বুধবার ● ১৬ আগস্ট ২০১৭
প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম » সন্দ্বীপেও বসে নেই সম্ভাব্য এমপি প্রার্থীরা
সন্দ্বীপেও বসে নেই সম্ভাব্য এমপি প্রার্থীরা
মাহমুদুল হাসান,সন্দ্বীপ প্রতিনিধি :: সন্দ্বীপেও বসে নেই সম্ভাব্য প্রার্থীরা : বড় দু’দলে বড় বেশি কোন্দল : ৮ বছর ৮ মাসে প্রাণহানি ঘটেছে ১৫ জনের : দেশের মূল ভুখন্ড থেকে সড়ক পথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন উপজেলা সন্দ্বীপেও একাদশ সংসদ নির্বাচনে সম্ভাব্য প্রার্থীরা বসে নেই। গেল ঈদে প্রার্থীদের ঈদ উপহারের পাশপাশি ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময়, পোষ্টার, ঈদ কার্ড, বাড়ি টু বাড়ি ঈদ আলিঙ্গন করতে দেখা গেছে। কেউ কেউ ঈদ বকশিস হিসেবে নগদ টাকাও বিতরণ করেছেন। এখন চলছে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে প্রচারণা ও জনমত জরিপ। সন্দ্বীপ স্বাধীনতা পূর্ববর্তীকালে মুসলিম লীগ, স্বাধীনতা পরবর্তীতে বিএনপি অধ্যুষিত এলাকা হলেও এখানে মুস্তাফিজ পরিবার জাতীয় নির্বাচনে ফ্যাক্ট।
সন্দ্বীপ থেকে প্রথম সংসদ নির্বাচনে এমপি নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী এম ওবায়দুল হক, দ্বিতীয় সংসদ নির্বাচনে এমপি নির্বাচিত হন গণফ্রন্ট মনোনীত প্রার্থী এ কে এম রফিক উল্লাহ চৌধুরী, তৃতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচিত হন। স্বতন্ত্র প্রার্থী অ্যাডভোকেট এ কে এম শামসুল হুদা, চতুর্থ সংসদ নির্বাচনে এমপি নির্বাচিত হন জাতীয় পার্টি এরশাদ মনোনীত প্রার্থী অ্যাডভোকেট এ কে এম শামসুল হুদা, পঞ্চম সংসদ নির্বাচনে এমপি নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আলহাজ্ব মুস্তাফিজুর রহমান, ৬ষ্ঠ সংসদ নির্বাচনে এমপি নির্বাচিত হন (১৫ ফেব্রুয়ারি’৯৬) বিএনপি মনোনীত প্রার্থী আলহাজ্ব মোস্তফা কামাল পাশা, সপ্তম সংসদ নির্বাচনে এমপি নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আলহাজ্ব মুস্তাফিজুর রহমান, অষ্টম ও নবম সংসদ নির্বাচনে এমপি নির্বাচিত হন বিএনপি মনোনীত প্রার্থী আলহাজ্ব মোস্তফা কামাল পাশা, দশম সংসদ নির্বাচনে এমপি নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আলহাজ্ব মাহফুজুর রহমান মিতা। তিনি সাবেক সাংসদ প্রয়াত মুস্তাফিজুর রহমানের জ্যৈষ্ঠ পুত্র এবং চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক। সন্দ্বীপে আওয়ামী লীগের বাইরে ব্যক্তি মুস্তাফিজের জনসম্পক্তৃতা ও দানের কারণে মুস্তাফিজ পরিবারের ভোট রয়েছে ৩২/৩৫ হাজার। গেলো ৮ বছর ৮ মাসে আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দলে দলীয় কর্মীসহ নিরীহ ১৫ জন মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে। সবচেয়ে বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে মগধারা ইউনিয়নে।
সন্দ্বীপে গ্রুপ-উপ গ্রুপে বহুদা বিভক্ত বিএনপি। এই গ্রুপ গুলো হলো-আলহাজ্ব মোস্তফা কামাল পাশা (গিয়াস কামাল চৌধুরী), মোস্তফা কামাল পাশা বাবুল (সরাসরি কেন্দ্র), নুরুল মোস্তফা খোকন (আসলাম চৌধুরী), অ্যাডভোকেট আবু তাহের (সন্দ্বীপ বিএনপি’র একাংশের সভাপতি), যুবদল নেতা ফোরকান উদ্দিন রিজভী (আসলাম চৌধুরী), ছাত্রদল নেতা আনিস আক্তার টিটু (আসলাম চৌধুরী)। সন্দ্বীপ আওয়ামী লীগও অন্তত চার গ্রুপে বিভক্ত। গ্রুপ গুলো হল-আলহাজ্ব মাহফুজুর রহমান মিতা (এমপি গ্রুপ), আলহাজ্ব মাস্টার শাহজাহান (উপজেলা চেয়ারম্যান গ্রুপ), শিল্পপতি আকরাম খান দুলাল (খান গ্রুপ) ও জাফর উল্লাহ টিটু (মেয়র গ্রুপ)।
আগামী একাদশ সংসদ নির্বাচনে ২৮০-চট্টগ্রাম ৩ সন্দ্বীপ আসন থেকে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন চাইতে পারেন- বর্তমান এমপি আলহাজ্ব মাহফুজুর রহমান মিতা, উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মাস্টার শাহজাহান, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আকরাম খান দুলাল, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতা ডা. জামাল উদ্দিন চৌধুরী, পৌর মেয়র জাফর উল্লাহ টিটু প্রমুখ। বিএনপি থেকে মনোনয়ন চাইতে পারেন সাবেক এমপি আলহাজ্ব মোস্তফা কামাল পাশা, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপি’র সদস্য দানবীর নুরুল মোস্তফা খোকন, যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা কামাল পাশা বাবুল, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপি’র সাবেক যুগ্ম সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবু তাহের প্রমুখ। ছোটদল গুলোর মধ্যে এনপিপি ছাড়া অন্য কোন দলের কার্যক্রম চোখে পড়ে না। জনশ্রুতি রয়েছে ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি) থেকে আম প্রতীকে নির্বাচন করবেন আবুল কাসেম হায়দার মহিলা কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মুকতাদের আজাদ খান। তাঁর মাঝে বিরাজমান তারুণ্য নির্ভরতা ও সৃজনশীলতা। তিনি এনপিপি’র চট্টগ্রাম জেলা সভাপতি ও জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সহ-সভাপতি। শেষ পর্যন্ত এই্ সাবেক ছাত্রনেতাও একাদশ সংসদ নির্বাচনে ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়াতে পারেন।
একাদশ সংসদ নির্বাচনে যেই নির্বাচিত হোন না কেন সন্দ্বীপবাসীর চাওয়া ঝুঁকিমুক্ত গুপ্তছড়া কুমিরা নৌপথ নিশ্চিত করা, সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে সন্দ্বীপকে বিদ্যুতায়ন ও আভ্যন্তরীণ সন্ত্রাস সমূলে নির্মূল করা।