বুধবার ● ১৭ মে ২০১৭
প্রথম পাতা » জাতীয় » বাস্তব আয়নাবাজির নায়ক ভুট্টো ১৮মাস পর জেল থেকে মুক্ত
বাস্তব আয়নাবাজির নায়ক ভুট্টো ১৮মাস পর জেল থেকে মুক্ত
সিলেট প্রতিনিধি :: (৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৪ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় বিকাল ৪.১৫মি.) ১৮মাস পর জেল থেকে মুক্তি পেলেন বাস্তব আয়নাবাজির আলোচিত সমালোচিত ব্যক্তি ভুট্রো।
হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামীর বদলে শাস্তি ভোগ করা ‘বাস্তব আয়নাবাজির নায়ক’ রিপন আহমদ ভুট্টো। প্রায় দেড় বছর পর তিনি মুক্তি পেলেন।
১৬ মে মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে ভুট্টো কারাগার থেকে মুক্তি হয়। সিলেট জেলা কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেলার মো. ছগির মিয়া সিএইচটি মিডিয়া প্রতিনিধিকে জানান, মঙ্গলবার বিকেলে ভুট্টোকে হত্যা মামলা থেকে খালাস দেন সিলেট বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মকবুল আহসান। এই আদেশ কারাগারে পৌঁছার পর সন্ধ্যায় তাকে মুক্তি দেওয়া হয়।
এদিকে, হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামীর বদলে নিজে শাস্তি নিজে ভোগ করার প্রতারণায় ভুট্টোর বিরুদ্ধে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটির সুপারিশে দায়ের করা প্রতারণা মামলায়ও ভুট্টো জামিনে রয়েছেন বলে জানিয়েছেন সিলেট বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের পিপি কিশোর কুমার কর।
উল্লেখ্য, রিপন আহমদ ভুট্টো ২০১৫ সালের ১১ নভেম্বর হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামী ইকবাল হোসেন বকুল হয়ে আদালতে হাজিরা দিলে আদালত তাকে কারাগারে প্রেরণ করেন।
এরপর থেকেই তিনি কারাগারে ছিলেন। কারাগারে থাকাকালীন প্রায় বছরখানিককের কিছু বেশি দিন অতিবাহিত হওয়ার পর ডিসেম্বর মাসে রিপন কারা কর্তৃপক্ষকে তিনি অন্য আসল আসামীর বদলে সাজা খাটার ঘটনা খুলে বলেন।
২০০৯ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর সিলেট নগরী থেকে বাড়ি ফেরার পথে নিখোঁজ হন-সিলেট সদর উপজেলার মোগলগাঁও ইউনিয়নের চানপুর গ্রামের পশ্চিমপাড়ার চেরাগ আলীর পুত্র আলী আকবর সুমন (২৪)। পরে পার্শ্ববর্তী হাওর থেকে আলী আকবর সুমনের লাশ উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় সিলেট বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল তিন জনের যাবজ্জীবন সাজা প্রদান করেন।
তারা হচ্ছে : সিলেট সদর উপজেলার হাউসা গ্রামের মৃত মছকন্দর আলীর পুত্র দরাছ মিয়া ওরফে গয়াছ (৩৪) ও তার স্ত্রী রুজিনা বেগম (৩২) এবং একই গ্রামের আব্দুল মতিনের পুত্র মো. ইকবাল হোসেন বকুল (২৬)। এই ইকবাল হোসেন বকুলের পরিবর্তে বর্তমানে কারাভোগ করছেন নগরীর আম্বরখানা সৈয়দ মুগনী এলাকার ট্রাক চালক রিপন আহমদ ভুট্টো।
অভিযোগ রয়েছে, আসামী বকুলের স্বজনরা ভুট্টোকে ফুসলিয়ে কারাগারে যেতে উদ্বুদ্ধ করেন। ২০১৫ সালের ১১ অক্টোবর আদালতে আত্মসমর্পণ করে ইকবাল আহমদ ভুট্টো। তখন নিজেকে হত্যা মামলার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামী ইকবাল আহমদ বকুল পরিচয় দিয়ে আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। তখন আদালত তাকে জেল হাজতে পাঠান। এরপর থেকে তিনি কারাগারে ছিলেন।
রিপন আহমদ ভুট্টোর বদলা কারাবরণ নিয়ে পত্র-পত্রিকায় রিপোর্ট প্রকাশিত হলে শুরু হয় তোলপাড়। এ ঘটনায় গত ৫ জানুয়ারি সিলেটের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কাজী আব্দুল হান্নানকে প্রধান করে ২ সদস্যের বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করেন তৎকালীন জেলা ও দায়রা জজ মনির আহমদ পাটোয়ারি।
এরপর জেলা জজের নির্দেশে ২২ জানুয়ারি ভুট্টোসহ চার জনের বিরুদ্ধে প্রতারণা মামলা দায়ের করেন সিনিয়র জেল সুপার। বর্তমানে রিপন প্রতারনা মামলায়ও জামিনে থাকায় মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ১৮ মাস পর তিনি জামিন লাভ করেন।