সোমবার ● ২১ আগস্ট ২০১৭
প্রথম পাতা » জাতীয় » শিক্ষক আকবর হোসেন ২২ বছর পর স্বপদে বহাল হলেন
শিক্ষক আকবর হোসেন ২২ বছর পর স্বপদে বহাল হলেন
চাটমোহর (পাবনা) প্রতিনিধি :: (৬ ভাদ্র ১৪২৪ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় রাত ৮.৫২মি.) বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির চক্রান্তে ও আর্থিক দূর্ণীতির মিথ্যা অভিযোগে অভিযুক্ত করে বিদ্যালয় থেকে বহিস্কার হওয়ার পরে চাকুরী জীবনের শেষ সময়ে এসে আদালতের রায়ে স্বপদে বহাল হলেন চাটমোহর উপজেলার মূলগ্রাম ইউনিয়নের আটলংকা দ্বি-মূখী উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক মো. আকবর হোসেন।
গত রবিবার দুপুরে শিক্ষা মন্ত্রনালয় থেকে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানের উপর আদেশ হলে তা বাস্তবায়নে চাটমোহর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বেগম শেহেলী লায়লা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে তাকে যোগদান করান। এসময় উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. সাইদুর রহমান তার যোগদান পত্র গ্রহন করেন। এতে করে উক্ত বিদ্যালয়ের বর্তমান প্রধান শিক্ষক আব্দুল আজিজের নিয়োগ অবৈধ বলে বিবেচিত হয়ে যায়।
জানা গেছে, ১৯৯৫ সালে আটলংকা দ্বি-মূখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আকবর হোসেনের বিরুদ্ধে আর্থিক দূর্ণীতির মিথ্যা অভিযাগ এনে বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদ তাকে চাকুরীচ্যুত করে। পরে প্রধান শিক্ষক তার চাকুরীচ্যুতের বিষয়টি চ্যালেঞ্জ করে নি¤œ আদালতে মামলা করেন। সে মামলায় শিক্ষক আকবর হোসেন তার পক্ষে রায় পান। এই রায়ের বিপক্ষে তৎকালিন ম্যানেজিং কমিটি পাবনা জজ কোর্টে আপিল করেন। সে আপিলেও রায় আসে আকবর হোসেনের পক্ষে।
পরে ম্যানেজিং কমিটির বরাতে হাইকোর্টে আবার আপিল করা হয়। আপিলে শিক্ষক আকবর হোসেনের পক্ষেই রায় দেয় হাইকোর্ট। এই রায়ের বিপক্ষে প্রতিপক্ষ রিভিউ পিটিশন দায়ের করেন এবং সেখানেও এই শিক্ষক রায় পান। সর্বশেষ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে হাইকোর্টের রায় বহাল রেখে মামলাটি খারিজ হয়ে যায়।
ইতিমধ্যে ঐ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সভাপতি স্থানীয় প্রভাবশালী ঈমান আলি বিশ্বাস নতুন প্রধান শিক্ষক নিয়োগ সহ বেশ কয়েকটি নতুন শিক্ষক নিয়োগ দেন।
এরপর শিক্ষক আকবর হোসেন আদালতের রায় মোতাবেক বৈধ প্রধান শিক্ষক হিসেবে বিদ্যালয়ে যোগদান করতে গেলে উক্ত কমিটির সভাপতি তাকে যোগদান করতে বাধা প্রদান করেন। তারা আদালতের আদেশ, ডিজির নির্দেশ উপেক্ষা করে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে তাকে বিদ্যালয়ে যোগদানে বরাবরই বঞ্চিত করে এবং বাধা প্রদান করে। ইতিমধ্যে শিক্ষক আকবর হোসেনের শিক্ষক জীবনের ২২টি বছর কেটে যায়। মানবেতর জীবন অতিবাহিত করতে থাকেন তিনি। অবশেষে শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের নির্দেশে রাজশাহী মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানের অনুরোধক্রমে বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটি না থাকায় পত্র মারফত চাটমোহর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে যোগদান করানো সহ আদালতের রায় মোতাবেক চাকুরীবিধি অনুযায়ী বকেয়া বেতন ও অন্যান্য যাবতীয় পাওনা পরিশোধের অনুরোধ করা হয়। ফলে জীবনের শেষ সময়ে হলেও শিক্ষকতা পেশার বৈধতা পেয়ে শিক্ষক আকবর হোসেন সহ তার পরিবার সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।