শুক্রবার ● ২৬ মে ২০১৭
প্রথম পাতা » খুলনা বিভাগ » উচ্চ আদালতের নির্দেশ পালনে অনিহা : পাউবো’র অর্ধশত কোটি টাকার সম্পত্তি উদ্ধারে উদ্যোগ নেই
উচ্চ আদালতের নির্দেশ পালনে অনিহা : পাউবো’র অর্ধশত কোটি টাকার সম্পত্তি উদ্ধারে উদ্যোগ নেই
বাগেরহাট অফিস : (১২ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৪ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় রাত ১২.১৩মি.) বাগেরহাটের শরণখোলায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৩৫/১ পোল্ডারের জবর দখল হওয়া প্রায় অর্ধশত কোটি টাকার সম্পত্তি উদ্ধারে দেশের সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশনা থাকলেও এ পর্যন্ত কোন পদক্ষেপ না নেয়ার অভিযোগ উঠেছে বাগেরহাট জেলা প্রশাসক ও পাউবো’র স্থানীয় কর্তাদের বিরুদ্ধে। হাই কোর্টের স্থগিত আদেশের পর ইতিমধ্যে ৫ মাসের বেশি সময় অতিবাহিত হলেও রহস্যজনক কারনে এখনও কোন কার্যক্রম শুরু করেনি প্রশাসন। তবে পানি উন্নয়ন বোর্ডের খুলনা সার্কেলের প্রধান প্রকৌশলী এ.কে.এম ওহিদ উদ্দিন চৌধুরী ও বাগেরহাট জেলার নির্বাহী প্রকৌশলী মি. খুশি মোহন সরকার সহ পাউবো’র কর্তা ব্যক্তিরা সকল দায় চাপালেন জেলা প্রশাসক ডিসি তপন কুমার বিশ্বাসের উপর। তাদের দাবী সর্বোচ্চ আদালতের রায়ের কপি সহ ডি.সি’কে দখল হওয়া জমি উদ্ধারের জন্য চিঠি দিয়ে অনুরোধ জানানো হয়েছে। তাদের অনুরোধ ও আদালতের নির্দেশে কোন পদক্ষেপ তিনি নিবেন কিনা? সেটা একান্ত তার বিষয়। তবে,কিছু দিন অপেক্ষা করে বিষয়টি আদালতকে অবিহিত করবেন পাউবো কর্তৃপক্ষ।
সংশ্লিষ্টদের সূত্র জানায়, বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার বলেশ্বর নদী সংলগ্ন ৩৫/১ পোল্ডারের ১৯.৬১ একর সম্পত্তি ১৯৬৬ সাল থেকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের দখলে থাকলেও গত ২০১৩ সালে ওই জমির ১.৪৩ একর সম্পত্তি পাউবো’র আপত্তি থাকা সত্বেও তা জবর দখলের পাশাপাশি খাস খতিয়ানভূক্ত করে উপজেলা প্রশাসন মার্কেট ও একটি ইনষ্টিটিউট নির্মান করেন তৎকালীন বাগেরহাট জেলা প্রশাসক মুহা. শুকুর আলী ও শরণখোলা ইউএনও কে.এম মামুন উজ্জামান। ওই দু কর্মকর্তার মধ্যে ডি.সি সুকুর আলী (আইডি নং- ৫৬৮৬)। পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব এবং ইউএনও মামুন উজ্জামান (আইডি নং-১৫৭৪৭) যশোরের এডিসি হিসাবে কর্মরত আছেন। ওই সময় ডি.সি ও ইউএনও’র জমি জবর দখলের বিষয় নিয়ে বিভিন্ন জাতীয় ও আঞ্চলিক পত্রিকায় ধারাবাহিক সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। যার প্রেক্ষিতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহা পরিচালক বাদী হয়ে গত ২০১৬ সালে জমি উদ্ধার চেয়ে হাই কোর্টে একটি রিট করেন। রিট নং- ১৫৫৫১/২০১৬ ইং। উক্ত রিটে ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাগেরহাট জেলা প্রশাসক ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব)কে বিবাদী করা হয়। পরবর্তীতে গত ১৫ ডিসেম্বর ২০১৬ ইং তারিখ হাই কোর্ট জবর দখলকৃত জমিতে পরিচালিত উপজেলা প্রশাসন মার্কেট ও ইনষ্টিটিউটের কার্যক্রমের উপর স্থগিত আদেশ দেন এবং বিবাদীগনের বিরুদ্ধে কৈফত তলব করেন। কিন্তু দেশের সর্বোচ্চ আদালতের ওই নির্দেশ সংশ্লিষ্টরা এ পর্যন্ত আমলে নেননি। এ বিষয় দিপ্তবাংলা হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান এবং বঙ্গবন্ধু যুব পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও শরণখোলার উপজেলার বাসিন্দা মো. রেজাউল করিম খান রেজা সিএইচটি মিডিয়াকে জানান, পাউবো’র অর্ধশত কোটি টাকার সম্পত্তি জবর দখলের বিষয়টি তিনি সর্ব প্রথম পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব, জন প্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব ও মন্ত্রী পরিষদ সচিব এবং দুদককে লিখিত ভাবে অবহিত করেন। অথচ সর্বোচ্চ আদালতের রায়ের প্রতি সংশ্লিষ্টরা বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করে আদালতকে অবমাননা করেছেন। বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্টরা চোর পুলিশ খেলা শুরু করেছেন। এছাড়া তৎকালীন ইউএনও এবং ডিসি সহ কতিপয় দুর্নীবাজ কর্মকর্তাদের যোগসাজসে কেবল অর্ধশত কোটি টাকার জমিই দখল হয়নি, পাশাপাশি কয়েক কোটি টাকা আত্মসত সহ মোটা অংকের সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন রেজা। এ বিষয় বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক তপন কুমার বিশ্বাস বলেন, আদালতের স্থগিত আদেশ ও পাউবোর চিঠি তিনি এ পর্যন্ত হাতে পাননি। তবে বিষয়টি খোজ নিয়ে অচিরেই সরকারি সম্পত্তি দখল মুক্ত করার প্রয়োজনীয় উদ্দ্যেগ গ্রহন করবেন। এছাড়া মহামান্য হাইকোর্টের রায়ের প্রতি অনিহার কোন প্রশ্নই আসেনা বলে তিনি মন্তব্য করেন।