শুক্রবার ● ৪ আগস্ট ২০১৭
প্রথম পাতা » খাগড়াছড়ি » খাগড়াছড়ি-মারিশ্যা-দিঘীনালা পাহাড়ধসের জরার্জিণ সড়ক
খাগড়াছড়ি-মারিশ্যা-দিঘীনালা পাহাড়ধসের জরার্জিণ সড়ক
খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি :: (২০ শ্রাবণ ১৪২৪ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় বেলা ১২.৩৬মি.) পার্বত্য জেলায় প্রবল ভারী বর্ষন ও টানা বৃষ্টিতে খাগড়াছড়ি থেকে মারিশ্যা পর্যন্ত বিধ্বস্ত সড়ক সংস্কারে নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছে সড়ক ও জনপদ বিভাগ। পাহাড়ধসের ফলে জন জীবনের বিপর্যয়ের পাশাপাশি ব্যবহার অউপযোগি হয়ে উঠেছে প্রধান সড়কগুলো। ফলে খানাখন্দে ভরা সড়ক এখন যেন মরণ ফাঁদ। সেই মরণ ফাঁদ থেকে গন্তব্যে যাওয়া যাত্রীদের সুরক্ষায় কাজ করে যাচ্ছে খাগড়াছড়ি সওজ কর্তৃপক্ষ। ফলে সড়কের বেহাল দশা রোধে অব্যাহত সংস্কার কাজ চলছে দীঘিনালা,মেরুং,মারিশ্যা সড়কে।
যানবাহন চলাচল উপযোগী করে তোলাসহ সড়ক সংস্কার বিষয়ে খাগড়াছড়ি সড়ক জনপদ বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. আব্দুস শহিদ বলেন, সাধারণ মানুষের কষ্ট লাগবে কাজ করে যাচ্ছি আমরা। গত ১৩ জুন পাহাড়ধসের রাস্তা বিধ্বস্ত হয়। দিঘীনালা ছোট মেরু সড়কে পাহাড়ী ঢলে সড়কে ২৮ কিলোমিটার ১৯টি স্থানে রাস্তার পাশে ভেঙ্গে পড়ে। এর মধ্যে ১০টি স্থানে ফাটল বেশ বড় আকারের। ফাটলের স্থানগুলোতে মাটি,বালুর বস্তা ফেলে জরুরী ভিত্তিতে সাইডিং সাইডেও মাটি ভরাট প্রতিরক্ষামূলক সংস্কার কাজ করে সড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক করা হয়।
দীঘিনালা থেকে ৬ কিলোমিটার দুরে অবস্থিত চুংড়াছড়ি ছোট মেরুং,মনের মানুষ,বর্গা পাড়া,গোয়ালখালী বড়ুয়া পাড়াসহ গুরুত্বপূর্ণ বেশ কিছু এলাকায় ভাঙ্গন ও চুংড়াছড়ি ছোট মেরুং করলাছড়ি,বামে আটরাছড়া পর্যন্ত সড়কে প্রায় ৩৫টি ফাটল ধরেছে। করলাছড়ি ও বামে আটরাছড়া সড়কে বড় ধরনে ফাটল এসব জায়গা ৪০ কিলোমিটারে বাধ ভেঙ্গে গেছে।
ভাঙ্গনের ফলে পার্বত্য জেলার অন্যতম পর্যটন নগরী রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেক ও লংগদুর সাথে সারাদেশের সড়ক যোগাযোগ যে কোন মূহুত্বে বিচ্ছিন্ন হতে পারে বলেই জরুরী ভিত্তিতে শ্রমিক নিয়োগ করে ফাটলের স্থানে যোগাযোগ উপযোগী করে তোলার কাজ অব্যাহত রয়েছে। সম্প্রতি দিঘীনালা-মারিশ্যা সড়কের দুইটিলা এলাকায় পাহাড়ধসের ঘটনায় যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে শত শত যানবাহনসহ যাত্রীরা আটকা পড়ে। বেলা তিনটা দিকে শ্রমিক নিয়োগ করে সড়কের মাটি সরিয়ে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক করার বিষয়টি নিশ্চিত করেন, খাগড়াছড়ি সওজ’র বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. আব্দুস শহিদ।
সড়কের অন্তত ২শ ফুট জুড়ে মাটি ও গাছ উপড়ে পড়লে সড়ক থেকে মাটি সরানো কাজ শুরু হয়। বাঘাইছড়ি থানা উপপরিদর্শক (এসআই) মো.রুবেল হোসেন সিএইচটি মিডিয়া প্রতিনিধিকে বলেন, দুইটিলা এলাকায় পাহাড়ধস হওয়া প্রচুর ক্ষতি হয়েছে। বাঘাইছড়ি উপজেলা বঙ্গলতলি চেয়ারম্যান জ্ঞান জ্যোতি চাকমা সিএইচটি মিডিয়া প্রতিনিধিকে বলেন, এর আগে ১৩ জুন পাহাড়ধসে এই সড়ক বিছিন্ন হয়ে পড়েছিল। পাহাড়ধসের ফলে প্রায় ১০ লক্ষাধিক টাকা ক্ষতি হয়েছে।
এছাড়াও জেলার দিঘীনালা বাবুছড়া সড়কের ১৫কিলোমিটার স্থানে ভেঙ্গে যায় এবং বক্স কার্লভাট ধসে পড়ে যায়। খাগড়াছড়ি সড়ক ও জনপদ বিভাগ মাধ্যমে বেইলী ব্রীজ নির্মাণ করে দিয়ে সড়কে যোগাযোগ স্বাভাবিক রাখা হয়। খাগড়াছড়ি-চট্টগ্রাম মহাসড়কের আর্ন্তজাতিক ভাবনা কেন্দ্র (ময়লা স্তুপ) জায়গা টানা বৃষ্টিতে রাস্তা পাহাড়ী ঢলে ভেঙ্গে যায়। গাছের খুটি ও মাটি ভরাট করে বালির বস্তা মাধ্যমে যানবাহন চলাচল সুযোগ করে দেয়া হয়। মানিকছড়ি,মাটিরাঙ্গার ব্যাঙমারা,সাপমারার বিভিন্ন স্থানে পাহাড় ধসে পড়ে রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়। পরে তা যানবাহন চলাচলের উপযোগি করে তোলা হয়। খাগড়াছড়িতে টানা বৃষ্টিতে পাহাড়ধসে সড়ক সংস্কারের কাজে রক্ষনা-বেক্ষণ খাত থেকে ১১ লক্ষ ৪০হাজার টাকার মত ব্যয় হয়েছে বলে জানা যায়। টানা বৃষ্টিতে এতে প্রায় এক কোটি টাকার অধিক পরিমাণ ক্ষয় ক্ষতি হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।