।
অবশ্য কয়েক বছর আগে যখন উলফার চেয়ারম্যান অরবিন্দ রাজখোয়া, বিদেশ সচিব শশধর চৌধুরী সহ সংগঠনের শীর্ষ নেতাদের বাংলাদেশে আটক করার পরে ভারতের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল, তখনও বি এস এফের সঙ্গে ব্যবস্থা করে এভাবেই মেঘালয়ের একটি প্রত্যন্ত সীমান্ত এলাকায় ছেড়ে দিয়ে গিয়েছিল বাংলাদেশের নিরাপত্তা এজেন্সিগুলি। কাঁটাতারের বেড়া পার করিয়ে বি এস এফ অনানুষ্ঠানিকভাবেই ভারতে নিয়ে আসা হয়েছিল উলফার শীর্ষ নেতাদের।
তখন বি এস এফ আনুষ্ঠানিকভাবে বলেছিল যে মধ্যরাতে একদল মহিলা-পুরুষকে কাঁটাতারের বেড়ার কাছে ঘোরাঘুরি করতে দেখে আটক করা হয়, পরে উলফা নেতাদের পরিচয় জানা যায়। কিন্তু এটা বলা হয় নি, যে প্রচন্ড শীতের মধ্যে, মাঝরাতে একটি জনশূণ্য এলাকায় উলফার চেয়ারম্যন ও অন্যরা পরিবার পরিজন নিয়ে এলেন কোথা থেকে!
“তবে আমাদের সময় ব্যাপারটা তো অন্যরকম ছিল, আমাদের তো বাংলাদেশে অ্যারেস্ট করা হয় নি। অনুপ চেটিয়ার ক্ষেত্রে কেন এরকম করা হল বোঝা যাচ্ছে না,” মন্তব্য উলফার এক শীর্ষ নেতার, যিনিও রাজখোয়াদের সঙ্গেই ভারতের হাতে হস্তান্তরিত হয়েছিলেন সেদিন।
আজ গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে ভারতের প্রধান মন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বাংলাদেশের প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে টেলিফোন আলাপ করেছেন । তাদের মধ্যে কি বিষয় নিয়ে আলাপ হয়েছে তা এখনো জানা যায়নি।
আপলোড : ১১ নভেম্বর ২০১৫ : বাংলাদেশ : সময় : রাত ৮.২৩ মিঃ