বুধবার ● ২৮ জুন ২০১৭
প্রথম পাতা » পটুয়াখালী » পটুয়াখালীতে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে ঈদের জন্য বিউটির পরিবারে সহায়তা
পটুয়াখালীতে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে ঈদের জন্য বিউটির পরিবারে সহায়তা
পটুয়াখালী প্রতিনিধি :: (১৪আষাঢ় ১৪২৪ বাঙলা : বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৭.১৭মি.) বিউটি বেগমের চারজনের সংসারে ধুমধামে ঈদ উদযাপন হয়েছে। শ্রমজীবী স্বামী আলী আহম্মেদ, পঞ্চম শেণি পড়ুয়া আমেনা, ক্লাশ ওয়ানে পড়া আমানকে নিয়ে হত-দরিদ্র এ পরিবারে মহা অনিশ্চয়তায় পড়েছিল ঈদ উদযাপন। এমনকি একটু সেমাই চিনি কেনার সঙ্গতি ছিলনা। ভরসা ছিল সন্তানদের উপবৃত্তির ১৫ শ’ টাকা। কিন্তু ঈদের কয়দিন আগে পড়শি মেসলেম শিকদার গং খাস জমিতে থাকা বাড়ি থেকে পরিবারটি উচ্ছেদের জন্য মারধর করে বিউটিকে। এসময় উপবৃত্তির টাকা দেয়া মোবাইলটিও ছিনিয়ে নেয়। সবকিছু ফিঁকে হয়ে যায়। মহা অনিশ্চয়তায় পড়ে ঈদ উদযাপন। রঙিন ঈদ উদযাপনের স্বপ্ন যায় বিবর্ণ হয়ে।
পাখিমারা গ্রামে বাড়ি বিউটির। কলাপাড়ায় এসে এ প্রতিনিধির কাছে এসব বলে কান্না জুড়ে দেন বিউটি। সঙ্গে দুই সন্তান। বলেন, মাইয়া-পোলাডারে একটু সাজনি কিইন্যা দেয়ার লইগ্যা এই টাহা তোলতে চাইছিলাম, পারলামনা।’ এনিয়ে খবর প্রকাশ হয়। শিরোনাম ছিল ‘কলাপাড়ার বিউটি বেগম এখন কোথায় যাবেন।’
বিষয়টি নজড়ে আসে পটুয়াখালীর জেলা প্রশাসক ড. মো. মাসুমুর রহমানের তিনি রবিবার শেষ বিকেলে সিএইচটি মিডিয়া প্রতিনিধিসহ উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে ফোন করেন। বলেন সবকিছু নির্দেশ দেন এই পরিবারের ঈদ-উদযাপনের সকল ব্যবস্থা করার। কলাপাড়ার ইউএনও তাৎক্ষণিক সন্ধ্যায় ঈদের সেমাই-চিনিসহ বাজার পৌছে দেন বিউটি বেগমের বাড়িতে। এমনকি নতুন কাপড়-চোপড় কেনার জন্য ঈদের দিন সোমববার সকাল সাড়ে নয়টায় নগদ দশ হাজার টাকা তুলে দেয়া হয়। ইউএনও এবিএম সাদিকুর রহমান তার বাসায় বিউটি বেগমকে আপ্যায়িত করে তার হাতে তুলে দেন নগদ দশ হাজার টাকা।
জেলা প্রশাসক জানান এ টাকা প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে দেয়া হয়েছে ওই হতদরিদ্র পরিবারের সদস্যদের ঈদ উদযাপনের জন্য। ইউএনও সাদিকুর রহমান জানান যে ব্যক্তি এ দরিদ্র পরিবারকে উচ্ছেদের জন্য মারধর করেছে, ছিনিয়ে নিয়েছে উপবৃত্তির টাকার মোবাইল তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
স্বামী-সন্তান নিয়ে ঈদ উদযাপন করতে পেরে বিউটি বেগমের পরিবারে এখন স্বস্তি ফিরে এসেছে। তিনি প্রধানমন্ত্রী এবং জেলা প্রশাসককে প্রাণ ভরে দোয়া করার কথা জানালেন। তার খবরটি প্রকাশের জন্য এ প্রতিনিধিকেও চোখের পানি ছেড়ে শুধু বললেন, আপনারে আল্লায় দেখবে।
শ্রমজীবী স্বামীর দিনমজুরি এবং নিজে ঝি এর কাজসহ হোটেলে পানি দিয়ে সংসার চালায়। এরপরও স্কুলে পাঠায় দুই সন্তানকে।