বুধবার ● ৫ জুলাই ২০১৭
প্রথম পাতা » পটুয়াখালী » কুয়াকাটার ৬০ হাজার মানুষের জলোচ্ছ্বাস বন্যা ঝুঁকি কেটে যাচ্ছে
কুয়াকাটার ৬০ হাজার মানুষের জলোচ্ছ্বাস বন্যা ঝুঁকি কেটে যাচ্ছে
হাসান আলী,পটুয়াখালী প্রতিনিধি :: (২১ আষাঢ় ১৪২৪ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় দুপুর ২.০৩মি.) অবশেষে পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটা পৌরসভাসহ সংলগ্ন লতাচাপলী ও ধুলাসার ইউনিয়নের প্রায় ৬০ হাজার মানুষের জলোচ্ছ্বাস আতঙ্ক কেটে যাচ্ছে। দুই ইউনিয়নসহ কুয়াকাটা পৌরএলাকা ঘেরা বন্যা নিয়ন্ত্রণ বেড়িবাঁধের বিধ্বস্ত পাঁচ শ’ মিটার অংশ জরুরি মেরামত করা হচ্ছে। এছাড়া সাগরঘেঁষা দুই ইউনিয়সহ কুয়াকাটা পৌরএলাকার রক্ষাকবচ ৩৯ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ২০১৮ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে আধুনিকভাবে বন্যা কিংবা জলোচ্ছ্বাস প্রতিরোধের মতো করে পুনঃনির্মাণ করা হবে। বাঁধটির উচ্চতা দেড় মিটার (পাঁচ ফুট) উচু করা হবে। সম্পুর্ণ বাঁধটির পাদদেশ বর্তমানের চেয়ে আরও ৩৫ ফুট প্রশস্ত করা হবে। বাঁধটি প্রায় ১২০ ফুট প্রস্থ করা হচ্ছে। এছাড়া সিসি ব্লক প্লেসিং করে রিভার সাইটে এক মিটার উচু করলে পাঁচ মিটার স্লোপ থাকছে। একই ভাবে কান্ট্রি সাইটে এক মিটার উচ্চতায় দুই মিটার স্লোপ থাকবে। বাঁধটির আধুনিকায়নের মধ্যে টপে পর্যটকের ভ্রমনের জন্য ওয়াকিং জোন থাকছে। এর পাশে নির্দিষ্ট দুরত্বে থাকবে বড় ধরনের বেঞ্চি টাইপের সিসি ব্লক। যেখানে বসে আগতরা জমিয়ে আড্ডার পাশাপাশি স্বল্পকালীন বিশ্রামও নিতে পারবেন। এক কথায় দীর্ঘ বাঁধটি হবে দৃষ্টিনন্দন। এজন্য বিশ্বব্যাংক ইতোমধ্যে ১৪০ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। আগামি এক মাসের মধ্যে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ শুরু করবে। পানি উন্নয়ন বোর্ড কলাপাড়া সার্কেলের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবুল খায়ের এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি আরও জানান, শুধু জলোচ্ছ্বাস ঠেকানো উদ্দেশ্য নয়। কুয়াকাটাকে পর্যটকের কাছে আকর্ষনীয় করতে এবং মানুষের জীবন ও সম্পদ রক্ষায় এমন পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। প্রাথমিক পর্যায়ে এই মাসের মধ্যে বাঁধটির তিনটি পয়েন্ট মাঝিবাড়ি, খাজুরা ও মিরাবাড়ির চরম ঝুঁকিপুর্ণ পাঁচ শ’ মিটার অংশের ভাঙ্গন রোধে জরুরি রক্ষণাবেক্ষনের কাজ শুরু হচ্ছে। ৪৮ নম্বর পোল্ডারের এ বাঁধটির ৩৯ কিলোমিটার দীর্ঘ স্লোপে বসবাসকারীদের ক্ষতিপুরনের উদ্যোগ চুড়ান্ত করা হয়েছে। প্রায় তিন শ’ পরিবার এ ক্ষতিপুরন পাচ্ছেন। ইতোপুর্বে মাঝিবাড়িসহ মিরাবাড়ির দিকে তিন কিলোমিটার বেড়িবাঁধ সিসি ব্লক দিয়ে প্রটেকশন করা হয়। যার কাজের মান নিয়ে তখন সাধারন মানুষ ও কুয়াকাটার লগ্নিকারকরা প্রশ্ন তোলেন। তবে এখন সম্পুর্ণ বেড়িবাঁধটি উচু করাসহ পুনঃনির্মাণের খবরে কুয়াকাটার লগ্নিকারকসহ হাজারো ব্যবসায়ীদের মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে। স্বস্তিতে রয়েছেন সাধারণ মানুষ।
উল্লেখ্য, সাগরের অব্যাহত তীব্র ভাঙ্গনে সৈকতের বেলাভূমি ভাঙ্গনের কবলে পড়ে। এমনকি মানুষ ও তাদের সম্পদ রক্ষাকবচ বন্যানিয়ন্ত্রণ বেড়িবাঁধের তিনটি স্পটে তীব্র ভাঙ্গন দেখা দেয়। রিভার সাইটের স্লোপসহ মুলবাঁধের টপ এক তৃতীয়াংশ বিলীন হয় মাঝিবাড়ি ও মিরাবাড়ি স্পটে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের উদ্যোগে সিসি ব্লক দিয়ে ভাঙ্গন রোধে প্রটেকশন দেয়া হয় ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা। কিন্তু কুয়াকাটায় লগ্নিকারকসহ সেখানকার হাজারো ব্যবসায়ী এবং প্রায় এক লাখ মানুষ জলোচ্ছ্বাস ঝুঁকিতে শঙ্কিত হয়ে পড়েন। বর্তমানে বাঁধটি উচু করাসহ পুনঃনির্মাণের খবরে কুয়াকাটার সাধারণ মানুষসহ ব্যবসায়ী, লগ্নিকারকদের মধ্যে জলোচ্ছ্বাস ও বন্যাভীতি কেটে গেছে।
কুয়াকাটা পৌরসভার মেয়র আব্দুল বারেক মোল্লা জানান, বাঁধ পুনঃনির্মাণের খবরে পৌরবাসীসহ গোটা এলাকার মানুষ স্বস্তি ফিরে পেয়েছেন। তবে এর পাশাপাশি বীচ রক্ষা প্রকল্পের কাজও শুরু করা প্রয়োজন।