সোমবার ● ১৪ আগস্ট ২০১৭
প্রথম পাতা » প্রকৃতি ও পরিবেশ » ভারী বর্ষণে নেতাই নদীর বাধ ভেঙ্গে ধোবাউড়া ও হালুয়াঘাটে লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি
ভারী বর্ষণে নেতাই নদীর বাধ ভেঙ্গে ধোবাউড়া ও হালুয়াঘাটে লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি
ময়মনসিংহ অফিস :: (৩০ শ্রাবণ ১৪২৪ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় বিকাল ৩.১১মি.) ময়মনসিংহের সীমান্তবর্তী ধোবাউড়া উপজেলার কালিকাবাডী গোদারাঘাট এলাকায় নেতাই নদীর বাধ ভেঙ্গে ৫টি ইউনিয়নের ৮০টি গ্রামের প্রায় লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। সেইসাথে গত তিন দিনের ভারী বর্ষণে পাহাড়ী ঢল নেমে সীমান্তবর্তী হালুয়াঘাট ও ধোবাউড়া উপজলার প্রায় ৮০টিরও বেশি গ্রাম বন্যার পানিতে প্লাবিত হওয়ায় মানবেতর জীবনযাপন করছে পানিবন্দী লক্ষাধিক মানুষ।
এসব এলাকায় প্রবল স্রোতের তোড়ে নদীর পাড় ভেঙে পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বিলীন হয়ে পানির নিচে যাচ্ছে জনপদের পর জনপদ। ফসলের মাঠ, ঘরবাড়ি, স্কুল প্রতিষ্ঠান ও মাদ্রাসাসহ সকল স্থাপনা একের পর এক নদীগর্ভে চলে যাচ্ছে । নদী ভাঙন কবলিত এলাকার এসব অসহায় মানুষগুলো নিঃসম্বল অবস্থায় অপেক্ষাকৃত উঁচু জায়গায় আশ্রয় নেয়ার চেষ্টা করছে।
স্থানীয ইউপি চেয়াররম্যান ফজলুল হক স্রোতের সিএইচটি মিডিয়াকে জানান, দক্ষিণ মাইজপাডা ইউনিযনের কালিকাবাডী এলাকায় প্রায় ১০০ ফুট নদীর পাড় ভেঙে পাহাডি ঢলের পানি প্রবেশ করে কালিকাবাড়ী, নয়াপাড়াা, জাঙ্গালিয়াপাডা, দুধকুড়া, ভল্লবপুর, খাগগড়া ও সোহাগীপাড়া গ্রামসহ প্রায় ৮০টিরও বেশি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
ধোবাউড়া উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, গত তিন দিনের অবিরাম বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে ধোবাউড়া উপজেলার দক্ষিণ মাইজপাড়া ইউনিয়নের ২০টি, গামারীতলা ইউনিয়নের ২০টি, পোড়াকান্দুলিয়া ইউনিয়নের ২৫টি, ঘোঁষগাও ইউনিয়নের ৫টি এবং নতুন করে প্লাবিত হচ্ছে গোয়াতলা ইউনিয়নের প্রায় ১০টি গ্রাম। শনিবার পাহাড়ি ঢলের দক্ষিণ মাইজপাড়া ইউনিয়নের নেতাই নদীর বাঁধ ভেঙে ভাসিয়ে নিয়ে যায় বেশ কয়েকটি কাঁচা ঘরবাড়ি, গরু-ছাগল ও হাঁস-মুরগি। শ্রেণিকক্ষে পানি উঠে পড়ায় ৫৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
পোড়াকান্দুলিয়া ইউনিয়নের আব্দুল খালেক জানান, ”বাড়ি-ঘর যা আছিন সব পানির তলে। অহন পর্যন্ত সরকারী কোনো সাহায্য পাইছিনা। কেউ আইছেওনা। নাতি নাতকর পোলাপান লইয়া খুব কষ্টে আছি গত আষ্ট (আট) দিন ধইরা।
এদিকে হালুয়াঘাট উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা জাকির হোসেন ক্ষতিগ্রস্থ্ এলাকা পরির্দশন করে জানান,ক্ষতিগ্রস্থ্য এলাকার মানুষজনের পাশে দাড়াবেন তিনি।
অপরদিকে ”ধোবাউড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন এ বিষয়ে বলেন, প্লাবিত এলাকায় খাবার পানির সংকট দেখা দিয়েছে। এসব এলাকার মানুষজনকে নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য ইতোমধ্যেই নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সেইসাথে ত্রাণের ব্যাবস্থাও করা হচ্ছে বলেও জানান ইউএনও।
ধোবাউড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মজনু মৃধা জানান, স্থানীয় এমপি ও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দুর্গতদের মাঝে কিছু শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। তবে প্রয়োজনের তুলনায় তা অপ্রতুল।
তবে হালুয়াঘাট ও ধোবাউড়া আসনের স্থানীয় সংসদ সদস্য জুয়েল আরেং জানান, এলাকায় পর্যাপ্ত ত্রাণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বাঁধ ভেঙে যেসব এলাকা প্লাবিত হয়েছে সেই এলাকায় স্থায়ীভাবে বাঁধ দেয়ার ব্যবস্থা করা হবে।