বৃহস্পতিবার ● ৩ আগস্ট ২০১৭
প্রথম পাতা » অপরাধ » কু-প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় বখাটেদের হামলায় স্কুলছাত্রীর চোখ নষ্ট : মামলা
কু-প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় বখাটেদের হামলায় স্কুলছাত্রীর চোখ নষ্ট : মামলা
ঝালকাঠি প্রতিনিধি :: প্রেমের প্রস্তাাবে রাজি না হওয়ায় স্থানীয় ছাত্রলীগ-যুবলীগ নামধারী একদল বখাটে শাওড়াকাঠি বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেনীর স্কুলছাত্রী লামিয়া আক্তারের ১টি চোখ নষ্ট করে দিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। গত ১ আগষ্ট মঙ্গলবার আহত ছাত্রীর মা রাবেয়া বেগম বাদী হয়ে সিনিয়র জুডিশিয়াল মেজিষ্ট্রেট আদালতে এ অভিযোগে মামলা দায়ের করলে বিচারক ঝালকাঠি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি)কে এফআইআর রেকর্ড করা নির্দেশ দিয়েছে। গত ১৮ মে দিবাগত রাতে ঝালকাঠি সদরের ১ নং গাভা রামচন্দ্রপুর ইউনিয়নের শাওড়াকাঠি গ্রামে স্কুলছাত্রী লামিয়া আক্তার ও তার পরিবারের উপর এ নারকীয় হামলার ঘটনা ঘটেছে।
এজাহার নামীয় আসামীরা হচ্ছে মমিন হাং (২২) পিতা: জাকির হাওলাদার গ্রাম: শাওড়াকাঠি, নয়ন মাঝি (২১) পিতা: সুলতান মাঝি গ্রাম: তেরোয়ানা , জুয়েল মাঝি (২২) পিতা: রশিদ মাঝি গ্রাম: তেরোয়ানা,আল আমিন (২০) পিতা: জহিরুল ইসলাম গ্রাম : তেরোয়ানা ও সজিব হাং (২৩) পিতা: কাঞ্চন সরদার গ্রাম : শাওড়াকাঠি।
মামলার বিবরন ও বাদিনীর সাথে আলাপকালে সিএইচটি মিডিয়া প্রতিনিধিকে জানায়, শাওড়াকাঠী বালিকা বিদ্যালয়ে ৭ ম শ্রেনীর স্কলছাত্রী ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী খলিল হাওলাদারের মেয়ে লামিয়াকে বিদ্যালয়ে আসা যাওয়ার পথে একই গ্রামের জাকির হাওলাদারের ছেলে মোমিন সহ আসামীরা প্রায়শই অশ্লীল মন্তব্যসহ কু-প্রস্তাব দিতো ও পথরোধ করতো ।
লামিয়া তাদের ভয়ে কাউকে একথা না বললেও বিষয়টি তার মা ও বাবাকে জানালে তারা প্রতিবেশী ও স্থানীয়দের সাথে আলাপ-পরামর্শ করে। একথা টের পেয়ে বখাটে মোমিনসহ আসামীরা গত ১৮ মে দিবাগত রাতে জিআই পাইপ, লাঠি, লোহার রড সহ বাড়ীতে ডুকে লামিয়া ও তার বাবা মায়ের উপর হামলা চালায়।
সন্ত্রাসীরা ঘরের ভিতর ঢুকে লামিয়ার বাবা-মাকে মারধর করে ও ব্যাপক তান্ডব চালায়। একপর্যায় আতংকে ঘরে থাকা লামিয়া ডাক-চিৎকার শুরু করলে বখাটে মোমিন তার গলা চেপে ধরে মাটির উপর ফেলে দেয় ও এলোপাথারি পেটানোর সময় লোহার রডের আঘাতে লামিয়ার বাম চোখে গুরুতর জখম হয় ।
এসময় তাদের চিৎকার শুনে পাশের বাড়ীর লোকজন এগিয়ে আসলে বখাটে মোমিন সহ আসামীরা পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়দের সহযোগীতায় লামিয়াকে ঐ রাতেই বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে বেশ কয়েক দিন চিকিৎসার পর কর্তব্যরত ডাক্তাররা লামিয়ার উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা ইসলামী চক্ষু হাসপাতালে প্রেরন করেন।
এ বিষয় লামিয়ার পিতা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী খলিল হাওলাদার সিএইচটি মিডিয়া প্রতিনিধিকে জানান, আমার তিনটি মেয়ের মধ্যে বড় মেয়ে বিবাহ দিয়েছি এবং মেঝ মেয়ে ৯ নবম শ্রেনী ও ছোট মেয়েটি ৭ম শ্রেনীতে লেখাপড়া করছে। আমি বেশীর ভাগ সময় অসুস্থ থাকায় আমি তেমন আয়-উপার্যন করতে পারিনা। অভাবের সংসারে অনেক কষ্টে মানুষের হাতে পায়ে ধরে মেয়ের চিকিৎসা করিয়ে গত ১ আগষ্ট বাড়ীতে এনেছি। ডাক্তার আগামী ১৩ আগষ্ট পুনরায় একটি অপারেশনের জন্য ঢাকায় নিতে বলেছে কিন্তু জানিনা পারবো কিনা। তাই আমার মেয়ের দৃষ্টি শক্তি কেড়ে নেয়া সন্ত্রাসীদের বিচার পাবো কিনা জানিনা বলে কান্নায় ভেংগে পরেন।
এ ব্যাপারে ঝালকাঠি থানা সূত্র জানায়, ২ আগষ্ট বুধবার বিকাল ৫টায় পর্যন্ত আদালতের নির্দেশ এখনো পর্যন্ত থানায় এসে পৌছেনি। নির্দেশটি পৌছলে তাৎক্ষনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।