মঙ্গলবার ● ২৩ মে ২০১৭
প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম বিভাগ » প্রচন্ড তাপদাহে পুড়ছে রাঙামাটি শহরের জনজীবন
প্রচন্ড তাপদাহে পুড়ছে রাঙামাটি শহরের জনজীবন
ষ্টাফ রিপোর্টার :: (৯ বৈশাখ ১৪২৪ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় বিকাল ৪.৫৫মি.) রাঙামাটি পার্বত্য জেলা জুড়ে বইছে তাপদাহ। খরতাপে পুড়ছে নদী, পাহাড় ও চারপাশ। অসহনীয় তাপ আগুনের হল্কা হয়ে বিঁধছে শরীরে। উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে পাহাড়। অগ্নিচুলির মতো জমা হচ্ছে তাপদাহ। দিনের বেলা তা অনেকটা লু হাওয়ার মত এসে জ্বালা ধরাচ্ছে রাঙামাটিবাসীর। সূর্য ডোবার পরও তাপমাত্রা তেমন একটা কমছে না, শীতল হচ্ছে না চারপাশ। গরমে হাঁসফাঁস করছে মানুষ। ব্যাহত হচ্ছে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। দুর্বল মৌসুমি বায়ুপ্রবাহ এবং বাতাসে আর্দ্রতার মাত্রা বেশি থাকায় সারাদেশে তীব্র গরম অনুভূত হচ্ছে বলে মনে করছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
রাঙামাটি শহর ঘুরে দেখা গেছে প্রচন্ড তাপদাহে পুড়ে অতিষ্ঠ জনজীবন। নদীতে পানি নেই, খা খা করছে কর্ণফুলী হ্রদ। হ্রদ শুকিয়ে মাঠ হয়ে গেছে। হ্রদের পানি শুণ্য তলদেশে মাটিও ফেটে চৌচির। কাঠ ফাটা গরমে শহরের লোকজন বিভিন্ন ঠান্ডা পানীয় কিনে খাচ্ছে। অনেক দোকানদার এই গরমে শুধুমাত্র ঠান্ডা পানি নিয়ে রাস্তার ধারে ফ্রিজের পানি বিক্রি করছেন। অনেকেই এই গরমে শরীরে একটু প্রশান্তির জন্য পাকা আনারস কিনে খাচ্ছেন রাস্তার দাড়িয়ে। দূর দূরান্ত থেকে আনারস, কাঠাঁল, লিচু ও আমসহ বিভিন্ন কাঁচা ফল বিক্রি করতে আসা বিক্রেতারা গরমের তাপ সহ্য করতে না পেরে হ্রদের মাঝখানে ঠাঁই দাড়ানো ট্রলারে ছাতা মাথায় বসে রয়েছেন বিক্রির কাজ বন্ধ রেখে। ট্রাকে মালামাল বহনকারী শ্রমিকরাও অসহ্য গরমে হাফপ্যান্ট পরে খালি গায়ে নেমেছেন কাজে। শহরে বিভিন্ন স্থানে বিদ্যুতের অপর্যাপ্ত ভোল্টেজের কারনে ঠিকমতো চলছেনা ফ্যান, ফ্রিজ ও এয়ার কুলার। এ যেন মরার উপর খারার ঘা। গরমে অতিষ্ট হয়ে বৃষ্টি কামনা করছেন তারা। নিতান্ত প্রয়েজন ছাড়া লোক জন বাসা বাড়ি থেকে বের হচ্ছেন না, দাহ্য গরমের তাড়নায় ঘরেই হাঁসফাস করছেন। শহরের রাস্তা ঘাট অনেকটা মানবশূণ্য হয়ে পরেছে।
আবহাওয়া অফিসের তথ্য অনুযায়ী রাঙামাটি শহরের আজকের তাপমাত্রা ২৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যদিও কোন কোন জায়গায় আকাশ হালকামেঘলা ছিল।
এদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তরের দীর্ঘমেদয়াদী পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে,মে মাসে দেশে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা আছে। বঙ্গোপসাগরে ১ থেকে২ টি নিম্মবচাপ সৃষ্টি হতে পারে। এর মধ্যে একটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে। মে মাসে দেশের উত্তর, উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চলে ২থেকে ৩ দিন বজ্রসহ মাঝারী অথবা তীব্র কালবৈশাখী/বজ্র-ঝড় ও দেশের অন্যত্র ৩ থেকে ৪ দিন হালকা/মাঝারী কালবৈশাখী হতে পারে।
দেশের উত্তর ও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে ২ থেকে ৩ টি তীব্র তাপপ্রবাহ (৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস)এবং অন্যত্র ২ থেকে ৩ টি মৃদু (৩৬ থেকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস) থেকে মাঝারী (৩৮ থেকে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস) তাপপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে।
জুন মাসের প্রথমার্ধে সারাদেশে দক্ষিণ পশ্চিম মৌসুমী বায়ু (বর্ষা) বিস্তার লাভ করতে পারে বলে আবহাওয়ার দীর্ঘমেয়াদী পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে।
জানা গেছে ২৩ মে ৯ জ্যৈষ্ঠ মঙ্গলবার রাজধানী ঢাকার আজকের তাপমাত্রা ৫৪ বছরের সর্বোচ্চ রেকর্ড । তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ৪২.২ ডিগ্রী সেলসিয়াস। ১৯৬০ সালের পর এটি ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। আর সারাদেশের মধ্যে সর্বোচ্চ মংলায় ছিল ৩৫ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।