বৃহস্পতিবার ● ১০ আগস্ট ২০১৭
প্রথম পাতা » অপরাধ » আমার বাবার হত্যাকারী ইমনের বিচার চাই : মেয়ে সানজিদা
আমার বাবার হত্যাকারী ইমনের বিচার চাই : মেয়ে সানজিদা
সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি :: (২৬ শ্রাবণ ১৪২৪ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় বিকাল ৪.২৪মি.)‘আমার বাবার পায়ের রগ কেটে ও নির্মম নির্যাতন করে ইমন হত্যা করেছে। আমি বাবার হত্যাকারীর গ্রেফতার ও শাস্তি চাই’ সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার ট্রাক চালক উৎপল রঞ্জন ভদ্র ওরফে সজিবের মেয়ে ছোট্ট শিশু সানজিদা আকতার চৈতি সংবাদ সম্মেলনে কান্নাজড়িত কন্ঠে এমন দাবী জানান। এ সময় কোর্টে মামলা দায়েরের দেড়মাস পরও আসামীদের গ্রেফতার তো দুরের কথা কোর্টে পুলিশী তদন্ত প্রতিবেদন না দেয়ায় নিহত সজিবের স্ত্রী-মা-বাবা ও বোন চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেন। ১০ আগষ্ট বৃহস্পতিবার সকালে দ্য পিপলস্ নিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের অফিসে সংবাদ সম্মেলনে প্রশাসনের কাছে সুষ্ঠ তদন্তপুর্বক আসামীদের গ্রেফতারের দাবী জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে উৎপলের দুই শিশু কন্যা সানজিদা আফরিন চৈত্র, সামিদা আফরিন যুথি, স্ত্রী রাজিয়া সুলতানা, বাবা বাবলু চন্দ্র ভদ্র, মা স্বপ্না রানী ভদ্র, বোন বনা রানী ও তাপসী উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে উৎপলের মা স্বপ্না রানী ভদ্র বলেন, ট্রাকের লোড-আনলোড নিয়ে উপজেলা নয়নগাঁতী গ্রামের বাসিন্দা ও উল্লাপাড়ার আমান ফিডের ট্রাকের দালাল গ্রুপের প্রধান রোস্তম ও তার ছেলে ইমন, ইমরান ও আসলামের সাথে দ্বন্ধ ছিল। জুন মাসের ২৪ তারিখে ইমন ওয়ারড্রপ কেনার কথা বলে কৌশলে উৎপলকে বগুড়ায় নিয়ে যায়। ফেরার পথে চান্দাইকোনার কাছে পায়ের রগ কেটে-পা ভেঙ্গে নির্মম নির্যাতন করে মাইক্রোবাসযোগে স্থানীয় একটি হাসপাতালে পাঠিয়ে দিয়ে পালিয়ে যায়। রাত ১২ টায় অন্যের মারফত সংবাদ পেয়ে চান্দাইকোনা হাসপাতালে গিয়ে উৎপলকে নিয়ে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। ভোরে উৎপল মারা যায়। বগুড়া থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে সুরুতহাল প্রতিবেদন করে লাশ ময়নাতদন্ত করেন। সুরুতহাল প্রতিবেদনে শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম-দুপায়ের হাটু থেকে পাতা পর্যন্ত ভাঙ্গাসহ হত্যাজনিত কান্ড উল্লেখ করা হয়েছে।
উৎপলের বড় বোন বনা রানী, ভাই নন্দ রঞ্জন, বোন জামাই গোপাল চন্দ্র সরকার ও স্ত্রী রাজিয়া সুলতানা জানান, মৃত্যুর আগে উৎপল বলে গেছে ইমন ও তার সহযোগীরা তাকে মারপিট করেছে। পুলিশের সুরুতহাল প্রতিবেদন নিয়ে মৃত্যুর পর উল্লাপাড়া থানায় মামলা করতে গেলে ওসি দেওয়ান কৌশিক আহমেদ বিষয়টি দুর্ঘটনায় বলে আখ্যায়িত করে উল্টো আমাদের গালমন্দ করে থানা থেকে বের করে দেয়। বাধ্য হয়ে কোর্টে মামলা দায়ের করা হলে আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে উল্লাপাড়ার থানার ওসিকে তদন্তপুর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন এবং তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। কিন্তু দেড় মাস পার হলেও কোন তদন্ত কার্যক্রম শুরু করা হয়নি। ইতোমধ্যে কোর্টও ওসিকে কারন দর্শানোর জন্য বলেছে। তারপরেও ওসি অজ্ঞাত কারণে নিশ্চুপ রয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, আসামীদের সাথে ওসির সুসম্পর্কের কারণেই ওসি তদন্ত প্রতিবেদন দিতে নানা তালবাহানা করছে। এ অবস্থায় মামলাটি সিআইডি-পিবিআই এর মাধ্যমে তদন্তের দাবী জানান স্বজনরা।
এ বিষয়ে উল্লাপাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) দেওয়ান কৌশিক আহমেদ সিএইচটি মিডিয়া প্রতিনিধিকে জানান, প্রাথমিক তদন্তে ধারনা করা হচ্ছে উৎপল সড়ক দুর্ঘটনা মারা গেছে। ময়না তদন্তের প্রতিবেদন ছাড়া স্পষ্ট করে কিছু বলতে পাচ্ছি না। ময়না তদন্তের রিপোর্টটি পেলে অধিকতর তদন্ত শেষে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদ প্রেরণ করা হবে।