শনিবার ● ১৯ আগস্ট ২০১৭
প্রথম পাতা » পটুয়াখালী » সৌন্দর্যের অারেক নাম সোনার চর
সৌন্দর্যের অারেক নাম সোনার চর
হাসান আলী,পটুয়াখালি প্রতিনিধি :: (৪ ভাদ্র ১৫২৪ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় সকাল ১১.৫৫মি.) পটুয়াখালী জেলার রাঙ্গাবালী উপজেলাধীন তেঁতুলিয়া ও বুড়া গৌরাঙ্গ নদীর মোহনার বিশাল একটি দ্বীপচরের নাম সোনার চর।সম্ভাবনাময় সোনার চর হয়ে উঠতে পারে বিশ্বমানের পর্যটন কেন্দ্র। জেলা সদর থেকে ১২০ কিমি দক্ষিণ-পূর্বে এবং কুয়াকাটা থেকে সোজা পূর্বে ৫০ কিমি দূরে অবস্থিত বঙ্গোপসাগরের বুক চিড়ে জেগে ওঠা এ চরটি রাঙ্গাবালী উপজেলার দক্ষিণ সীমা তথা শেষ ভূখণ্ড। বিংশ শতাব্দীর ৩০ এর দশকে জেগে ওঠা এ মায়াবী দ্বীপটিতে সোনা নেই বটে। কিন্তু অপার সম্ভাবনাময় দ্বীপটিতে পর্যটন শিল্পের বিকাশ ঘটানো গেলে এটি হয়ে উঠতে পারে সোনার মতো মূল্যবান। এখানকার বালুকারাশির উপর সোনালী সূর্যের ঝলমলে আলো যখন প্রতিবিম্বিত হয় তখন তা দেখতে অনেকটা সোনার মতো মনে হয়। এ থেকেই লোকজন চরটির নাম দেয় সোনার চর। প্রায় ১০ হাজার একর আয়তন বিশিষ্ট উত্তর-দক্ষিণে লম্বা কিছুটা ডিম্বাকৃতির এ চরটির দিকে ২০০৪ সালে নজর দেয় সরকার। এরই প্রেক্ষিতে পটুয়াখালী উপকূলীয় বনবিভাগ বনায়ন শুরু করে এবং পরে এখানে কিছু প্রাণী উন্মুক্ত করা হয়। ২০১১ সালের ১৬ ডিসেম্বর সংরক্ষিত এ বনভূমিকে অভয়ারণ্য ঘোষণা করা হয়।
নয়ানাভিরাম সৌন্দর্যের নানা আয়োজন রয়েছে এ দ্বীপটিতে। সোনার চরের ভিতরে মাকড়সার জালের মতো ছড়ানো অসংখ্য সোতা-খাল। এসব খালের দুপাশে সবুজের নিশ্ছিদ্র দেয়াল হয়ে দাড়িয়ে আছে প্রকৃতি তথা বনবনানীর নিপুণ কারুকাজ। সাগর, নদী, ঢেউ, সাত কিলোমিটার দীর্ঘ সমুদ্র সৈকতের একই স্থানে দাঁড়িয়ে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত উপভোগ, লাল কাঁকড়ার অসাধারণ শিল্পকর্ম ও ছোটাছুটির দৃশ্য আপনার ভ্রমণক্লান্ত মনটাকে দিতে পারে অনাবিল আনন্দের এক কোমল পরশ। এখানে ঘুরতে ঘুরতে আপনার চোখের সামনে এসে পড়তে পারে বুনো মহিষ, হরিণ, শুকর, বানর, মেছো বাঘসহ আরো কোন বন্য প্রাণীর দল। এ চরে প্রচুর দেশী-বিদেশী পাখির বিচরণ রয়েছে। বিশেষ করে শীত মৌসুমে প্রচুর পরিযায়ী পাখি আসে এখানে।
এখানে অস্থায়ী ভিত্তিতে গড়ে ওঠা জেলে পল্লীর জেলেদের জীবনাচরণ আপনার চিন্তার জগতকে দোলা দিবে নিঃসন্দেহে। প্রতি বছর অক্টোবর নভেম্বর মাসে বিভিন্ন অঞ্চল থেকে জেলেরা এখানে আসেন এবং ঘর তোলেন পাঁচ-ছয় মাসের জন্য। তারা বিশেষ ধরনের কিছু মাছ ধরেন এবং তা শুকিয়ে শুটকি তৈরি করেন।
সোনার চরের যাতায়াতের সমস্যা ও কাঙিক্ষত প্রচার-প্রচারণার অভাবে পর্যটক প্রিয় হয়ে উঠতে পারেনি অপার সম্ভাবনাময় এ দ্বীপটি। দ্বীপটির অবস্থানগত বৈশিষ্ট্য ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের কারণে এখানে গড়ে উঠতে পারে মালদ্বীপ, বালি ও পাতায়ার মতো বিশ্বমানের পর্যটন কেন্দ্র। এজন্য দরকার সরকারি-বেসরকারি সমন্বিত উদ্যোগ।