বুধবার ● ১৮ নভেম্বর ২০১৫
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » গুরুদাসপুরে নদী-নালা, খাল-বিল, জলাশয়ে মাছ ধরার মহোত্সব
গুরুদাসপুরে নদী-নালা, খাল-বিল, জলাশয়ে মাছ ধরার মহোত্সব
আখলাকুজ্জামান, নাটোর প্রতিনিধি :: নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার প্রায় ২৫টি গ্রামের মানুষ হাজার বছরের ঐতিহ্য নদী-নালা, খাল-বিল, জলাশয়ে পলো দিয়ে মাছ শিকার এখনো ধরে রেখেছে ৷ প্রতি বছরের ন্যায় এবারেও গুরুদাসপুর উপজেলার শিধুলী, চরকাদহ, চলনালী, পাঁচশিষা, পাটপাড়া, সোনাবাজু, পোয়ালশুড়া, উদবাড়িয়া, হাঁসমারি, ধারাবারিষা, তালবাড়িয়া, খাঁকরাদহ, মশিন্দা, কাছিকাটা, বাহাদুরপাড়া, মাঝপাড়া, সাহাপুর, বামনকোলা, আনন্দনগর, বিলসা, পিপলা, হরদমা, বিলহরিবাড়ি, জ্ঞানদানগর, যোগেন্দ্রনগর, সাবগাড়ি, বিয়াঘাট, পার-গুরুদাসপুর, নারায়নপুর, খলিফাপাড়া ও বাবলাতোলা গ্রামের খেটে খাওয়া দিনমজুর থেকে শুরু করে সর্বস্তরের মানুষ মেতে উঠেছে পলো দিয়ে মাছ ধরার মহোত্সবে ৷
অঘ্রানের প্রথম থেকেই বাঙ্গালীর ঐতিহ্য-সংস্কৃতির উত্সব যখন গ্রাম বাংলার ঘরে ঘরে,পানি যখন এক বুক হয় এই অঞ্চলের পলো বাইছিল মানুষ নদী-নালা, খাল-বিল, জলাশয়ে থেকে রুই, কাতলা, চিতল, শোল, বোয়াল, আইড়, গোজার সহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ শিকার করে৷ জানা যায়, যারা পলো দিয়ে মাছ শিকার করে তাদেরকে বাইছিল দল বলা হয় ৷ এই বাইছিল দলের একজন সর্দার থাকে৷ তার কথা দলের সবাই মান্য করে তার নির্দেশ মতো চলে ৷
চরকাদহ গ্রামের আলী হামজা ওই বাইছিল দলের সর্দার ৷ কখন কোন দিন কোন জায়গায় পলো দিয়ে মাছ শিকার করবে তা তিনি মোবাইলের মাধ্যমে সবাইকে জানিয়ে দেন ৷ তিনি বলেন, ছোটবেলা দেখেছি আমার বাপ-চাচারা বড় বড় মাছ শিকার করে নিয়ে এসেছে, এখন আর তেমন বড় মাছ পাওয়া যায়না ৷ তবুও বাপ-চাচাদের ঐতিহ্য ধরে রেখেছি ৷ পলো দিয়ে মাছ ধরার মজা অনেক বেশি৷ সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত হীমেল পানিতে কঠিন শীতকে উপেক্ষা করে যদি দুই-একটা মাছ পাই তাহলে আমাদের আনন্দের সীমা থাকেনা ৷ তিনি আরো বলেন, প্রভাবশালীদের কারনে আর বেশি জায়গা পাওয়া যাচ্ছেনা৷ তারা দখল করে রেখেছে অনেক নদী-নালা,খাল-বিল ও জলাশয় ৷ ওইসব দখলদারদের হাত থেকে নদী-নালা,খাল-বিল ও জলাশয়গুলো দখলমুক্ত রাখতে প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি ৷
গ্রাম সর্দার অবসর প্রাপ্ত সৈনিক নজরুল ইসলাম ও বিমল চন্দ্র বলেন, আমরা যেদিন ভুটভুটি-অটোভ্যানযোগে এবং মাইলের পর মাইল হেটে মাছ ধরতে যাই, আমাদের সঙ্গে সকল ধর্মের সকল শ্রেনীপেশার মানুষ অংশ নেয়৷ হীমেল বাতাস আর ঠান্ডার পানির আক্রমনে যখন গায়ে অতিরিক্ত শীত লাগে তখন ‘আল্লাহ আল্লাহ-রাসুল বলো’ এই শ্লোগানে মুখরিত করলে শীত ভয়ে পালিয়ে যায় ৷আপলোড: ১৮ নভেম্বর ২০১৫ : বাংলাদেশ : সময় : রাত ১১.০১ মিঃ