বুধবার ● ১৯ জুলাই ২০১৭
প্রথম পাতা » ফটো গ্যালারী » ছাতা কারিগরদের ব্যস্ততা বেড়েছে
ছাতা কারিগরদের ব্যস্ততা বেড়েছে
এম নজরুল ইসলাম :: (৪ শ্রাবণ ১৪২৪ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় রাত ১.৪০মি.)
‘নীল নব ঘনে আষাঢ় গগনে তিল ঠাঁই আর নাহিরে, ওগো আজ তোরা যাসনে ঘরের বাহিরে।’ হ্যাঁ, পঞ্জিকার পাতা অনুযায়ী এখন বর্ষাকাল। যদিও এখন রোদ আর বৃষ্টির খেলা চলছে। বছরের পুরো সময়টা বসে থাকলেও এই সময়টায় ছাতা তৈরির কারিগরদের ব্যস্ততা বেড়ে যায়। কার ছাতা কে আগে মেরামত করে নেবে তার জন্য প্রতিযোগিতা শুরু হয়। বর্ষকালে সবচেয়ে উপকারী বস্তটির নাম হলো ছাতা। পুরো উপজেলায় ভ্রাম্যমাণ ছাতা কারিগররা গ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ঘুরে ঘুরে ছাতা মেরামত করে থাকেন। এই ছাতা গ্রীষ্মেও যেমন দরকার তেমনি বর্ষাতেও এর প্রয়োজন। তবে মূলত বর্ষাকালেই ঘরে তুলে রাখা ছাতা মেরামত করতে নিয়ে আসেন ব্যবহারকারীরা। নন্দীগ্রাম পৌর শহরের বসুন্ধরা, জনতা, খন্দকার প্লাজা মার্কেটসহ বেশ কয়েকটি স্থানে বিক্রি হচ্ছে নানা রকম ছাতা। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বিগত বছরের ন্যায় এবারও বিপুল পরিমাণ বাহারি রং ও ডিজাইনের ছাতার পসরা সাজিয়েছেন। গত কয়েক দিনের টানা বর্ষণে সব ধরনের ছাতার দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। এমনটাই অভিযোগ ক্রেতাদের।
এদিকে শহরে রিকশা ভাড়া বেড়েছে। বৃষ্টি নামলে এই ভাড়া দ্বিগুণে গিয়ে দাঁড়ায়। রোদেলা তাপ বা বৃষ্টির ধারা থেকে মুক্তির জন্য ছোট্ট এই বস্তর প্রয়োজনটা যে কত তা মৌসুমেই বলে দেয়। আগের আমলে কাঠের হাতলের ছাতা থাকলেও হাল আমলে ছাতার হাতল ও কাপড়ে বৈচিত্র এসেছে। ছোট্ট সাইজের ছাতা স্কুল ব্যাগ, ভ্যানিটি ব্যাগ কিংবা প্যান্টের পকেটেও রাখা যায়। যত বৈচিত্রময় হোক ছাতা উল্টে গেলে, কাপড় ছিঁড়লে বা সেলাই খুলে গেলে ছাতা কারিগর ছাড়া কোনো উপায় নেই। বর্ষা মৌসুমে যেহেতু ছাতার ব্যবহার বেড়ে যায়, তেমনি কারিগরদের কাজের রেটও বেড়ে যায়। এখানকার দোকানীরা বড় বড় কোম্পানির ছাতা স্টিকার ও হলোগ্রাম প্রিন্ট করে নিয়ে বিক্রি করে থাকেন। ফলে ক্রেতারা প্রতারণার শিকার হন বলে অভিযোগ উঠেছে।
ছাতা কারিগর আব্বাস আলী জানান, প্রতিটি জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে। ফলে ছাতার কাপড়, হাতল, প্রভৃতি জিনিসপত্র কিনতে হচ্ছে চড়া দামে। এছাড়া সারা বছরই তাদের বসে থাকতে হয়, এই সময়টায় কিছু কাজ হয়। বেশিরভাগ ছাতা কারিগররাই পৈত্রিক সূত্রে এ পেশায় জড়িয়েছেন। এরা বৃষ্টিতে ভিজে কাজ করেন কিন্তু ব্যবহারকারীদের ভিজতে দেননা। এরা ছাতার অসুখ-বিসুখ সারিয়ে সুস্থ করে তোলেন। আর বিনিময়ে পাওয়া অর্থ দিয়েই চালান তাদের সংসার। বাজারে ছাতা কিনতে আসা রাব্বী হোসেন, পপি খাতুন, মাসুদ রানা জানান, বর্ষাকালের আচরণটা ভিন্নরকম। এই প্রচন্ড রোদ, এই বৃষ্টি। রোদ-বৃষ্টি যাই হোক বর্ষকালে ছাতাই মানুষের প্রিয় সঙ্গী। বাজারে ছাতার দাম চড়া হলেও বৃষ্টি কিংবা রোদ থেকে রক্ষা পেতে ছাতা কিনতে কার্পণ্য করছেন না ক্রেতারা।