বুধবার ● ১১ নভেম্বর ২০১৫
প্রথম পাতা » খেলা » জিম্বাবুয়ে হোয়াইটওয়াশ
জিম্বাবুয়ে হোয়াইটওয়াশ
ক্রীড়া প্রতিবিদক :: গত বছর ৫-০তে হোয়াইটওয়াশ হয়েছিল জিম্বাবুয়ে। এরপর মাঝের সময়টাতে বাংলাদেশের ক্রিকেট পৌঁছে গিয়েছিল ভিন্ন উচ্চতায়। বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল, ঘরের মাঠে পাকিস্তান, ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকার মতো তিন পরাশক্তির বিরুদ্ধে সিরিজ জয়। বদলে যাওয়া এমন বাংলাদেশের সামনে পুঁচকে জিম্বাবুয়ে কতটা প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারবে, তা ছিল অনুমেয়ই। প্রত্যাশা অনুযায়ীই হেঁটেছে মাশরাফি বাহিনী। সিরিজ জয় আগেই নিশ্চিত হয়েছিল। বুধবার হলো হোয়াইটওয়াশও। তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে ৬১ রানের জয় দিয়ে ৩-০ ব্যবধানে সিরিজ জিতল বাংলাদেশ। আর ধবলধোলাইয়ের শিকার হলো সফরকারী জিম্বাবুয়ে শিবির।
বাংলাদেশের ক্রিকেটের ইতিহাসে এটি এগারতম হোয়াইটওয়াশের ঘটনা। জিম্বাবুয়ের বিরুদ্ধে তৃতীয় হোয়াইটওয়াশ। ঘরের মাঠে বাংলাদেশের টানা পঞ্চম ওয়ানডে সিরিজ জয়, জিম্বাবুয়ের বিরুদ্ধে নবম সিরিজ জয়।
টসে জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে নয় উইকেটে ২৭৬ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ। জবাবে ২১৫ রানেই (৪৩.৩ওভার) গুটিয়ে যায় জিম্বাবুয়ের ইনিংস।
জয়ের জন্য দরকার ২৭৭ রান। এমন দুরুহ টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই উইকেট হারিয়ে বসে সফরকারী জিম্বাবুয়ে। বাংলাদেশের হয়ে আঘাতটা হেনেছেন বিস্ময়কর পেসার মুস্তাফিজুর রহমান।
ইনিংসের প্রথম বলে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে শুভ সূচনা করেন জিম্বাবুয়ের ওপেনার চিভাভা। তবে দ্বিতীয় বলেই তার স্ট্যাম্প উপড়ে ফেলেন মুস্তাফিজ। ফলে চার রান করেই সাজঘরে ফেরেন চিভাভা।
এরপর আরভিনকে সঙ্গে নিয়ে শুরুর বিপর্যয় রোধে চেষ্টা করেন আরেক ওপেনার চাকাভা। সাবলিল গতিতেই আগাতে থাকে দ্বিতীয় উইকেট জুটির ব্যাটিং। তবে নিজের চতুর্থ ও ইনিংসের সপ্তম ওভারে আবারো মুস্তাফিজের রুদ্র মূর্তি। এবার তিনি বিদায় করেন ১৭ রান করা আরেক ওপেনার চাকাভাকে। মুস্তাফিজের বল খেলতে গিয়ে নাসিরের হাতে ক্যাচ তুলে দেন চাকাভা।
এরপর ক্রমেই বিধ্বংসি হয়ে উঠছিলেন শন আরভিন। তবে তাকে ফিরিয়ে বাংলাদেশ শিবিরে স্বস্তি এনে দেন নাসির হোসেন। ৮.৪ ওভারে নাসিরের বলে এলবিডব্লিউর শিকার হন অভিজ্ঞ আরভিন। ২৫ বলে ২১ রান করেন তিনি। এর মধ্যে ছিল চারটি চারের মার।
তবে চতুর্থ উইকেট জুটিতে উইলয়ামস ও অধিনায়ক চিগুম্বুরা দলকে কক্ষপথে ফেরানোর চেষ্টা করেন। তবে শেষ পর্যন্ত তাতে ভাঙ্গন ধরান সাব্বির। এই জুটিতে ৮০ রান যোগ করেন উলিয়ামস ও চিগুম্বরা। তবে ব্যক্তিগত ৪৫ রানের মাথায় সাব্বিরের বলে বোল্ড হয়ে ফিরে যান জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক।
পঞ্চম উইকেট জুটিতে ভালোই ব্যাট করছিলেন উইলিয়ামস ও ওয়ালের। এই জুটি থেকে আসে ৫৯ রান। শেষ পর্যন্ত এই জুটি ভাঙ্গেন আল আমিন। ৩২ রান করা ওয়ালের আল আমিনের বলে ক্যাচ দেন নাসিরের হাতে। তবে ক্যাচটি সহজ ছিল না। অনেকটা লাফিয়ে উঠে দুর্দান্তভাবে বলটি তালুবন্দী করেন নাসির। এরপর মাশরাফির আগমন। তিনি ফেরান ক্রমেই ভয়ংকর হয়ে ওঠা শন উইলিয়ামসকে। নিজের বলে সাব্বিরের হাতে উইলিয়মাসকে ক্যাচ বানান মাশরাফি। তবে সাজঘরে ফেরার আগে ৮৪ বলে ৬৪ রান করে যান উইলিয়ামস। জিম্বাবুয়ের ষষ্ঠ উইকেটের পতন।
এরপর আবারো মুস্তাফিজুর রহমানের ধাক্কা। একে একে তুলে নেন তিন উইকেট। বিদায় নেন সিকান্দার রাজা (৯), জংউই (১১) ও পানিয়াঙ্গারা (৩)। মুস্তাফিজ কব্জা করেন পাঁচ উইকেট। শেষটা করেন বাংলাদেশের আরাফাত সানি। বিদায় করেন জিম্বাবুয়ের শেষ ব্যাটসম্যান মুজারাবানিকে। শেষ পর্যন্ত ৪৩.৩ ওভারে মাত্র ২১৫ রানেই শেষ হয়ে যায় সফরকারীদের ইনিংস।
এর আগে টসে জিতে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে ২৭৬ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ। দুই ওপেনার ইমরুল ও তামিম করেন সমান ৭৩ রান করে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৫২ রান করে রান আউট হন অনেকদিন পর রানে ফেরা মাহমুদুল্লাহ। মুশফিক ২৮, লিটন ১৭, মাশরাফি ১৬ রান করেন।
বাংলাদেশ: মাশরাফি বিন মর্তুজা (অধিনায়ক), তামিম ইকবাল, ইমরুল কায়েস, লিটন কুমার দাস, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, মুশফিকুর রহিম, সাব্বির রহমান, নাসির হোসেন, আরাফাত সানি, মুস্তাফিজুর রহমান ও আল-আমিন হোসেন।
জিম্বাবুয়ে: চামু চিভাভা, রেজিস চাকাবা, ক্রেইগ আরভিন, শন উইলিয়ামস, সিকান্দার রাজা, এলটন চিগুম্বুরা (অধিনায়ক), ম্যালকম ওয়ালার, গ্রায়েম ক্রেমার, তিনাশে পানিয়াঙ্গারা, লুক জঙ্গওয়ে ও তাওরাই মুজারাবানি।
আপলোড : ১১ নভেম্বর : বাংলাদেশ : সময় : রাত ৯.০০ মিঃ