রবিবার ● ২ জুলাই ২০১৭
প্রথম পাতা » অপরাধ » পটুয়াখালীতে হত-দরিদ্রের চাল আত্মসাৎ
পটুয়াখালীতে হত-দরিদ্রের চাল আত্মসাৎ
পটুয়াখালী প্রতিনিধি:: (১৮আষাঢ় ১৪২৪ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৭.৩০মি.) পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলায় হত-দরিদ্রের মধ্যে বরাদ্দকৃত সরকারি চাল আত্মসাতের হিরিক পরেছে। ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানসহ ঘনিষ্ট ইউপি সংরক্ষিত সদস্য ও সাধারণ সদস্য এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে। নবগঠিত চরবোহানসহ ৭ ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলা। নির্বাচিত চরবোরহান ইউপি চেয়ারম্যান মো. নজির আহমেদ সরদার হত-দরিদ্র জেলেদের মধ্যে বিতরণের চাল স্বজন ও ইউপি সদস্য মাধ্যমে আত্মসাৎ করেছেন বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেন। বুড়াগৌরাঙ্গ নদের মধ্যে অবস্থিত চরবোরহান ইউনিয়নের শতকরা ৭০ ভাগ পরিবার জেলে ও প্রায় শতভাগ বসতি মৎস্যজীবী পেশায় কর্মকান্ডে জড়িত। ঈদুল ফিতরের বন্ধের পূর্বে বরাদ্দ করিয়ে বন্ধের মধ্যে চাল বিতরণ করেছেন ওই ইউপি চেয়ারম্যান। বালতি মেপে ৪০-৪৫ কিলোগ্রাম চাল দেয়ায় জেলেরা হতাশা প্রকাশ করেছে। ভুক্তভোগী অহিদুল, মনির ও লিয়ার বলেন, প্রতি জেলেকে সরকার নির্ধারিত ৮০ কিলোগ্রাম চাল দেবার কথা থাকলেও অর্ধেক চাল দেয়া হয়েছে। ২নং ওয়ার্ডের সাইফুল রাড়ী বাড়িসহ আড়াই শাতাধিক বস্তা চাল মজুদের খবর পাওয়া গেছে। অপরদিকে, স্থানীয় জনতা সেন্টার বাজার ও পাগলা বাজার থেকে কয়েকটি নৌকা আটকে বিক্রির উদ্দেশ্যে বোঝাই চাল ছিনতাইয়ের খবর পাওয়া গেছে। ২নং ওয়ার্ড জামে মসজিদের ঈমাম মো. মোশারেফ হোসেনের জিম্মায় রয়েছে আটককৃত ৪ বস্তা চাল। চেয়ারম্যান মো. নজির সরদার বলেন, যত্রতত্র চালের বস্তা মজুদ থাকার বিষয়টি তদন্ত করছি।
এদিকে, জেলেদের জন্য বরাদ্দ ভিজিএফ চাল ঈদুল ফিতর ছুটির পূর্বে ছাড় করেছেন বাঁশবাড়িয়ার ইউপি চেয়ারম্যান মো. আলতাফ হোসেন আকন। ওই বরাদ্দের চাল দিয়ে ভারনারেবল গ্রুপ ডেভলপমেন্ট (ভিজিডি), ভারনারেবল গ্রুপ ফিডিং (ভিজিএফ) ও প্রনোদনা কর্মসূচী (ঈদুল ফিতর) কর্মসূচীর আওতায় উপকারভোগীদের বিতরণ সম্পন্ন করেও ৮২ বস্তা চাল ইউনিয়ন কমপ্লেক্সে মজুদ রয়েছে বলে স্থানীয় রাজা খান ও কাশেম রাড়ী জানান। বিষয়টি নিয়ে চেয়ারম্যান মো. আলতাফ হোসেন আকন বলেন, কতিপয় গরীব মানুষ বিতরণের সময় উপস্থিত হয়, তাদের মধ্যেও কিছু চাল বিতরণ করা হয়।
রণগোপালদী ইউপি চেয়ারম্যান হাফেজ মো. জাকির হোসেন নির্বাচনী মেয়াদ শেষেও ২ বছর অতিরিক্ত সময় দায়িত্ব পালন করছেন। তার বিরুদ্ধে বরাদ্দ বিতরণে ব্যাপক অনিয়ম আত্মসাতের অভিযোগে সংবাদ প্রকাশ হলেও প্রশাসন কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। এজন্য ভুক্তভোগীরা ইউপি কমপ্লেক্স থেকে তার বাড়ি পর্যন্ত প্রায়শঃ হামলা অপমান অপদস্থ করার ঘটনা ঘটায়। ওই ইউনিয়নে বরাদ্দ বিতরণে জোর যার মূলক তার নীতি প্রচলিত রয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এবিষয়ে চেয়ারম্যান হাফেজ মো. জাকর হোসেন বলেন, স্বচ্ছভাবে বিতরণ করা হয়, কেউ অনিয়মের কথা বলতে পারবে না। ভোটার তালিকা প্রস্তুত হলেই নির্বাচন হবে। আলীপুর ইউপি চেয়ারম্যান ইঞ্জিঃ বাদশা ফয়সাল গরু চুরি, মহিষ চুরি, বাসা-বাড়িতে অগ্নি সংযোগ ও পালাক্রমে ধর্ষণ মামলার আসামী। তার ইউনিয়নে বরাদ্দের চাল গোডাউল এলাকায় চোরাই বাজারে বিক্রির পর অবশিষ্ট চাল ইউনিয়ন কমপ্লেক্সে নিয়ে বিতরণ করা হয়। চেয়ারম্যান ইঞ্জিঃ বাদশা ফয়সাল বলেন, আমার প্রতিপক্ষ মো. সোহরাব হোসেন অর্থ সহযোগীতা দিয়ে আমার বিরুদ্ধে মামলা করায়। আমি বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের রাজনীতি করি আমার আদর্শ আছে। সকল অভিযোগ মিথ্যা বানোয়াট।
এছাড়াও সদর দশমিনা ইউপি চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ লিটন, বহরমপুর ইউপি চেয়ারম্যান মো. আনোয়ার হোসেন মৃধার বিরুদ্ধে চাল আত্মসাতের অভিযোগ নিয়মিত রয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক ইউপি সদস্য এ অভিযোগ করেন। বরাদ্দ বিতরণের সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার উপস্থিতির দাবী জানান ওই ইউপি সদস্যরা।