সোমবার ● ২২ মে ২০১৭
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » হবিগঞ্জে যাত্রীবাহী বাস খাদে নিহত ১, আহত ৩০
হবিগঞ্জে যাত্রীবাহী বাস খাদে নিহত ১, আহত ৩০
হবিগঞ্জ প্রতিনিধি :: (৮ জৈষ্ঠ ১৪২৪ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় রাত ১০.৪২মি.) নিজের প্রাণবাঁচাতে না পারলেও ৩ বছরের শিশু সন্তানকে ঠিকই বাঁচালেন এক মমতাময়ী মা। ঘটনাটি ঘটেছে ২২ মে সোমবার দুপুরে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের বাহুবল উপজেলার লষ্করপুর নামক স্থানে দুর্ঘটনায় কবলিত যাত্রীবাহী বাসে। পুলিশ ওই হতভাগা মা (অজ্ঞাত পরিচয়) -এর মরদেহ এবং শিশুকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করেছে। ওই দুর্ঘটনায় অন্ততঃ ৩০ যাত্রী আহত হয়েছে।
আহতদের হবিগঞ্জ আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। চিকিৎসাধীন অন্ততঃ আরো ৩ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে। প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সোমবার দুপুরে সিলেট থেকে ছেড়ে কুমিল্লাগামী একটি যাত্রীবাহীবাস (ঢাকা মোট্রো ব ১১-০৮৬৮) ঢাকা-সিলেট মহসড়কের উপজেলার লস্করপুর নামক স্থানে পৌঁছলে চাকা পামচার হয়ে উল্টে গিয়ে খাদে পড়ে যায়।
এতে অন্ততঃ ৩০ জন যাত্রী আহত হন। খবর পেয়ে বাহুবল থানা পুলিশ ও শায়েস্তাগঞ্জ হাইওয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেন।
এরই মধ্যে স্থানীয় লোকজন অন্ততঃ ৩০ জনকে বাসের ভিতর থেকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে পাঠান। পরে শায়েস্তাগঞ্জ ফায়ারস্টেশনের স্টেশন অফিসার জামাল উদ্দিনের নেতৃত্বে একদল উদ্ধারকর্মী ঘটনাস্থলে এসে ড্রিল মেশিন দিয়ে বাসের বডি কেটে অজ্ঞাত পরিচয় মহিলার (৩৫) মরদেহ উদ্ধার করে। একই সময় অজ্ঞাত পরিচয় (৫০) মহিলাকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় কাইতপাড়া গ্রামের আব্দুস শহীদ বলেন, দুর্ঘটনার পরপর আমরা ঘটনাস্থলে এগিয়ে আসি। তখন বাসটি অনেক যাত্রী আটকা পেড়ে আছেন। তারা চিৎকার করে বাঁচার আকুতি জানাচ্ছিলেন। হঠাৎ চোখে পড়লো পয়ত্রিশোর্ধ এক আহত মহিলা ভিতর থেকে তার ৩ বছরের শিশু সন্তানকে উপরে তোলে তাকে উদ্ধারে সাহায্য চাচ্ছেন। তখনও ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধারকারীরা পৌছেননি।
এ সময় স্থানীয় লোকজন উদ্ধার কাজ শুরু করলেও ওই মা ও শিশুর কাছে পৌঁছা যাচ্ছি না। এক পর্যায়ে বাধ্য হয়ে আটকা পড়া মহিলা বহু কষ্টে দুর্ঘটনা কবলিত গাড়ির গ্লাস ভেঙে ৩ বছরের শিশুটিকে বাহিরে বের করে দেন। এ সময় শিশুটি বাহিরে এসেই তার পিতাকে খোঁজতে শুরু করে। এ ঘটনার কয়েক মিনিটের মধ্যে আটকা পড়া আহত ওই মহিলার দেহ নিথর হয়ে পড়ে। জেলা পুলিশের সিনিয়র এএসপি রাসেলুর রহমান (বাহুবল-নবীগঞ্জ সার্কেল) জানান, বৃষ্টি চলাকালীন সময়ে গাড়ীর গতিবেগ বেশি থাকায় চাকা পামচার হয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাসটি উল্টে যায়। শিশুটির পরিচয় এবং তার পিতার কোন সন্ধান মেলেনি।