রবিবার ● ৯ জুলাই ২০১৭
প্রথম পাতা » অপরাধ » মেহেরপুরে সালিশ বৈঠকে গৃহবধূকে নির্যাতন : আটক-১৩
মেহেরপুরে সালিশ বৈঠকে গৃহবধূকে নির্যাতন : আটক-১৩
মেহেরপুর প্রতিনিধি :: (২৫ আষাঢ় ১৪২৪ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় বিকাল ৪.১৪মি.) মেহেরপুরের গাংনীতে পরকীয়ার অভিযোগ তুলে স্থানীয় চেয়ারম্যান ও মাতব্বরেরা এক গৃহবধূ ও এক দুষ্টি প্রতিবন্ধী যুবককে নির্যাতন করেছেন। এ ঘটনায় দু’ইউপি চেয়ারম্যানসহ ১৭জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো অর্ধ শতাধিক ব্যক্তির নামে মামলা করেছেন ওই গৃহবধূর বাবা গাংনী উপজেলার নওপাড়া গ্রামের শরীফুল ইসলাম। এ মামলায় গাংনী থানা পুলিশ এক ইউপি সদস্যসহ ১৩জন আটক করেছে।
আটককৃতরা হলো-গাংনী উপজেলার তেঁতুলবাড়ীয়া ইউনিয়ন পরিষদের ৭ নং ওয়ার্ডের সদস্য ও করমদী গ্রামের আব্দুল হামিদ (৫৫),শামসুজ্জোহা (৫৫),মঈনুদ্দিন (৬৫),খলিলুর রহমান (৫৩),বজলুল হক (৫০),আবু তালেব (৪৫),আজমাইন হোসেন (২৬),খলিল মন্ডল (৫৫),শরিফুল ইসলাম (২৬),কাবের আলী (৪০),আব্দুর রহমান (৬৫) ও কাউছার আলী (৩০),শিহাব আলী (২৬)।
তবে এ ঘটনায় পুলিশ আ.লীগ নেতা ওই গ্রামের জামাল আহমেদকে আটক করলেও অজ্ঞাত কারণে পথে তাকে ছেড়ে দেয়।
৯ জুরাই রবিবার ভোররাতে গাংনী থানা পুলিশের কয়েকটিদল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে করমদী গ্রামে অভিযান চালিয়ে এদেরকে আটক করে।
স্থানীয়রা জানান, শুক্রবার রাত আনুমানিক ১১টার দিকে গাংনী উপজেলার তেঁতুলবাড়ীয়া ইউনিয়নের করমদী গ্রামের ইছার উদ্দীনের ছেলে আশরাফুল ইসলাম (৩০) নামের দৃষ্টি প্রতিবন্ধীকে গ্রামের রাস্তায় বসে থাকতে দেখে কয়েকজন যুবক। ওই যুবকদের তথ্য অনুযায়ী গ্রামের মাতব্বরেরা একই গ্রামের মালয়েশিয়া প্রবাসী আলমগীর হোসেনের স্ত্রী এক সন্তানের জননী সিমা খাতুন (২৬)-এর সাথে পরকীয়ার অভিযোগ তোলেন আশরাফুলের বিরুদ্ধে। এ সময় ওই মাতব্বরেরা আশরাফুল ইসলাম ও সিমাকে ধরে নিয়ে ঘরে আটকে রাখে।
পরেদিন সকালে গ্রামে তাদের বিরুদ্ধে সালিসের আয়োজন করেন তেঁতুলবাড়ীয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম ও সাবেক চেয়ারম্যান রেজাউল হকসহ গ্রাম্য মাতব্বরেরা।
সালিশের সময় দুজনকে হাত-পা বেঁধে নির্যাতন করে। এ সময় স্থানীয়রা ওই নির্যাতনের দৃশ্য ভিডিও ও ছবি ধারণ করে ফেসবুকে ছাড়ে। ফেসবুকের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে,স্থানীয় প্রশাসন বিষয়টি আমলে নেয়। পরে নির্যাতিতা গৃহবধূর বাবা শরীফুল ইসলামের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ ১৩জনকে আটক করে।
রবিবার সকাল ১০টার সময় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত আটককৃতদের মেহেরপুর আদালতে প্রেরণ করা হয়।
গাংনী থানার ওসি আনোয়ার হোসেন সিএইচটি মিডিয়া প্রতিনিধিকে জানান,গৃহবধূর বাবার মামলার সূত্র ধরে ১৩জনকে আটক করা হয়েছে। বাকীদের আটকের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।