বৃহস্পতিবার ● ১৭ আগস্ট ২০১৭
প্রথম পাতা » অপরাধ » ফুলবাড়িয়ায় যৌতুকের দাবীতে স্ত্রী হত্যার দায়ে স্বামীর মৃত্যুদন্ড
ফুলবাড়িয়ায় যৌতুকের দাবীতে স্ত্রী হত্যার দায়ে স্বামীর মৃত্যুদন্ড
ময়মনসিংহ অফিস:: (২ ভাদ্র ১৪২৪ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৬.০২মি.) ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ায় যৌতুকের ঘটনায় স্ত্রী পাপিয়া আক্তারকে হত্যার দায়ে তার স্বামী মনিরুজ্জামান সেলিমকে মৃত্যুদন্ড দিয়েছেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক। সেইসাথে ১০ হাজার টাকা জরিমানার আদেশ দেন।
১৭ আগষ্ট বৃহস্পতিবার দুপুরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক এবং জেলা ও দায়রা জজ মোঃ হেলাল উদ্দিন জনাকীর্ণ আদালতে এই রায় ঘোষণা করেন।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা যায়, ২০০৯ সালের ৯ অক্টোবর ফুলবাড়িয়া উপজেলার কালাদহ দীঘল পাড়া গ্রামের মৃত ইদ্রিস আলীর ছেলে মনিরুজ্জামান সেলিমের সাথে মো. ছফর আলীর মেয়ে পাপিয়া আক্তারের (২১) বিয়ে হয়। বিয়ের সময় পাপিয়া আক্তার সরকারী আনন্দ মোহন কলেজে ইসলামের ইতিহাসে ২য় বর্ষের ছাত্রী ছিল এবং স্বামী মনিরুজ্জামান সেলিম বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ওয়ার্ল্ডভিশনে চাকরি করতো। পরবর্তীতে স্বামী মনিরুজ্জামান স্বাস্থ্য বিভাগে চাকরি নিবে বলে স্ত্রীর কাছে দুই লাখ টাকা যৌতুকের দাবিতে শ্বশুর বাড়ি পাঠায়। পাপিয়ার বাবা যৌতুক দিতে অপারগতা প্রকাশ করে মেয়েকে নিজের বাড়িতেই রেখে দেয়। ঘটনার ১৫ দিন আগে মনিরুজ্জামান স্ত্রী পাপিয়াকে বাড়ি নিয়ে আসে এবং শারিরীক নিযার্তন শুরু করে।
এরই এক পর্যায়ে ২০১০ সালের ২৭ এপ্রিল দিনগত রাতে পাপিয়াকে নিযার্তনে হত্যা করে তার স্বামী মনিরুজ্জামান। পরদিন পাপিয়ার বাবাকে মেয়ে(পাপিয়া)অসুস্থ্যতার খবর পাঠালে তার স্বজনরা এসে ঘরের ভেতর পাপিয়ার মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখে। পরে বিষয়টি ফুলবাড়িয়া থানা পুলিশকে অবহিত করা হলে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ মর্গে পাঠায়। সেইসাথে এঘটনায় পাপিয়ার বাবা মো. ছফর আলী বাদী হয়ে ফুলবাড়িয়া থানায় মামলা দায়ের করেন।
আদালতে আসামি পক্ষসহ ১৫ জনের সাক্ষ্য প্রমান শেষে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিজ্ঞ বিচারক এবং জেলা ও দায়রা জজ মো. হেলাল উদ্দিন বৃহস্পতিবার আসামীর উপস্থিততে জনাকীর্ণ আদালতে মনিরুজ্জামানকে মৃত্যুদন্ড এবং ১০ হাজার টাকা জরিমানার আদেশ দেন।
মামলার অপর আসামি মনিরুজ্জামানের বন্ধু নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমানিত না হওয়ায় আদালত তাকে বেকসুর খালাস প্রদানের নির্দেশ দেন।
রাস্ট্রপক্ষে বিশেষ পিপি অ্যাডভোকেট কবির উদ্দিন ভূইয়া ও অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলাম চুন্নু এবং আসামি পক্ষে অ্যাডভোকেট বিশ্বনাথ পাল ও অ্যাডভোকেট সনজীব কুমার সরকার মামলা পরিচালনা করেন।