শনিবার ● ৮ জুলাই ২০১৭
প্রথম পাতা » পটুয়াখালী » মাহাবুবের খুনিদের গ্রেফতার ও বিচারের দাবীতে মানববন্ধন
মাহাবুবের খুনিদের গ্রেফতার ও বিচারের দাবীতে মানববন্ধন
পটুয়াখালী প্রতিনিধি :: (২৪ আষাঢ় ১৪২৪ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় রাত ৯.০২মি.) পটুয়াখালীতে চাঞ্চল্যকর কলেজ ছাত্র মাহাবুবুর রহমান খুনের ঘটনায় জড়িত পলাতক আসামীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবীতে মানববন্ধন কর্মসুচি পালন করেছে শিক্ষার্থীরা। ৮ জুলাই শনিবার দুপুরে বৃষ্টিতে ভিজে পটুয়াখালী প্রেসক্লাব চত্বরে এ মানববন্ধন কর্মসুচি পালন করেন শত শত শিক্ষর্থী।
এসময় মানববন্ধনে নিহত মাহাবুবুর রহমানের ভাই মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘প্রায় ছয় মাস অতিবাহিত হয়েছে, আমার ভাইকে ছাত্রলীগের নামধারী নেতা ও সন্ত্রাসীরা নির্মম ভাবে কুপিয়ে হত্যা করেছে। পুলিশ আমাদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী হত্যা মামলা চার নম্বর আসামী মিরাজকে গ্রেফতার করলেও মামলার প্রধান আসামীরা এখনও ধরা ছোয়ার বাইরে আছে। এছাড়াও ওই হত্যার ঘটনায় যারা সন্দেহভাজন ছিল, তারা এখন প্রকাশ্যে শহরে ঘুড়ে বেড়াচ্ছে। এদের মধ্য একজন পটুয়াখালী পুলিশ সুপার কার্যালয়ে কম্পিউটার অপারেটর হিসেবে চাকুরি নিয়েছেন বলে আমরা জানতে পেরেছি।’
এসময় তিনি আরো বলেন, ‘আমরা জানতে পেরেছি, মামলার তিন নম্বর আসামী জেলা ছাত্রলীগের সদস্য জহির রায়হান সদর উপজেলা করমজাতলা নামক একটি স্থানে পলাতক রয়েছে। এমন খবরের ভিত্তিতে গত ৫ জুলাই আমার ভাইয়ের সহপাঠিরা উক্ত স্থানে গিয়ে জহিরকে আটক করে পুলিশকে খবর দেয়। কিন্তু পুলিশ যাবার আগেই পটুয়াখালী সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মনিরেরও স্থানীয় ইউপি সদস্য সানু তালুকদার আটককৃত জহিরকে আমাদের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়ে পালাতে সাহায্য করে। এসময় ইউপি সদস্য সানুর লোকজন বেশ কয়েকজনকে পিটিয়ে আহত করে এবং মেহেদী হাসান নামে পটুয়াখালী সরকারী কলেজের শিক্ষার্থীর পায়ে চল মেরে তাকে মারাত্মক জখম করে। পরে পুলিশ আমাদেরকে উদ্ধার করে।’
নিহতের ভাই মাহাফুজ আরো বলেন, ‘পলাতক আসামীরা আওয়ামীলীগের এক কেন্দ্রীয় ও প্রভাবশালী নেতার মাধ্যমে মামলা থেকে রেহাই পেতে জোর তদবীর চালাচ্ছে এবং সন্দেহভাজন আসামীরা ওই নেতার পিডিএস মাঠ এলাকার বাস ভবনস্থ এলাকায় সব সময় অবস্থান করতে দেখা গেছে। এছাড়াও জেলা ছাত্রলীগের সদস্য জহিরকে হত্যা মামলায় আসামী না করার জন্য পটুয়াখালী জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান বিভিন্ন ভাবে অনুরোধ করেছিলেন। শুধু তাই নয়, আমার ভাইকে যখন মর্গে প্রেরণ করা হয়েছিল, তখন মর্গে গিয়ে রাশেদ খান জহিরকে মামলায় না জড়াতে হুমকী দিয়েছিল। এরই ধারাবাহিকতায় ৫ জুলাই জহিরকে আটক করার ঘটনায় উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মনির ও জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ তাদেরকে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করেছে।’
প্রসঙ্গত, গত ১২ জানুয়ারি রাত আনুমানিক ১০টার দিকে নিউ মার্কেট চত্বরে প্রকাশ্যে কুপিয়ে খুন করা হয় কলেজছাত্র মাহবুবকে। পরে নিহতের পিতা ৬ জনের নাম উল্ল্যেখসহ ৮/৯ কে অজ্ঞাত করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। মামলা নং-১৪/২০১৭। হত্যাকান্ডের ঘটনায় দুই ছাত্রলীগ কর্মীর নাম খবরে প্রকাশ করা হয়েছে বলে, সাংবাদিক বিলাস দাসকে ছাত্রলীগ কর্তৃক দুই দফা প্রাণ নাশের হুমকী দেয়া হয়। পরে ওই সাংবাদিক থানায় একটি জিডি করেন। জিডি নং-৬১৫/১৭।
এছাড়াও আসামী গ্রেফতারের দাবীতে মাহবাবুবের সহপাঠিরা পটুয়াখালীতে একাধিকবার আন্দোলনসহ নানা কর্মসুচি পালন করেন। প্রায় সাড়ে তিন মাস পরে ঘটার সাথে জড়িত মিরাজকে পুলিশ গ্রেফতার করে। তবে পুলিশ অপর আসামী দের ধরতে কয়েকদফা অভিযান চালিয়েছিল।