রবিবার ● ২ জুলাই ২০১৭
প্রথম পাতা » অর্থ-বাণিজ্য » বছরের ১২ মাস সবজি চাষ করে ত্রিশালের প্রত্যন্ত গ্রামের চাষিরা স্বাবলম্বী
বছরের ১২ মাস সবজি চাষ করে ত্রিশালের প্রত্যন্ত গ্রামের চাষিরা স্বাবলম্বী
ময়মনসিংহ অফিস :: (১৮ আষাঢ় ১৪২৪ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় বিকাল ৩.৪০মি.) ময়মনসিংহের ত্রিশালের প্রত্যন্ত গ্রামের চাষিরা বছরের ১২ মাসই সবজি চাষ করে স্বাবলম্বী হওয়ার পথে হাটছে। উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকায় কচু, লতা, আলু, বেগুন, সিম, শশা, কুমড়া, করলা, ঢেঁরস, ডাটাসহ বিভিন্ন জাতের সবজি চাষ হয় সারা বছরই। সবজি চাষের গ্রাম নামে পরিচিতি পাওয়া এ এলাকার রামপুর, বীররামপুর, গফাঁকুড়ি, সাখুয়া ও নগরচড়া গ্রামের ৯০ ভাগ কৃষকের এসব উৎপাদিত সবজি যায় রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে। ব্যাপকভাবে বিভিন্ন জাতের সবজি উৎপাদন হওয়ার ফলে মানুষের কাছে সবজির উপজেলা হিসেবেই পরিচিত হয়ে উঠছে এখন ত্রিশাল।
ত্রিশাল উপজেলা কৃষি বিভাগের দেয়া তথ্যানুযায়ী ওইসব এলাকার ৬শ হেক্টর জমিতে গ্রামের ৯০ ভাগ কৃষক বছরজুড়ে কচু, লতা, আলু, বেগুন, সিম, শশা, কুমড়া, করলা, ঢেঁরসসহ বিভিন্ন জাতের সবজি উৎপাদন করে থাকে। আর এসব উৎপাদিত সবজি রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে রপ্তানি করা হয়।
সরেজমিন সবজির গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, মাছার মধ্যে ঝুলছে সবুজ সবুজ শশা, কুমড়া, করলা আর কচু ক্ষেতগুলো ছেঁয়ে গেছে লতায়। পাইকারি ও খুচরা বিক্রির জন্য সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ক্ষেতগুলো থেকে তাজা তাজা সবজি ও লতা তোলে স্তুপ করা হচ্ছে। প্রতিদিন ট্রাক বোঝাই করে হাজার হাজার কুমড়া, টনকে টন শশা, করলা, লতা যাচ্ছে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে। ব্যাপকভাবে বিভিন্ন জাতের শাক-সবজি উৎপাদন হওয়ার ফলে গ্রামের ওইসব এলাকাও ত্রিশালের মানুষের কাছে এখন সবজির গ্রাম হিসেবেই দিনে দিনে পরিচিতি লাভ করেছে।
সাখুয়া উত্তরপাড়া গ্রামের কৃষক আবদুল গনি মিয়া জানান, ৮ কাঠা জমিতে কচুর আবাদ করে লতার বেশ ভাল ফলন পেয়েছেন। ২/৩ মাস লতা বিক্রির পর কচু বিক্রি করবেন। এতে প্রায় ৩ লাখ টাকারও বেশি লাভ হবে বলে তিনি আশা করছেন।
বীররামপুর গ্রামের কৃষক লিটন মিয়া জানান, ২০/২৫ হাজার টাকা খরচ করে ৪ কাঠা জমিতে তিনি শশার আবাদ করেছেন। এই মৌসুমে খরচের দ্বিগুন লাভ করতে পারবেন। তিনি আরো জানান, শশার চাষ করে আমার সংসার জীবন সুন্দর চলছে।
সাখুয়া গ্রামের কৃষক জাফর মিয়া জানান,আমাদের উৎপাদিত বিভিন্ন জাতের সবজি ট্রাক বোঝাই করে ঢাকাসহ সারা দেশে যাচ্ছে। ফলে আমরা সবজি চাষ করে সাবলম্বী হওয়ার পথে হাটছি।
বীরামপুর গ্রামের হাবিবুর রহমান বলেন, সারা বছর করলা, শশা, বেগুনসহ বিভিন্ন শাক-সবজির চাষ করে সংসার ও তিন ছেলের লেখাপড়ার খরচ খুব ভাল ভাবেই মিটে যায়। তিনি অভিযোগ করে বলেন, এইসব গ্রামের কৃষকরা দেশের শাক-সবজির চাহিদা মেটানোর ভূমিকা রাখলেও উপজেলার কৃষি কর্মকর্তারা নিয়মিত তাদের খোঁজখবর রাখেন না।
কৃষকদের এসব অভিযোগ অস্বীকার করে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দ্বীপক কুমার পাল বলেন, কৃষি অফিস থেকে প্রতিনিয়ত খোঁজ নেয় হয়, তাছাড়া শাক-সবজি উৎপাদনে এ এলাকার মাটি উপযোগি বলেই ওই এলাকাগুলোতে ভাল ফলন হয়।