সোমবার ● ২৯ মে ২০১৭
প্রথম পাতা » কক্সবাজার » ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’ : চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্র বন্দরসমূহকে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত
ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’ : চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্র বন্দরসমূহকে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত
চট্টগ্রাম প্রতিনিধি :: (১৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৪ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় রাত ৯.২৯মি.) ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’ আরো উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে বাংলাদেশ সমুদ্র বন্দর ও উপকুলের কাছাকাছি ধেয়ে আসছে। এটি আরো ঘণীভুত ও উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে আগামীকাল বুধবার ভোর নাগাদ চট্টগ্রাম-কক্সবাজার উপকূল অতিক্রম করতে পারে।
চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্র বন্দরকে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অধিদফতর। আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশিদ স্বাক্ষরিত এক বিশেষ বুলেটিনে মংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহকে ৫ নম্বর হুশিয়ারি সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ৭ তারপর ৮ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
এছাড়া উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলার সমূহকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।
আবহাওয়ার বিশেষ বুলেটিনে আরো বলা হয়,পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় ’মোরা’ আরও সামান্য উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় (১৭.৫ ডিগ্রি উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯১.৩ ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমাংশ) অবস্থান করছিল।
চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৩৮৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৩০৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, মংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৫৮০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপূর্ব এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৫১০কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপূর্ব দিকে অবস্থান করছিল।
এটি আরও ঘণীভূত ও উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে ৩০ মে বুধবার ভোর নাগাদ চট্রগ্রাম-কক্সবাজার উপকূল অতিক্রম করতে পারে।
ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটার এর মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘন্টায় ৬২ কিলোমিটার যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড়ের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর খুবই উত্তাল রয়েছে।
চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্র বন্দরসমূহকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, নোয়াখালী, লক্ষীপুর, ফেনী, চাঁদপুর এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।
উপকূলীয় জেলা ভোলা, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং তাদের
অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ ৭ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।
ঘূর্ণিঝড় ’মোরা’র প্রভাবে উপকূলীয় জেলা কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, বরগুনা, ভোলা,পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং এসব জেলার অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিন্মাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৪-৫ ফুট অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
ঘূর্ণিঝড় ’মোরা’ অতিক্রমকালে কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা,বরিশাল, পিরোজপুর জেলা সমূহ এবং এর অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহে ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ সহ ঘন্টায় ৬২ থেকে ৮৮ কিলোমিটার বেগে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।
এদিকে টাঙ্গাইল, ফরিদপুর, মাদারীপুর, সীতাকুন্ড, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী, হাতিয়া, কক্সবাজার, সিলেট,রাজশাহী ও ঈশ্বরদী অঞ্চলসহ খুলনা ও বরিশাল বিভাগের উপর দিয়ে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা প্রশমিত হতে পারে।
এছাড়া ঢাকা, চট্টগ্রাম,খুলনা ও বরিশাল বিভাগের অধিকাংশ জায়গায়, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের দু’এক জায়গায় অস্থায়ী দমকা অথবা ঝড়োহাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সাথে ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের কোথাও কোথাও ভারী থেকে অতিভারী বর্ষণ হতে পারে।