রবিবার ● ২১ মে ২০১৭
প্রথম পাতা » খুলনা বিভাগ » দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে প্রচন্ড গরমের সাথে পাল্লা দিয়ে চলছে চলছে লোডশেডিং
দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে প্রচন্ড গরমের সাথে পাল্লা দিয়ে চলছে চলছে লোডশেডিং
এস.এম. সাইফুল ইসলাম কবির,দক্ষিণাঞ্চল থেকে ফিরে :: (৭ জৈষ্ঠ ১৪২৪ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় রাত ৯.৪৫মি.) দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বাগেরহাটসহ ১০ জেলায় উপজেলা সহ প্রত্যান্ত গ্রামাঞ্চলে প্রচান্ড গরমের সাথে পাল্লা দিয়ে চলছে বিদ্যুৎ বিভাগের লোডশেডিং। প্রচান্ড গরমে সাধারন মানুষের জনজীবন যখন উষ্টাগত ঠিক সেই সময়ে পলী বিদ্যুতের এই লোডশেডিং পরিস্থিতিতে জনগন নাজেহাল হয়ে পড়েছেন। ২৪ঘন্টায় অর্ধশতবার বিদ্যুৎ বিভ্রাট দেখা দেওয়ায় শিক্ষাথীদের যেমন লেখাপড়ায় বিঘ্ন সৃষ্ঠি হচ্ছে, তেমনী শিল্পনগরী দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বাগেরহাটসহ ১০ জেলায় সহ পাশ্ববর্তী বিভিন্ন এলাকায় অবস্থিত শিল্প কলকার খানার মালিকরা পড়েছেন মহাবিপাকে। এই পরিস্থিতিতে শিক্ষাথী অভিভবক ও শিল্প কলকারখানার মালিকদের মাঝে লোডশেডিং আতংকে রাতের ঘুম হারাম হয়ে পড়েছে। বিদ্যুৎ বিভাগ বলছে ঢাকায় বিদ্যুতের কয়েকটি টাওয়ার ভেঙ্গেপড়া সহ চাহিদার তুলনায় বরাদ্ধ কম থাকায় এপরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। কবে নাগাত বিদ্যুতের এই লোডশেডিং অবস্থার উন্নতি হবে তা নিয়েও রীতিমত সংশয় দেখা দিয়েছে।
জানা গেছে, সরকার যে সময়ে ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়ে ভিশন-২০২১ বাস্তবায়ন করছেন, ঠিক সেই সময়ে সারাদেশের মত ফকিরহাটেও তীব্র লোডশেডিং দেখা দিয়েছে। লোডশেডিং এর মাত্রা এমনই চরমে পৌছেছে যে দিন রাতে অর্ধশতবার বিদ্যুতের লুকোচুরি শুরু হয়েছে। এতে শিক্ষাথীদের লেখাপড়ার যেমনী ক্ষতি হচ্ছে, তেমনী শিল্পকলকারখানার মালিকরা পড়েছেন মহাবিপাকে। সন্ধ্যা হলে বিদ্যুৎ চলে যাওয়া একটি পুরাতন রেওয়াজ পরিনত হলেও বাস্তবে দিনে বা রাতে একই অবস্থার সৃষ্টি হচ্ছে। আর একটু বাতাশ বা ঝড় হলে তো কথাই নেই। বিদ্যুৎ চলে যাওয়ার পর কবে নাগাত পূনঃরায় বিদ্যুৎ আসবে তার কোন খবর কেউ রাখে। গ্রাহকরা বলেছেন, কিছু কিছু এলাকায় দিনে বা রাতে ১২/১৪ঘন্টা অতিক্রম করলেও বিদ্যুৎ আসেনা। আবার কোন কোন এলাকায় বেশী একটা বিদ্যুৎ যায় না। এখানে বিমাতা সুলভ আচারনও করা হচ্ছে। কিসের কারনে এই বিমাতা সুলভ আচারন করা হচ্ছে তা হয়তো কেহ বলতেও পারবে না। তবে এটাই বাস্তব এটাই সত্য। বিদ্যুৎ অফিসের কয়েকটি মোবাইল নাম্বার গ্রাহকদের কাছে দেওয়া হলেও তা থাকে অধিকাংশ সময় বন্ধ। গ্রাহকরা আরো বলেছেন, উপজেলার কয়েকটি প্রত্যান্ত গ্রামাঞ্চলে একটু বড় বাতাশ বা সামান্য ঝড় হলেই বিদ্যুৎ চলে যায়। তখন লাইন চেক বা পরিক্ষার করার নামে চলে নানা প্রকার তালবাহানা। এই অবস্থায় শিক্ষাথীদের লেখাপাড়ার যেমন ১২টা বাজছে, তেমনী শিল্পকলকারখানার মালিকরা পড়েছেন গ্যাড়াকলে। বিদ্যুৎ বিভাগের এই লুকোচুরি কত দিন চলবে বলেও গ্রাহকরা অভিযোগ করেন। স্থানীয়রা জানান , গ্রীস্মের শুরুতেই বেড়েছে লোডশেডিং নামক বিদ্যুৎ বিভ্রাটের যন্ত্রনা । সকাল ৯ টা বাজার পর থেকেই বিদ্যুতের আশা যাওয়া । সকাল থেকে দুপুর ১২ / ১ টা পর্যন্ত অন্তত ১০ থেকে ১৫ বার বিদ্যুৎ বিভ্রাট এখন নিয়মে পরিনত হয়েছে । বেলা ২ টার পর থেকে ৫ টা পর্যন্ত লাইনে সমস্যা বা সাব ষ্টেশনে কাজ চলছে অজুহাতে বন্ধ রাখা হয় বিদ্যুৎ । সন্ধ্যার সময়ে দু একবার খুব স্বল্প সময়ের জন্য বিদ্যুৎ এসে আবার চলে যাবে । রাত ৮ টা থেকে ১২ টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ থাকবেনা “লোড” নেই অজুহাতে । রাত ১২ টার পরে বিদ্যুৎ এলেও আধা ঘন্টা পর পর লোডশেডিং দিয়ে চলানো হয় সকাল পর্যন্ত ।
এব্যাপারে ফকিরহাট পলী বিদ্যুৎ অফিসের জেনারেল ম্যানেজার মো. এনামুল হক এর সাথে মোবাইল ফোনে আলাপ করা হলে তিনি সিএইচটি মিডিয়া প্রতিনিধিকে বলেন, আমাদের চাহিদা হচ্ছে ৪৮মেঘাওয়াট, আর আমরা পাচ্ছি মাত্র ১৭,১৮ বা ১৯,মেঘাওয়াট। যা চাহিদার তুলনায় এত কম পাওয়ায় গ্রাহকদের চাহিদা পূরন করা অসম্ভাব হয়ে পড়েছে। শুধু তাই নয়, ঢাকায় বিদ্যুতের কয়েকটি টাওয়ার ভেঙ্গে পড়ায় পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ হয়েছে। তবে আশা করছি অচিরেই বিদ্যুতের এই সমস্যা অনেকাংশে সমাধান করা সম্ভাব হবে বলেও তিনি দাবী করেন। ভুক্তভোগীরা সিএইচটি মিডিয়া প্রতিনিধিকে জানান, দীর্ঘদিন থেকে সঞ্চালন লাইন মেরামত না করা, জোনাল অফিসের কর্মকর্তা কর্মচারীদের অনিয়ম – সেচ্ছাচারিতা, গ্রাহক অনুসারে বিদ্যুতের বরাদ্দ নিশ্চিৎ করতে না পারা, পুরাতন সামগ্রী দিয়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ করার ফলে দীর্ঘদিন ধার বাগেরহাটসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বিদ্যুতের সমস্যা রয়ে গেছে ।