শনিবার ● ১০ জুন ২০১৭
প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম বিভাগ » লংগদুতে গণগ্রেপ্তার বন্ধের দাবিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বরাবর স্মারকলিপি প্রদান
লংগদুতে গণগ্রেপ্তার বন্ধের দাবিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বরাবর স্মারকলিপি প্রদান
প্রেস বিজ্ঞপ্তি :: পার্বত্য বাঙ্গালী ছাত্র পরিষদের রাঙামাটি জেলা শাখার প্রচার সম্পাদক আবদুল্লাহ আল মোমিন প্রেরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানান রাঙামাটি জেলার লংগদু উপজেলায় সদর ইউনিয়ন যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়ন এর হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার, দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও সম্প্রতি লংগদুতে পরিকল্পিতভাবে সাজানো অগ্নি সংযোগের অভিযোগে নিরীহ বাঙ্গালীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করে চলমান গণগ্রেপ্তার বন্ধের দাবিতে ৬ জুন মঙ্গলবার রাঙামাটি জেলা প্রশাসক মানজারুল মান্নান এর মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন।
সংগঠনিটি পক্ষ থেকে প্রধান মন্ত্রী বরাবর প্রেরন করা স্মারকলিপির অংশটি পাঠকদের জন্য হুবুহু প্রকাশিত করা হলো :
হে দেশরত্ন
আসলামু আলাইকুম, রাঙামাটি পার্বত্য জেলাবাসীর পক্ষ থেকে পার্বত্য বাঙ্গালী ছাত্র পরিষদ ও পার্বত্য নাগরিক পরিষদ রাঙামাটি পার্বত্য জেলা শাখা শ্রদ্ধার সহিত আপনাকে আন্তরীক শুভেচ্ছা ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছে। আপনার যথাযথ বুদ্ধিদীপ্ত দিকনির্দেশনা ও দৃড় নেতৃত্বের কল্যাণে আজকে বাংলাদেশ অতি দ্রুত মধ্যম আয়ের দেশে পদার্পনের স্বপ্ন দেখছে। আপনার সরকারের সঠিক ও যুগোপযোগী নীতি গ্রহণের ফলে দেশে প্রতিষ্ঠিত হতে চলছে শান্তি ও ন্যায় বিচার। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় পুনরুজ্জীবিত হয়েছে দেশবাসী।
হে দেশ হিতৈশী,
গত ১ জুন ২০১৭ খ্রী. তারিখ ভাড়ায় মোটর সাইকেল চালক নুরুল ইসলাম নয়নকে লংগদু উপজেলা থেকে খাগড়াছড়িতে ২জন উপজাতীয় যুবক পরিকল্পিতভাবে ভাড়া নিয়ে দীঘিনালা উপজেলার চার মাইল এলাকায় হত্যা করে তার ব্যবহৃত মোটর সাইকেল নিয়ে পালিয়ে যায়। তার হত্যার বিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানে আপনার হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
উক্ত হত্যাকান্ডে জড়িত অপরাধীদের আড়াল করার জন্য পরিকল্পিতভাবে লংগদু উপজেলায়
উপজাতী সন্ত্রাসীরা কিছু ঝরাঝির্ণ ঘরবাড়ি পুড়িয়ে নিরীহ অসহায় বাঙ্গালিদের উপর দোষ চাপায় এবং এ ঘটনার সাথে বাঙ্গালীরা জড়িত বলে মিথ্যা অভিযোগ করে ও সাজানো মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি, গণগ্রেপ্তারের মাধ্যমে এলাকায় পুরুষ শুণ্যতা সৃষ্টি করেছে। এতে উক্ত এলাকায় নিরীহ নারী ও শিশুরা আতংক ও নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে বসবাস করেছে। উক্ত সাজানো মিথ্যা মামলায় গ্রেফতারকৃতদের নিঃশর্ত মুক্তি ও গণগ্রেপ্তার বন্ধের জোর দাবী জানাচ্ছি।
উল্লেখ্য যে, একইভাবে ইতিপূর্বে মাটিরাঙ্গা উপজেলার ভাড়ায় মোটর সাইকেল চালক মো. শান্ত ও মহালছড়ি উপজেলার ভাড়ায় মোটর সাইকেল চালক মো. সাদিকুল ইসলামকে নৃশংসভাবে হত্যা করে তাদের ব্যবহৃত মোটর সাইকেল গুলো ছিনতাই করে নিয়ে যায়। ইতিপূর্বে সংগঠিত হত্যাকান্ডগুলির সুষ্ঠু বিচার না হওয়ায় কতিপয় পার্বত্য এলাকার সন্ত্রাসীগোষ্ঠী পাবর্ত্য জনপদ অশান্ত করার লক্ষ্যে একেরপর-এক হত্যাকান্ড ঘটিয়ে যাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি নুরুল ইসলাম নয়ন হত্যাকান্ড সংগঠিত হয়।
উল্লেখ্য যে, একইভাবে ইতিপূর্বে মাটিরাঙ্গা উপজেলার ভাড়ায় মোটর সাইকেল চালক মো. শান্ত ও মহালছড়ি উপজেলার ভাড়ায় মোটর সাইকেল চালক মো. সাদিকুল ইসলামকে নৃশংসভাবে হত্যা করে তাদের ব্যবহৃত মোটর সাইকেল গুলো ছিনতাই করে নিয়ে যায়। ইতিপূর্বে সংগঠিত
হত্যাকান্ড গুলির সুষ্ঠু বিচার না হওয়ায় কতিপয় পার্বত্য এলাকার সন্ত্রাসীগোষ্ঠী পাবর্ত্য জনপদ অশান্ত করার লক্ষ্যে একেরপর-এক হত্যাকান্ড ঘটিয়ে যাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি যুবলীগ নেতা নুরুল ইসলাম নয়ন হত্যাকান্ড সংগঠিত হয়।
হে মান্যবর,
আপনি নিশ্চয় জানেন যে, যে কোন স্থানে শান্তি প্রতিষ্ঠায় প্রণীত শান্তি প্রক্রিয় সমুহে সকল জনগোষ্ঠী ও নাগরিকের সক্রিয় অংশগ্রহণ, সর্ব ক্ষেত্রে সুষম উন্নয়ন, সুষম উন্নয়নে সহায়ক শাসন নীতি আবশ্যক। বৈষম্যমূলক উন্নয়ন, বৈষম্যমূলক উন্নয়ন শাসন নীতি, সম্প্রদায় ভিত্তিক চুক্তি, সম্প্রদায় ভিত্তিক সুবিধাদি প্রদান এবং সর্বোপরি এসবের ভিত্তি “শান্তিচুক্তি” কখনই টেকসই শান্তি আনতে পারে না। বাংলাদেশের একদশমাংশ আয়তনের ও ভৌগোলিক দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ ও কৌশলগত স্থানে অবস্থিত পার্বত্য চট্টগ্রামের সার্বভৌমত্ব, রাষ্ট্রীয় কর্তৃক বজায় রাখা ও সর্বোপরি বর্তমানে এ অঞ্চলের সংখ্যাগরিষ্ঠ বাঙ্গালী জনগোষ্ঠীর সাংবিধানিক ও ন্যায্য অধিকারের কথা মাথায় রেখে পার্বত্য শান্তি চুক্তি বাতিলের দাবী জানাচ্ছি এ অঞ্চলের শান্তিপ্রিয় জনগণের প্রাণের প্রিয় সংগঠন পার্বত্য বাঙ্গালী ছাত্র পরিষদ ও পার্বত্য নাগরিক পরিষদ। পাশাপাশি পার্বত্য চট্টগ্রামে নির্যাতিত ও নিষ্পেষিত বাঙ্গালী জনগোষ্ঠির পক্ষে আমরা নিন্মেক্ত দাবিসমূহ আপনার সুবিবেচনার জন্য পেশ করছি :
১. নিরহ মোটর সাইকেল চালক সাদিকুল, নুরুল ইসলাম নয়ন ও মো. শান্তসহ সকল হত্যাকান্ডের বিভাগীয় তদন্ত কমিটির মাধ্যমে এই সকল হত্যাকান্ডের সুষ্ঠ বিচার দাবি করছি।
২. পার্বত্য চট্টগ্রামের সংখ্যাগরিষ্ঠ বাঙ্গালী জনগোষ্ঠীকে বঞ্চিতকারী ও সাম্প্রদায়িক “পার্বত্য শান্তি চুক্তি” বাতিল করতে হবে এবং পার্বত্য চট্টগ্রামের সকল জনগোষ্ঠীর ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করে এমন শাসন নীতি প্রনয়ণ করতে হবে।
৩.পার্বত্য চট্টগ্রামে সাম্প্রদায়িক ভারসাম্য ও সম্প্রতি রক্ষার্থে এবং শিক্ষার সুষম উন্নয়নে উপজাতি কোটা বাতিল করে অসম্প্রদায়িক পার্বত্য কোটা চালু করতে হবে এবং অবিলম্বে রাঙামটিতে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যায় ও মেডিকেল কলেজ এর অবকাঠামো তৈরীর কাজ শুরু করতে হবে।
৪. সঠিক পদ্ধতিতে ভূমি জরিপ করে বিদ্যমান আইনে ভূমি সমস্যার সমাধান করতে হবে।
৫. পার্বত্য চট্টগ্রামের নিরীহ জনগোষ্ঠির নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ঝুকিপূর্ণ অঞ্চল সমূহে জরুরী ভিত্তিতে সেনা ক্যাম্প পুনঃস্থাপন করতে হবে।
৬. র্যাব ও যৌথ বাহিনীর সহায়তায় পার্বত্য এলাকার সন্ত্রাসীদের হাত থেকে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করতে হবে এবং চাঁদাবাজি ও অপহরণ বন্ধে অভিযান পরিচালনা করতে হবে।
৭. জাতীয় পত্রিকা দৈনিক ইত্তেফাক, প্রথম আলো, কালের কন্ঠ, জনকন্ঠসহ যে সকল দৈনিক পত্রিকায় এবং অনলাইন মিডিয়া লংগদু অগ্নিকান্ডে ভূল এবং সাম্প্রদায়িক উস্কানিমূলক অগ্নিকান্ডের ফুটেজ দেওয়া হয়েছে সে সকল দৈনিক পত্রিকা ও অনলাইন মিডিয়া বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।
স্মারকলিপি স্বাক্ষরকারীরা হচ্ছেন :
বেগম নূর জাহান, আহ্বায়ক, পার্বত্য নাগরিক পরিষদ, রাঙামটি জেলা শাখা, মো. আলমগীর হোসেন, সভাপতি, পার্বত্য বাঙ্গালী ছাত্র পরিষদ, রাঙামটি জেলা শাখা ও মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, সাধারণ সম্পাদক, পার্বত্য বাঙ্গালী ছাত্র পরিষদ, রাঙামটি জেলা শাখা।