সোমবার ● ২১ আগস্ট ২০১৭
প্রথম পাতা » অপরাধ » সিলেটে ১ মাসে ১২ মাদক ব্যবসায়ী আটক
সিলেটে ১ মাসে ১২ মাদক ব্যবসায়ী আটক
সিলেট প্রতিনিধি :: (৬ ভাদ্র ১৪২৪ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় রাত ৮.৩২মি.) সিলেটের ওসমানীনগরে এখন হাত বাড়ালেই মিলছে মাদক। মাদকের ভয়াবহ ছোবলে ধ্বংস হচ্ছে যুবসমাজ। যে বয়সে পড়াশুনা ও খেলাধুলায় মনোযোগী হওয়ার কথা, সে বয়সে স্বাভাবিক জীবন থেকে অনেক দূরে ঠেলে দিচ্ছে মাদকের নেশা।
পাশাপাশি স্কুলগামী, কিশোর ও পথশিশুরাও আসক্ত হয়ে পড়ছে সর্বনাশা মাদকের ছোবলে। আর এ নেশায় আক্রান্ত হয়ে অন্ধকারে তলিয়ে যাচ্ছে যুবসমাজ। নেশা গ্রহনকারী শিশু-কিশোরদের মধ্যে বেশিরভাগই নিন্মবিত্ত পরিবারের সন্তান। যাদের বয়স ১৫ থেকে ২৫ বছর। আর তাই রকেট গতিতে বাড়ছে ওসমানীনগরে মাদকদ্রব্যের চাহিদা।
যার প্রমান গত এক মাসে ওসমানীনগর থানা পুলিশসহ সিলেট ব্যাটালিয়ান পুলিশ এবং সিলেট মাদক দ্রব্য অধিদপ্তর অভিযান পরিচালনা করে জুয়া খেলার সিলেট জোনের প্রধান এজেন্টসহ ১২জন মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করেছে।
আটককৃদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট আইনে মামলা দায়ের করে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে বলে থানা পুলিশ সুত্রে জানা গেছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, উপজেলার একাধিক স্পটে রয়েছে মাদক ব্যবসায়ীদের রয়েছে শক্তিশালী সিন্ডিকেট। এ সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে সাধারণ জনগণ ভয়ে মুখ খুলতে নারাজ।
উপজেলার দয়ামীর, তাজপুর, কুরুয়া বাজার, মাটিহানী, গোয়ালাবাজার, তেরহাতি, নয়াবন্দর, বুরুঙ্গা বাজার, কলারাই, বেগমপুর, সাদিপুর, উপজেলার সিমান্তবর্তী শেরপুর, নতুন বাজারসহ একাধিক স্পটে প্রতিদিন হাজার হাজার টাকার মাদক বিক্রি হচ্ছে, অনেকটাই প্রকাশ্যে।
থানা পুলিশ বিভিন্ন সময় অভিযান পরিচালনা করে মাদক ব্যবসায়ীদের আটক করলেও পরবর্তীতে তারা ছাড়া পেয়ে আবার এ ব্যবসায় সংক্রিয় হয়ে উঠে। ১৭ আগস্ট বুধবার রাতে সিলেট ব্যটেলিয়ান পুলিশ উপজেলার গোয়ালাবাজারে অভিযান পরিচালনা করে ভারতীয় নাসির বিড়িসহ দুই জনকে আটক করে।
পরে ব্যাটালিয়ান-৭ পুলিশের এস আই আলী খান বাদী হয়ে ওসমানীনগর থানায় সংশ্লিষ্ট আইনে একটি মামলা দায়ের করেন মামলা নং ১৫।
আটককৃতরা হলো-নগরী কাপন গ্রামের মৃত ছিদ্দেক আলীর পুত্র আয়াছ মিয়া (৩৮) ইলাশপুর গ্রামের সতেন্দ্র করের পুত্র সমর কর (৪৮)। উদ্ধারকৃত নাসির বিড়ির বাজার মূল্যে ৫ লক্ষ ৫ হাজার ৫শত টাকা বলে জানা গেছে।
৬ আগস্ট পুলিশের বিশেষ অভিযানে মাদক ব্যবসায়ী সহ ৫জনকে আাটক করা হয়। আটককৃতরা হলেন, হুরমত উল্যার ছেলে আব্দুল বারী (৪৫), নগরীকাপন গ্রামের মৃত আব্দুল মুতলিবের ছেলে মনু মিয়া (৩৫), বিশ্বনাথ উপজেলার শিমুলতলা গ্রামের মৃত আজব আলীর ছেলে মুখলিছ আলী (৪৫), সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার সাকিবপুর গ্রামের মৃত শের আলীর ছেলে মুস্তাকিম (২২)খুজগীপুর গ্রামের ওয়ারেন্টভুক্ত পলাতক আসামী নূর আলম। আটককৃত আব্দুল বারী, মনু মিয়া, মুস্তাকিম ও মখলিছ আলীর নিকট থেকে ৬শ, ১০ গ্রাম গাঁজা ৫ বোতল বিদেশী অফিসার চয়েজ মদ ও ৫পিছ ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে।
৭ আগস্ট পৃথক অভিযানে প্রাইভেটকার ও দুটি বস্তাবর্তী ২০ কেজি গাঁজাসহ তিন মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করা হয়। আটককৃত মাদক ব্যবসায়ীরা হলো- বিশ্বনাথ উপজেলার খাসজান গ্রামের মৃত আব্দুল গনির পুত্র ইলিয়াস আলী (৫০), হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট উপজেলার পনারগাঁও গ্রামের আব্দুল খালেকের পুত্র রুবেল মিয়া (২২) ও একই উপজেলার সুন্দরপুর গ্রামের আব্দুল করিমের পুত্র রমজান আলী (২৮)।
৩ আগস্ট ৩০ বোতল বিদেশী মদ, ৩ কেজি গাঁজা ও মাদক বিক্রির ১৮শ’ ৫০ টাকা সহ আটক করা হয় মাদক বিক্রেতা বাবুলকে।
সিলেট মাদক দ্রব্য অধিদপ্তর ও ওসমানীনগর থানা পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে উপজেলার বুরুঙ্গা ইউপির পূর্ব সিরাজনগর থেকে মাদক সহ বাবুলকে আটক করা হয়। বাবুল উপজেলার বুরুঙ্গা ইউপির পূর্ব সিরাজনগর গ্রামের আব্দুস সামাদের ছেলে।
২৬ জুলাই শিলং তীর খেলার সিলেট অঞ্চল প্রধান রুহেল আহমদ (২৮) কে আটক করা হয়। গোয়ালাবাজার-খাদিমপুর একটি মার্কেটে অভিযান চালিয়ে ভারতের শিলং তীর নামক জুয়া খেলার সিলেট জোনের প্রধান এজেন্ট রুহেল আহমদকে গ্রেফতার করা হয়। জুয়া খেলায় ব্যবহৃত একটি মোবাইল সেট, খেলার এক হাজার তিনশত আশি টাকা এবং ব্যবহৃত একটি হালকা নীল রঙ্গের ভিজিটিং কার্ডের উল্টা পিঠে লটারি সংখ্যা লেখাও উদ্ধার করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে ওসমানীনগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ সহিদ উল্যা সিএইচটি মিডিয়া প্রতিনিধিকে বলেন, ওসমানীনগর থানা পুলিশের পক্ষ থেকে মাদক নির্মূলে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। মাদক নির্মূলে ওসমানীনগর থানা পুলিশ তৎপর।