বৃহস্পতিবার ● ১৯ নভেম্বর ২০১৫
প্রথম পাতা » কৃষি » রাঙামাটিতে মহাসমারোহে শুরু হয়েছে রাজবন বিহারে কঠিন চীবর দানোত্সব
রাঙামাটিতে মহাসমারোহে শুরু হয়েছে রাজবন বিহারে কঠিন চীবর দানোত্সব
ষ্টাফ রিপোর্টার:: আজ ১৯ নভেম্বর বৃহষ্পতিবার ও শুক্রবার তথাগত বুদ্ধের জীবদ্দশায় মহাপুণ্যবতী বিশাখা কর্তৃক প্রবর্তিত ঐতিহ্যবাহী দানোত্তম কঠিন চীবর দান মহাসমারোহে ও ধর্মীয় ভাবগম্ভীর্যের সাথে উদযাপন করা হচ্ছে ৷ এই দান কার্যের বিশেষ তাত্পর্য্যের দিক হল চবি্বশ ঘন্টার মধ্যে সুতাকাটা হতে আরম্ভ করে সুতা রং করা,তাঁতে কাপড় বুনা এবং সেলাই করে চীবর তৈরী করে ভিক্ষু সংঘের নিকট কর্মফল, ইহকাল পরকাল ও চতুরার্য সত্যের উপর গভীর শ্রদ্ধা রেখে দান করা ৷ বৌদ্ধ শাস্ত্রে উলেস্নখ করা হয়েছে যে, এ পদ্ধতিতে কায়িক ,বাচনিক, মানসিক পরিশ্রম অধিকতর হয় তাই কঠিন চীবর দান মহা ফল প্রদায়ক ৷
এ পূণ্য কর্মে সারা দেশ থেকে তথা বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বৌদ্ধ অনুসারীগণ ও অংশ গ্রহণ করছেন ৷ শুধু বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা নয় ধর্মীয় আনন্দে মাতোয়ারা দেশের সকল ধর্মের সকল সম্প্রদায়৷রাজ বনবিহারের প্রায় কয়েক কিলোমিটার দূর থেকে বিভিন্ন সামগ্রীর দোকান, ফুলের দোকান,দানীয় বস্তু,নানান পসরা সাজিয়ে বসেছেন বিভিন্ন ধর্মের বিভিন্ন সম্প্রদায়ের লোকজন ৷এ এক সম্প্রীতির মিলনমেলা ৷ লোকে লোকারণ্য দুর দুরান্ত থেকে আসা প্রায় কয়েক লক্ষ জনসমাগমের নিরাপত্তা দিতে প্রস্তুত আছে রাঙামাটি জেলার পুলিশ প্রশাসন,জানিয়েছেন, উর্ধ্বতন এক পুলিশ কর্মকর্তা ৷ চীবর দানোত্সবের নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তা দিতে রাঙামাটি জেলা প্রশাসন থেকে দুইটি ও পুলিশ প্রশাসনের চারটি মোট ছয়টি সিসিক্যামেরা বসানো হয়েছে ৷
এছাড়া পুলিশের একটি দল পানি পথে টহল, একটি দল সাদা পোশাকেসহ মোট ছয়ভাগে বিভক্ত হয়ে কাজ করবে পুলিশ প্রশাসন৷ রাঙামাটি রাজবনবিহারের উপাসক উপাসিকা কার্যনির্বাহী পরিষদ, আয়োজক কমিটির একজন কর্মকর্তা ও জেলা পুলিশ প্রশাসনের একজন উর্ধতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন মেলার নাম করে কোন অসাধু চক্র যেন জুয়ার আসর বসিয়ে ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যে আঘাট করতে না পারে সেজন্য আগে থেকে সতর্ক রয়েছে কমিটি এবং পুলিশ প্রশাসন ও সেটাকে গুরুত্ব সহকারে নিচ্ছে৷ তবে কেউ যদি বিভিন্ন দ্রব্য সামগ্রী দিয়ে রিংখেলা আয়োজন করে তবে সেটা মজা করার জন্য খেলতে পারবে বলে জানিয়েছেন আয়োজক কমিটির এক কর্মকর্তা ৷
১৯ নভেম্বর ও ২০ নভেম্বর দুই দিনের কঠিন চীবর দানোত্সবের অনুষ্ঠানসূচীর মধ্যে রয়েছে ১৯ নভেম্বর দুপুর ১.০০টায় বেইন কর্মীদের পঞ্চশীল গ্রহণ বিকাল ৩.০১ মিঃ বেইনঘর উদ্ভোধন বিকাল ৩.১১মিঃ চর্কায় সুতা কাটা শুরু বিকাল ৫.৩০মিঃ সুতা লাঙানো শুরু সন্ধ্যা ৬.১মিঃ সুতা সিদ্ধ ও রং করা শুরু ৭.০১ মিঃ সুতা টিয়ানো শুরু রাত ৮.০০ মিঃ সুতা শুকানো শুরু ৮.৩০মিঃ সুতা তুম করা ও নলী ভরা শুরু ১০.০১মিঃ থেকে বেইন টানা, বেইন বুনা শুরু করে পরদিন সকাল ৬.০০টা পর্যন্ত ৷
২০ নভেম্বর সকাল ৬.০০টা বুদ্ধ পতাকা উত্তোলন ৬.১০মিঃ ভিক্ষুসংঘের প্রাতরাশ ৬.০১ মিঃ হতে সকাল ১১.০০মিঃ চীবর সেলাই করা সকাল ৯.০০মিঃ পরমপুজ্য বনভান্তের প্রতিচ্ছবিসহ ভিক্ষুসংঘের মঞ্চে আগমন ও আসন গ্রহণ ৯.১০মিঃ ধর্মীয় সংগীত পরিবেশন ৯.২০ মিঃ পঞ্চশীল গ্রহণসহ সংঘদান, অষ্টপরিষ্কার দান ১১.০০মিঃ ভিক্ষু সংঘকে পিন্ডদান ১২.৩০মিঃ শোভাযাত্রা সহকারে চীবর ও কল্পতরু মঞ্চে আনয়ন বেলা ২.০০মিঃ অতিথিবৃন্দের অনুষ্ঠান মঞ্চে আসন গ্রহণ ২.২০মিঃ ভিক্ষু সংঘের আসন গ্রহণ ২.২৫ মিঃ ধর্মীয় সংগীত পরিবেশন ২.৩০মিঃ পঞ্চশীল গ্রহণ ২.৫০মিঃ কঠিন চীবর উত্সর্গ ও দান ৩.০০মিঃবিশ্ব শান্তি কামনায় বিশেষ প্রার্থনা ৩.১০মিঃ সভাপতি/ সম্পাদকের স্বাগত বক্তব্য ৩.২০মিঃ প্রধান পৃষ্ঠপোষকের (চাকমা রাজা) বক্তব্য ৩.৪০মিঃ ভিক্ষু সংঘের ধর্মদেশনা ৪.০০মিঃ শ্রীমত্ সাধনানন্দ মহাস্থবীর বনভান্তের ধর্মদেশনা ক্যাসেট হতে এবং সন্ধ্যা৬.০০মিঃ প্রদীপ পূজা অনুষ্ঠিত হবে৷
আপলোড : ১৯ নভেম্বর ২০১৫ : বাংলাদেশ: সময় : বিকাল ৪.৩০ মিঃ