সোমবার ● ১৬ নভেম্বর ২০১৫
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » ঈশ্বরদী স্টেশনে মৈত্রী ট্রেনে উঠা নামার ব্যবস্থা না থাকায় উত্তরাঞ্চলের মানুষ ভ্রমন সুবিধা থেকে বঞ্চিত
ঈশ্বরদী স্টেশনে মৈত্রী ট্রেনে উঠা নামার ব্যবস্থা না থাকায় উত্তরাঞ্চলের মানুষ ভ্রমন সুবিধা থেকে বঞ্চিত
তামিমুল ইসলাম তামিম, ঈশ্বরদী প্রতিনিধি :: ঈশ্বরদী স্টেশন থেকে বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে চলাচলকারী যাত্রীর সংখ্যা চাহিদার তুলনায় অতিরিক্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকা স্বত্বেও আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণে উত্তরাঞ্চলের মানুষ দীর্ঘদিন থেকে মৈত্রী ট্রেনে ভ্রমন সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে ৷ দু’দেশের মধ্যে চলাচলকারী যাত্রী সংখ্যা আশানুরুপ হওয়ার সম্ভাবনাকে সামনে রেখে ২০০৮ সালের ৪ঠা এপ্রিলের পরে ঈশ্বরদী স্টেশন থেকে যাত্রী উঠা নামার প্রাথমিক পর্যায়ের প্রক্রিয়া শুরু করা হয় ৷ পরে দু’দেশের রেলওয়ের ডিআরএম পর্যায়ের একাধিক বৈঠকও অনুষ্ঠিত হয় ৷ এসব বৈঠকে ইমিগ্রেশনসহ নানা সুযোগ সুবিধার বিষয়ে আলোচনায় স্থান পায় ৷ কিন্তু অদ্যবধি এ স্টেশন থেকে যাত্রী উঠা নামার ব্যবস্থা করনে চুড়ান্ত কোনো পরিবেশ সৃষ্টি হয়নি ৷ এ কারনে রেলের রাজস্ব আয়ও কম হচ্ছে ৷
মহান মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে অদ্যবধি গণ-মানুষের মুক্তি, শোষিত, বঞ্চিত, নিপীড়িত মানুষের পক্ষের শক্তি ও স্বাধীনতার লড়াইয়ে ভারত সরকারের অনেক অবদান রয়েছে ৷ পাকিস্থানী শাষকগোষ্ঠির বিরুদ্ধে বাঙালী জাতিকে নতুন করে বাঁচার স্বপ্ন দেখিয়ে ছিলেন তত্কালীন ভারত সরকার ৷ পাকিস্থানের দেশী-বিদেশী দোসরদের গভীর ষড়যন্ত্রকে মোকাবেলা করার জন্য সবচেয়ে কাছে থেকে আপনভাবে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলো ভারত ৷ তারই ধারাবাহিকতায় স্বাধীনতার পর সবসময়ই বন্ধুপ্রতিম দেশ হিসেবে ভারতকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে ৷ এই উন্নয়ন ও অগ্রগতিকে আরো যুগপোযোগী ও গনমুখি করার জন্য বর্তমান সরকার ২০১১ সালের ৩রা ডিসেম্বর যোগাযোগ মন্ত্রনালয়ের অধীন থেকে রেলপথকে বাদ দিয়ে এককভাবে রেলপথ মন্ত্রনালয় গঠন করে ৷ যার ফলে ব্রিটিশ আমলের নিয়ম-কানুন থেকে বেরিয়ে রেলওয়ে বিভাগ স্বতন্ত্রভাবে এগিয়ে চলছে ৷ বর্তমান সরকারের বিগত চার বছরে রেলপথ নির্মান, রেললাইন সংস্কার, নতুন ইঞ্জিন ও নতুন নতুন কোচের সংযোজনসহ রেলওয়ের বিভিন্ন সরঞ্জাম ভারত সরকারের কাছে থেকে ক্রয় করেছে বাংলাদেশ সরকার ৷ সার্কভুক্ত দেশের ট্রানজিটের আলোকে ২০০৮ সালের ৩রা এপ্রিল দু’দেশের মধ্যে চালু করা হয় মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেন চলাচল ৷ ট্রেনটিতে ৩৬ টি এসি, ৮০ টি সিন্ধা, ২’শ ৮০ টি শোভন চেয়ারসহ সর্বমোট ৩’শ ২৬ টি আসনের ট্রেন নিয়ে ঢাকা-ঈশ্বরদী-বেনাপোল ও কোলকাতার মধ্যে চলাচল শুরু করে ৷
এতে করে ঈশ্বরদী,পাবনা, নাটোর,সিরাজগঞ্জ, রাজশাহীসহ উত্তরাঞ্চলের মানুষের কোনো লাভ হয়নি ৷ রেলের দায়িত্বশীল একাধিক সূত্র মতে, ঈশ্বরদী স্টেশন থেকে মৈত্রী ট্রেনে যাত্রী উঠা নামার ব্যবস্থা করা হলে প্রতিদিন ৩’শ ২৬টিরও বেশি যাত্রী ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে চলাচল করার সম্ভাবনা রয়েছে ৷ ট্রেনটিতে শুধু মাত্র ঢাকা থেকে যাত্রী উঠা নামার ব্যবস্থা থাকায় একদিকে যেমন উত্তরাঞ্চলের মানুষ বঞ্চিত হচ্ছে ৷ অন্যদিকে রেল কর্তৃপক্ষও প্রতিদিন লাখ লাখ টাকার রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে ৷ উত্তরাঞ্চলের শতশত যাত্রীদের এই ট্রেনে যাতায়াতের সুযোগ সৃষ্টির দাবীতে গত ২০১৪ সালের ১৭ জুলাই ঈশ্বরদীস্থ নাগরিক ঐক্য পরিষদের পক্ষ থেকে রেলমন্ত্রনালয় বরাবর স্বারকলিপি প্রদান করা হয় ৷ ঢাকা-কোলকাতা-ঈশ্বরদী-বেনাপোল হয়ে চলাচলরত মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেনটি ঈশ্বরদীতে পানি ও তেল নেওয়ার জন্য স্টপেজ থাকলেও যাত্রী উঠার কোন সুযোগ নেই ৷ ফলে এ অঞ্চলের যাত্রীরা বাড়তি অর্থ খরচ করে ভিন্ন রুটে বাস বা অন্য কোন মাধ্যমে কোলকাতায় যাতায়াত করছে ৷ রেল কতৃৃপক্ষের উচিত সকল নিয়ম-কানুন ও প্রয়োজণীয় ব্যবস্থা গ্রহনের মাধ্যমে ঈশ্বরদী থেকে যাত্রী উঠা-নামার সুযোগ সৃষ্টি করা করা ৷
ঈশ্বরদী স্টেশন থেকে মৈত্রী ট্রেনে যাত্রী উঠা নামার ব্যবস্থা চালু করনের বিষয়ে পশ্চিমাঞ্চল রেলের পাকশী বিভাগীয় ব্যবস্থাপক আফজাল হোসেন জানান, রেল কর্তৃপক্ষের আন্তরিকতার অভাব নেই ৷ শুধু মাত্র কাস্টমস্ ও ইমিগ্রেশন কর্তৃপ্ক্ষ এখন পর্যন্ত কাজ করতে না পারায় রের কর্তৃপক্ষেও যাত্রী উঠা নামার ব্যবস্থা করতে পারছে না ৷ বর্তমান অবস্থাতেই মৈত্রী ট্রেন কমপক্ষে আরো একটি এসি চেয়ার কোচ সংযোজন করা দরকার ৷ ঈশ্বরদী স্টেশন থেকে ট্রেনটিতে যাত্রী উঠা নামার ব্যবস্থা চালু হলে যাত্রী সংখ্যা ও রাজস্ব আয় বহুগুনে বৃদ্ধি পাবে ৷ আপলোড : ১৬ নভেম্বর ২০১৫ : বাংলাদেশ : সময় : রাত ৮.৫২ মিঃ