বৃহস্পতিবার ● ১৩ জুলাই ২০১৭
প্রথম পাতা » নওগাঁ » আত্রাইয়ে দু‘বছরেও সংস্কার হয়নি স্মরণকালের বন্যায় বিধ্বস্ত বাঁধ
আত্রাইয়ে দু‘বছরেও সংস্কার হয়নি স্মরণকালের বন্যায় বিধ্বস্ত বাঁধ
আত্রাই (নওগাঁ) প্রতিনিধি :: (২৯ আষাঢ় ১৪২৪ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৬.১৪মি.) নওগাঁর আত্রাইয়ে গত ২০১৫ সালে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও বর্ষণের ফলে উপজেলার ছোট যমুনা নদীর তীরবর্তী ফুলবাড়ী বন্যানিয়ন্ত্রণ বেড়িবাঁধ বন্যায় বিধ্বস্ত হওয়ার র্দীঘ দু“বছরেও মেরামত হয়নি। ফলে অল্প বৃষ্টিতেই জলবদ্ধতার স্বীকার হচ্ছে ফুলবাড়ী ও পূর্বমিরাপুরের অসংখ্য পরিবার। যাতায়াতের জন্য নৌকায় হচ্ছে তাদের এক মাত্র অবলম্বন। বর্তমানে ওই এলাকার হাজার হাজার জনগন তাদের আবাদি ফসল নিয়ে উদ্বেগ আর উৎকন্ঠার মধ্যে রয়েছে।
তথ্যঅনুসন্ধানে জানা যায়, গত ২০১৫ সালের ২৩ আগস্ট ভোর রাতে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় আত্রাইয়ের ফুরবাড়ী বন্যানিয়ন্ত্রণ বেড়িবাঁধ ভাঙ্গার পর মির্জাপুর নামক স্থানে আত্রাই-নওগাঁ আঞ্চলিক সড়ক ভেঙে আশেপাশের এলাকার সমুদয় ফসল পানির নিচে তলিয়ে যায়। সেই সাথে এলাকার শত শত পরিবার পানিবন্দী হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করে। এতে আত্রাই-রাণীনগর উপজেলার প্রায় ১৪ হাজার হেক্টর ফসলি জমি পানির নিচে তলিয়ে যায়। প্রায় ২ মাস পরে বন্যার পানি নেমে যায়। এদিকে বন্যার পানি শুকিয়ে যাওয়ার দু‘বছর হলেও আজও ভাঙ্গন মেরামত করা হয়নি। এ ভাঙ্গন মেরামত না করায় যোগাযোগের ক্ষেত্রে এলাকাবাসীর চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। রাইপুর, ডাঙ্গাপাড়া, ফুলবাড়ি, উদনপৈয়, মিরাপুরসহ বিভিন্ন এলাকার লোকজনকে সপ্তাহে দুইদিন শনিবার ও মঙ্গলবার ভবানীপুর-মির্জাপুর হাটে যাবার জন্য এ পথ ব্যবহার করতে হয়। তাদের উৎপাদিত কৃষিপণ্য এ পথ দিয়েই হাটে বাজারজাত করতে হয়। বন্যায় বাঁধ বিধ্বস্ত হওয়ার পর থেকে তারা তাদের উৎপাদিত কৃষিপণ্য বাজারজাত করতে পারছে না। এদিকে এ বাঁধ মেরামত না করার ফলে আগামী বন্যা মৌসুমে আত্রাই-নওগাঁ আঞ্চলিক সড়ক হুমকির সম্মুখিন হয়ে পরবে বলে মনে করছেন এলাকার সচেতন মহল। বর্তমানে এলাকার হাজার হাজার কৃষক তাদের আবাদি ফসল নিয়ে উদ্বেগ আর উৎকন্ঠার মধ্যে রয়েছে।
এ বিষয়ে মিরাপুর গ্রামের মো. আব্দুল কুদ্দুস সিএইচটি মিডিয়া প্রতিনিধিকে জানান, আমরা এ ভাঙ্গন মেরামতের জন্য স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মেম্বারসহ অনেকের কাছেই ধর্না দিয়েছি। সকলেই আশ্বস্ত করেন কিন্তু আজও মেরামত না হওয়ায় বর্ষা মৌসুমের আগেই সেখানে পানি বন্দি হয়ে পড়েছে অসংখ্য পরিবার। বর্তমানে বাঁধটি মেরামত করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে ফলে আমরা আমাদের কষ্টের ফসল নিয়ে হতাশ হয়ে পড়েছি।
এ ব্যাপারে ভবানীপুর জি এস উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মাহাবুবুর রহমান সিএইচটি মিডিয়া প্রতিনিধিকে বলেন, গত ২০১৫ সালের স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় ফুরবাড়ী বন্যানিয়ন্ত্রণ বেড়িবাঁধ ভাঙ্গার ফলে এ রাস্তার উপর দিয়ে ছাত্র-ছাত্রীর চলাচল খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। এখন সেখানে নৌকা ছাড়া পারাপার হওয়া যায় না। রাস্তাটি সংস্কার করা অতিব জরুরী।
ফুলবাড়ী গ্রামের মো. তরিকুল ইসলাম ইসলাম সিএইচটি মিডিয়া প্রতিনিধিকে বলেন, আসন্ন বন্যা মৌসুমের আগে বাঁধটি মেরামত না করার ফলে আমাদের মাঠে কোন আবাদ করতে পারিনি। কৃষিপণ্য থেকে শুরু করে চিকিৎসা সেবা ও জেলা শহরের সাথে যোগাযোগের ক্ষেত্রে দিন দিন চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে গ্রামবাসীকে। তিনি দ্রুত বাঁধটি নির্মাণের জন্য উর্ধ্বোতন মহলের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মোখলেছুর রহমান সিএইচটি মিডিয়া প্রতিনিধিকে বলেন, বন্যায় বাঁধটি বিধ্বস্ত হওয়ার ফলে এলাকার জনগণকে দীর্ঘ দিন থেকে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। বাঁধটি সংস্কার করার জন্য রোড এ্যান্ড হাইওয়ে কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। আশাকরি কর্তৃপক্ষ দ্রুত সংস্কার পদক্ষেপ গ্রহন করবেন।