সোমবার ● ১৫ মে ২০১৭
প্রথম পাতা » ঝালকাঠি » ঝালকাঠিতে নেইমর্যাক এ্যগ্রোফার্মের সংবাদ সম্মেলন
ঝালকাঠিতে নেইমর্যাক এ্যগ্রোফার্মের সংবাদ সম্মেলন
গাজী গিয়াস উদ্দিন বশির,ঝালাকাঠি প্রতিনিধি :: (১ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৪ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৭.২৪মি.) ঝালকাঠি সদর উপজেলার আগলপাশা গ্রামে ২২ একর জমির ওপর প্রস্তাবিত নেইমর্যাক এ্যাগ্রো ফার্মলিং নামে একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের বাঁধা ও মোটা অংকের চাঁদা দাবীর অভিযোগ পাওয়া গেছে। ১৫ মে সোমবার সকাল ১১ টায় ঝালকাঠি প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক সর্ংবাদ সম্মেলনে ঝালকাঠির বাসন্ডা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোবারক হোসেন মল্লিকের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ আনা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন নেইমর্যাক এ্যাগ্রো ফার্ম এর প্রকল্প পরিচালক মো. মহসিন বাকলাইর বড় ভাই মো. রেজাউল ইসলাম বাকলাই।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয় ঝালকাঠি সদর উপজেলার বাসন্ডা ইউনিয়ন পরিষদের আগলপাশা মৌজায় ২২ একর জমি ক্রয় করেন একই এলাকার বিশিস্ট ব্যবসায়ী তৌহিদুল ইসলাম দুয়ারী। তিনি ঝালকাঠির আরেক বিশিস্ট ব্যবসায়ী ইকবাল ব্রাদার্সের কাছ থেকে এ সম্পত্তি ক্রয় করেন। ক্রয়কৃত সম্পত্তিতে সম্প্রতি তৌহিদুল ইসলাম একটি এ্যাগ্রো ফার্ম গড়ে তোলার কাজ শুরু করলে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মোবারক হোসেন মল্লিক তৌহিদুল ইসলামের কাছে মোটা অংকের চাঁদা দাবী করেন। চাঁদার টাকা না পেয়ে চেয়ারম্যান ওই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্র শুরু করেন। ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে মোবারক হোসেন মল্লিক এলাকার হিন্দু সম্প্রদায়ের কিছু লোকজন দিয়ে এ্যাগ্রো ফার্মের কর্তপক্ষের বিরুদ্ধে কালি মন্দীর ভাংচুর এবং মন্দীরের জায়গা দখলের মিথ্যা কাহিনী প্রচার করেন এবং ঝালকাঠি সদর উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের নেতৃবৃন্দকে দিয়ে একটি সংবাদ সম্মেলন করান। সংবাদ সম্মেলনে এ্যাগ্রো ফার্মের প্রকল্প পরিচালক মহসিন বাকলাই বলেন যে ২২ একর সম্পত্তির ওপর ফার্ম গড়ে তোলার কাজ শুরু হয়েছে সেই জমিতে কখনও কোন কালি মন্দীর ছিল না। আমরা ওই জমি ক্রয়ের পূর্বে ৪৭ বছর জমির মালিক-দখলকার ছিলেন মরহুম আজিজ পাইলট সাহেব। এরপর ১৫ বছর ভোগ দখল করেছে ইকবাল ব্রাদার্স। আমরা ইকবাল ব্রাদার্সে’র নিকট থেকে ২০১৫ সালে বায়নাপত্র করে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রদান করা হয়। বিজ্ঞপ্তি জারীর পর কোনরূপ মালিকানা কিংবা অভিযোগ, বিতর্ক ও দাবী না থাকায় ২০১৬ সালে রেজিষ্ট্রি দলিল মূলে নেইম র্যাক এ্যাগ্রোর স্বত্ত্বাধিকারী তৌহিদুল ইসলাম এর নামে ক্রয় করা হয়।
যখন আমরা জমি ক্রয় করে সেখানে একটি বড় প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে চাচ্ছি ঠিক তখনই মোবারক হোসেন মল্লিক আমাদের বিরুদ্ধে মাঠে নেমেছেন। তিনি চান না এই এলাকায় কোন শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠুক এবং সেখানে এলাকার বেকার যুবকদের কর্মসংস্থান সৃস্টি হোক। চেয়ারম্যান সাহেব ব্যাক্তিগতভাবে লাভবান হতে চান। কিন্তু আজ আমাদের প্রকল্পের সকল কর্মকান্ড দুষ্টচক্র নস্যাৎ করতে চায়।
তাহারা বর্তমান সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার অপচেষ্টায় সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টির পাঁয়তারা চালিয়ে প্রশাসনকে আল্টিমেটাম দিচ্ছে। আমরা এই সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে দেশবাসিকে জানাতে চাই, এটি কোন সাম্প্রদায়িক ইস্যু নয়। এটি চাঁদা বা মাসোয়ারা গ্রহণের একটি পন্থা মাত্র। ইতপূর্বে ওই এলাকার চেয়ারম্যান মোবারক হোসেন মল্লিক এই প্রজেক্টের কাজ করতে হলে তাকে খুশি করা বাবদ নগদ অর্থ দিতে হয়েছিল। এছাড়া তার নির্বাচনকালীন সময়েও মোটা অংকের টাকা গ্রহণ করেন। কিন্তু অতিসম্প্রতি তিনি তার দলবল দিয়ে আরো মোটা অংকের টাকা চাঁদা হিসেবে দাবী করেন। টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করায় তিনি হিন্দু অধ্যুষিত এলাকার লোকজনকে পুঁজি করে একটি সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা তৈরীর অপচেষ্টায় মেতে ওঠেন।
তিনি আরো উল্লেখ করেন, মোবারক হোসেন মল্লিক ইতি মধ্যে তার ফেইজবুক ষ্ট্যাটাসে আমি মহসিন বাকলাই আমাকে সন্ত্রাসী বলে আক্ষায়িত করেন। আমি এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই। আমি যদি সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের সাথে জড়িত থাকতাম আপনারা সাংবাদিক ভাইয়েরা জাতির বিবেক এবং স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন কিছুটা হলেও জানতেন। অদ্যাবদি পুলিশের খাতায় আমার কোন নাম নাই। অন্যদিকে জনাব মোবারক হোসেন মল্লিক এর সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের ইতিহাস আপনারা কম বেশি সবাই জানেন । আমি ছোট বেলা থেকেই শুনে আসছি তিনি নানান মামলার আসামী।
আপনারা জানেন, এলাকায় একটি এ্যাগ্রো ফার্ম গড়ে উঠলে সেখানে শতশত শ্রমিক কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতে পারবে। কিন্তু ওই দুষ্টচক্র আমাদের ওই প্রক্রিয়াকে নস্যাৎ করতে চায়। যে কারণে তারা প্রশাসনকেও সমালোচিত করতে চায়। ইতি মধ্যে গতকাল সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) উপরোক্ত জমি সরেজমিনে পরিদর্শন করেন। কিন্তু তিনি চক্রান্তকারীদের বক্তব্যের কোন সত্যতা পাননি।
আপনাদের বস্তু নিষ্ঠা লেখনির দ্বারা ওই সব দুষ্টচক্রের মুখোশ উম্মোচন করে আমাদের প্রজেক্টটিকে রক্ষাকরার আহবান জানান।
সংবাদ সম্মেলনে নেইমর্যাক এ্যগ্রোফার্মের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তৌহিদুল ইসলাম দুয়ারীর পিতা আলহাজ্ব আবু জাফর দুয়ারীসহ গন্যমান্য ব্যাক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।