শুক্রবার ● ৩০ জুন ২০১৭
প্রথম পাতা » ময়মনসিংহ » মমেক হাসপাতালের আইসিইউে অগ্নিকান্ডের ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৪ দাঁড়িয়েছে
মমেক হাসপাতালের আইসিইউে অগ্নিকান্ডের ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৪ দাঁড়িয়েছে
ময়মনসিংহ অফিস :: (১৬ আষাঢ় ১৪২৪ বাঙলা : বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৬.১০ মি.) ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ (মমেক) হাসপাতালের আইসিইউ ইউনিটে লাগা আগুন থেকে বেঁচে যাওয়া ছয়জন রোগীর মধ্যে বৃহস্পতিবার লাইফ সাপোর্টে থাকা নেত্রকোনার দুর্গাপুরের সখিনা (২০) এবং তারাকান্দার হাবিবুর রহমান(৩৬)মারা যান। তারও আগে বধবার ভোরে গফরগাঁওয়ে সুরুজ মিয়া (৪৮) এবং মঙ্গলবার সন্ধার পর জামালপুরের হেলাল উদ্দিন (৫০) মারা যাওয়ায় মৃতের সংখ্যা ৪ এ দাড়িঁয়েছে বলে নিশ্চিত করেন হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. লক্ষ্মী নারায়ণ মজুমদার।
এদিকে অগ্নিকান্ডের ঘটনায় গঠিত সাত সদস্যের তদন্ত কমিটির কমিটি প্রধান হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. আব্দুল গনির নেতৃত্বে তদন্ত কাজ শুরু করেছে বৃহস্পতিবার।
ঈদের পর দিন মঙ্গলবার (২৭ জুন) সকালে হাসপাতালের নতুন ভবনের পঞ্চম তলার আইসিইউতে আগুন লেগেছিল। এসময় লাইফ সাপোর্ট মেশিন পুড়ে যাওয়ায় ছয়জন রোগীকে উদ্ধার করে করোনারি কেয়ার ইউনিটে স্থানান্তর করা হয়। তাদের মধ্যে বৃহস্পতিবার সখিনা এবং হাবিবুর রহমান, বুধবার সুরুজ মিয়া এবং মঙ্গলবার হেলাল উদ্দিন নামে এ চারজনের মৃত্যু ঘটে। বাকি দু’জনের অবস্থাও আশঙ্কাজনক বলে হাসপাতারের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।
আগুন লাগার কারণ অনুসন্ধান ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণে সাত সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে কমিটিকে তিন কর্মদিবসে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়।
বৃহস্পতিবার দুপুরে তদন্ত কমিটির সদস্যরা ক্ষতিগ্রস্থ আইসিইউ ইউনিট ঘুরে দেখে গেছেন। এ সময় কমিটির সদস্যরা বৈদ্যুতিক সরঞ্জামাদিসহ পুড়ে যাওয়া মূল্যবান যন্ত্রপাতি ও মেশিন দেখেন এবং ছবিও তোলেন।
তদন্ত কমিটি প্রধান আব্দুল গনি সাংবাদিকদের জানান,প্রয়াজনে আরও সময় চাইবেন তারা। এদিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে কমিটির এক সদস্য বলেন, “বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত বলে মনে হচ্ছে না।”
আইসিইউর দায়িত্বে থাকা উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. আ ন ম ফজলুল হক পাঠান সিএইচটি মিডিয়া প্রতিনিধিকে বলেন, স্টোররুম থেকেই যে আগুনের সূত্রপাত সেটি নিশ্চিত করেছে ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা।
তদন্ত কমিটির সদস্য গণপূর্ত বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী তাওহীদুর রহমান বলেন, “আইসিইউর স্টোররুমের এসি (শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র) থেকে আগুনের সূত্রপাত বলে মনে হচ্ছে।” তবে এ বিষয়ে ডা. পাঠান বলছেন, গত ৩ মাস ধরে স্টোর রুমের শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রটি নষ্ট ছিল।
বৃহস্পতিবার দেখা যায়, আগুনের পর থেকে বন্ধ রয়েছে আইসিইউ ইউনিটের কার্যক্রম। নতুন করে কোনো রোগী আইসিইউতে নেওয়া হচ্ছে না। ফলে ঝুঁকির মুখে পড়েছে হাসপাতালের সঙ্কটাপন্ন রোগীরা।
এদিকে আইসিইউ সচল করতে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে এবং২/১ দিনের মধ্যে আইসিইউ ওয়ার্ড সচল করা সম্ভব হবে এ কথা জানান, মমেক এর সহকারী পরিচালক লক্ষ্মীনারায়ণ মজুমদার।
প্রসঙ্গতঃ মঙ্গলবার (২৭ জুন) সকাল সাড়ে ৯টার সময় আইসিইউ ইউনিটের স্টোর রুমে আগুন লেগে আইসিইউ যন্ত্রপাতি প্রায় সম্পূর্ণ পুড়ে যায়। ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট দেড় ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এসময় ছয়জন রোগীসহ আটকা পড়া চিকিৎসক ও কর্মচারীদের উদ্ধার করা হয়।