শুক্রবার ● ২৩ জুন ২০১৭
প্রথম পাতা » অপরাধ » আধুনিক যুগেও মধ্যযুগীয় প্রচারণা শব্দ দূষণে অতিষ্ঠ সিলেটবাসী
আধুনিক যুগেও মধ্যযুগীয় প্রচারণা শব্দ দূষণে অতিষ্ঠ সিলেটবাসী
হাফিজুল ইসলাম লস্কর,সিলেট প্রতিনিধি :: (৯আষাঢ় ১৪২৪ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় রাত ৯.৩৮মি.) আধুনিক যুগেও মধ্যযুগীয় প্রচারণা শব্দ দূষণে অতিষ্ঠ সিলেটবাসী। প্রচারণার ক্ষেত্রে মাইকের ব্যবহার এখনো ব্যবসায়ীদের কাছে আস্থার প্রতিক। আর এ কারণে শব্দ দূষণ মাত্রারিক্তভাবে বেড়ে চলেছে। শব্দ দূষণের ক্ষেত্রে মাইকের পাশাপাশি গাড়ি হাইড্রলিক হর্ণও মারাত্মক প্রভাব ফেলেছে জনজীবনে।
প্রবাসী অধ্যুষিত দ্বিতীয় লন্ডন খ্যাত সিলেট শহরে দেশের অন্যান্য শহরের চেয়ে সিলেট ও সিলেটের মফস্বল শহরে ব্যক্তিগত গাড়ি, অভিজাত বিপনি ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান অনেক বেশি। রমজান মাসে মাইক ও স্পিকার বাজিয়ে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের প্রচার-প্রচারণা চালানো, মোবাইল কোম্পানির সিম বিক্রি ও ঈদের বাজারে আসা ব্যাক্তিগত গাড়ি ও গণপরিবহনের হর্ণের শব্দে অতিষ্ঠ নগরবাসী।
সিলেট জেলার বিভিন্ন পৌশহর ঘুরে দেখা যায়, পৌরশহরে প্রতিদিন প্রায় ১০ থেকে ১২টি গাড়ি মাইক নিয়ে বিভিন্ন ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান প্রতারণামূলক শ্লোগান নানা অফার, ডাক্তারদের পরিচিতি মূলক প্রচারনা, প্রশাসন ও ব্যবসায়ীদের প্রচারণা বাড়ছে ব্যাপক হারে। এতে প্রতিনিহত মানুষজন নানা সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। বধির হওয়া থেকে শুরু করে মাথায় বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। বিশেষ করে স্কুল ও কলেজগামী শিক্ষার্থীদের উপর এর মারাত্মক প্রভাব পড়ছে।
ব্যাংকে টাকা উত্তোলন করতে আসা মাহিদুল হক জানান , তাঁর বাবা বিদেশ থেকে পিন নাম্বারে টাকা পাঠিয়েছেন। লিখতে গিয়ে তিনি একটি নম্বর ভুল করায় টাকা তুলতে পারছেন না। পুনরায় পিন নম্বর নিয়ে আসতে তিনি বাবাকে মুঠোফোনে কল করেন। প্রায় আধঘন্টা পর তার মুঠোফোনে কল আসলে তিনি মাইকের অতিরিক্ত শব্দের কারণে কিছু শুনতে পারেননি। অগত্যা তাকে আগামীকাল আবার আসতে হচ্ছে। মাহিদুল বলেন, দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, অথচ বিজ্ঞাপনের জন্য মানুষ এখনও মাইক চালায়। আরকি কোন মাধ্যম নেই?
জনৈক বৃদ্ধ বলেন- ‘বাবা রোজা মাসও শান্তি নাই। খালি আওয়াজ আর আওয়াজ। বাসার আশেপাশে রাস্তায় মাইকের আওয়াজর লাগি কুরআন শরীফ পড়তে বসলে ও পড়তে অসুবিধা হচ্ছে’।
উপশহর পয়েন্টে স্কুলগামী এক ছাত্র গাড়ির হর্ণ এর কারনে কানে হাত দিয়ে দাড়িয়ে যায়। তাকে এসময় খুব আতংকিত মনে হয়েছে। শুধু শহর নয় শব্দ দূষণের এ মাত্রা গ্রামের হাট-বাজার এলাকাসহ সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ছে।
শাহজালাল উপশহর ইসলামিক সোসাইটির সভাপতি মাওলানা মাশহুদ বলেন, তথ্য প্রযুক্তির এ যুগে প্রচার প্রচারণার নানা মাধ্যম থাকা সত্তেও কেন জানি মানুষ মধ্যযুগের এ দূষণকারী প্রচার ম্যাধমকে বেঁচে নেয়। প্রচারণার অনেক মাধ্যম রয়েছে। ফেসবুকে পেইজ খুলে আপনি পণ্যের বিষয়ে প্রচারণা চালাতে পারেন।
সাংবাদিক আরাফাত হোসেন বলেন, ধর্মীয় দ্বীনের শিক্ষা প্রচার সেই আদিকাল থেকে। তবে লক্ষ্য রাখা উচিত যাতে অন্যের বড় কোন সমস্যা না হয়।
নাক, কান, গলার ডাক্তার কাজী আক্তার হোসেন বলেন, অতি উচ্চ মাত্রায় শব্দ দূষণের ফলে যে কোন বয়সে মানুষের শাররীক ও মানসিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। তবে শিশুদের মধ্যে এ ঝুঁকি বেশি।
সিসিকের এক কর্মকর্তা বলেন, ধর্মীয় বিষয় ব্যাতিত প্রচার প্রচারণার ক্ষেত্রে নিদিষ্ট নীতিমালা রয়েছে। ব্যাক্তি বা প্রতিষ্ঠান এ আইন ভাঙ্গে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।