বুধবার ● ১২ জুলাই ২০১৭
প্রথম পাতা » অপরাধ » সংস্কার হলেও পরিবর্তন নেই ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে
সংস্কার হলেও পরিবর্তন নেই ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে
ছনি চৌধুরী, হবিগঞ্জ প্রতিনিধি :: (২৮ আষাঢ় ১৪২৪ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৬.৩৪মি.) ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে খানা-খন্দের কারণে এক লাইন দিয়ে চলাচল করছে উভয়দিকের যানবাহন’শিরোনামে’ সংবাদ প্রকাশের পর টনক নড়ে কর্তাদের তাৎক্ষনিক শুরু হয় মহাসড়কের খানা-খন্দ সংস্কারের কাজ । কিন্তু ঘুরে-ফিরে যে একই অবস্থা রয়ে যাবে ভেবেছিল কে ??? গত ৯ই জুন স্থানীয় ও জাতীয় পত্রিকাসহ দেশের বিভিন্ন অনলাইন নিউজ পোর্টালে সংবাদ প্রকাশ হয় । ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক একদিকে বড় বড় খানা খন্দে ভরা। ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের নবীগঞ্জ উপজেলার আউশকান্দি ইউনিয়নের সঈদপুর বাজার,দেবপাড়া ইউনিয়নের সদরঘাট নতুন বাজার থেকে শুরু করে পানিউমদা বাজার পর্যন্ত প্রায় ২৭কিলোমিটার সড়ক এর বিভিন্ন স্থানে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়ে টানা বৃষ্টির পানি জমে গর্ত গুলো ভরে উঠেছে অন্যদিকে মহাসড়কের নাজুক অবস্থা। টানা বৃষ্টিতে মহাসড়কের কাপেটিং উঠে বড় বড় গর্ত হয়ে খানা খন্দকে জমাট হয়েছে পানি। দূর্ঘটনার আশংকা থাকার পরও যানবাহন করে হাজার হাজার যাত্রী’কে চলাচল করতে হচ্ছে মহাসড়ক দিয়ে। গত ২০১৬ সালের জানুয়ারী মাস থেকে ২০১৭ সালের জুলাই মাস পর্যন্ত, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে খানা-খান্দে ভরপুর স্থানের মধ্যে,আউশকান্দি ইউনিয়নের সৈয়দপুর বাজার পানিউমদা ইউনিয়নের বড়গাঁও বাজার পর্যন্ত ঢাকা-সিলেট মহাসড়কস্থ ৪টি ইউনিয়নের প্রায় ২৭ কিলোমিটার সড়কের মধ্যে প্রায় ৩৭টি সড়ক দূর্ঘটনা ঘটেছে এতে প্রাণ গেছে আনুমানিক ৪২জন যাত্রীসহ পথচারীদের । এই খানা-খন্দের কারণে সাম্প্রতি জুন মাসের শেষের ১০দিনে সৈয়দপুর থেকে দেবপাড়া পর্যন্ত তিনটি সড়ক দূঘটনায় ,নববধূ,মা-ছেলে সহ নিহত হয়েছেন ৭জন আহত হয়েছেন ১৫জন । গত (২৭) জুন ঢাকা সিলেট মহাসড়কের নবীগঞ্জ উপজেলার আউশকান্দি ইউনিয়নের মজলিশপুর নামক স্থানে একটি প্রাইভেট মাইক্রো নিয়ন্ত্রন হারিয়ে খাদে পড়ে এতে রাস্তার পাশে বসে থাকা আয়ফর মিয়া (১৯) নামে এক যুবক চাপা পড়ে ঘটনাস্থলেই প্রান হারায়, গত (২৮) জুন ঢাকা সিলেট মহাসড়কে অতিরিক্ত গর্ত থেকে বাঁচতে নবীগঞ্জ উপজেলার দেবপাড়া ইউনিয়নের সদরঘাট নতুন বাজারের নিকটে মহাসড়কে নিষিদ্ধ ঘোষিত সিএনজি অটো রিক্সা ও প্রাইভেট মাইক্রো মুখোমুখি সংঘর্ষে মা ছেলে সহ ৫ জন নিহত হয়। এতে আহত হয় শিশুসহ অন্তত ৭ জন। নিহতরা হলেন দেবপাড়া ইউনিয়নের ইসলামপুর গ্রামের আব্দুল আলীর ছেলে ওমর আলী (১০),ওমর এর মা সুজিয়া বেগম (৪০),একই ইউনিয়নের ভানুদেব গ্রামের তোয়াহিদ মিয়ার ছেলে সিএনজি চালক তজমুল আলী (৩০), সদরঘাট গ্রামের লুৎফুর রহমানের ছেলে ডঃ লিটন আহমেদ (৩৫),সহ আরো ৫জন মারা যায় । গত (২৯) জুন বিকাল ৬টার দিকে নবীগঞ্জ থেকে ছেড়ে যাওয়া ইমা সিলেট থেকে দ্রুত গতিতে ছেড়ে আসা মাইক্রোবাস ঢাকা সিলেট মহাসড়কের আউশকান্দি ইউনিয়নের সৈয়দ পুর বাজারের রহমান ফিলিং স্টেশন এর নিকটে মুখোমুখি সংঘর্ষ বাধে। এঘটনায় আহত হয়েছে অন্তত ৮জন। পরে ঐদিন রাতে আহতদের মধ্যে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হবিগঞ্জ শহরের বাসিন্দা ইটালী প্রবাসী সাথি আক্তার (২৫) মৃত্যু হয় । খানা-খান্দের কারণেই দিন দিন সড়ক দূর্ঘটনা বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে অভিযোগ করেন স্থানীয় লোকজন । এদিকে পাশাপাশি রাস্তা খারাপ থাকায় গাড়িতে নির্দিষ্ট সময়ের চেয়ে অধিক সময় লাগছে বলে অভিযোগ করেন যাত্রীরা । ঢাকা-সিলেট মহা সড়ক গত (১০) জুন থেকে এলজিআইডি কর্তৃক স্থানীয় ঠিকাদার দিয়ে শুরু হয় সংস্কার কাজ । কিন্তু সংস্কার করা হলেও কিছুদিন পর ঘুরে ফিরে ঢাকা সিলেট মহাসড়কের অবস্থা রয়ে গেছে আগের মতোই । এতে করে স্থানীয় লোকজন এবং যাত্রী সাধারণদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে । স্থানীয় একজন পথচারী জানান, কিতা অইলো কাজ রাস্তার তো কোনো পরিবর্তন নাই । দ্রুত কার্যকরী উদ্যোগ গ্রহণ করার জন্য সড়ক ও জনপথ বিভাগের সু-দৃষ্টি কামনা করেছেন স্থানীয় লোকজন ।