বৃহস্পতিবার ● ২৪ আগস্ট ২০১৭
প্রথম পাতা » অপরাধ » অবশেষে অটোরিক্সায় চাকায় ওড়না পেঁচিয়ে নিহত কিশোরী ও শিশুটির পরিচয় মিলেছে
অবশেষে অটোরিক্সায় চাকায় ওড়না পেঁচিয়ে নিহত কিশোরী ও শিশুটির পরিচয় মিলেছে
ময়মনসিংহ অফিস :: (৯ ভাদ্র ১৪২৪ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় রাত ১২.২৪মি.) ময়মনসিংহের নান্দাইলে অটোরিক্সার চাকায় ওড়না আটকে শ্বাসরুদ্ধ হয়ে নিহত অজ্ঞাত কিশোরী ও মরদেহের পাশে বসে কান্নারত চার বছরের শিশুটির পরিচয় অবশেষে সনাক্ত হয়েছে। পরিচয় নিশ্চিত হবার পর লাশ মর্গে প্রেরণ করার পাশাপাশি সেই ছোট শিশুটিকে তার মায়ের কোলে তুলে দেয়া হয় বলে জানায় পুলিশ।
বুধবার (২৩ আগষ্ট) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে নিহতের মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জ জেলা সদর হাসাপাতাল মর্গে প্রেরন করা হয়। তার আগে মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) দুপুরে নান্দাইলে অটোরিক্সায় চাকায় ওড়না পেঁচিয়ে নিহত হয় ওই অজ্ঞাত কিশোরী।
নান্দাইল মডেল থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, নিহত অজ্ঞাত কিশোরী কিশোরগঞ্জ জেলার ভৈরব উপজেলার পঞ্চবতী গ্রামের শফিক মিয়া ও শাহানা খাতুনের একমাত্র মেয়ে সোহাগী আক্তার (১৬) এবং কান্নারত শিশুটি তারই ছোট ভাই সোহাগ (৪)।
নিহত উক্ত কিশোরী ও শিশুটি ঢাকা থেকে নিজ বাড়ি ভৈরব যাবার উদ্দ্যেশ্যে গত সোমবার (২১ আগস্ট) ভূলক্রমে ঢাকা-তাড়াইলগামী যাত্রীবাহী বাসে উঠে নান্দাইল উপজেলা সদরে এসে নেমে পড়ে। রাত গভীর হয়ে যাওয়ায় একই বাসের যাত্রী পাশের সীটে বসা নান্দাইল উপজেলার ধুরুয়া গ্রামের রেণুয়ারা বেগমের বাড়িতে আশ্রয় নিয়ে রাত যাপন করে। পরদিন মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) সকালে নাস্তা সেরে সোহাগী আক্তার ও তার ভাই সোহাগ ফের বাড়ির উদ্দেশ্যে একটি অটোরিক্সায় উঠে। কিন্তু চন্ডীপাশা সিনেমা হল এলাকায় অসার পর চলন্ত অটোরিক্সার চাকায় কিশোরীর গলায় ওড়না পেঁচিয়ে গেলে শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মারা যায় সে। অটোরিক্সার চালক কিশোরীকে নান্দাইল উপজেলা সদর হাসপাতাল নিয়ে যাবার পর হাসপাতাল গেইটে তার অটোরিক্সাটি রেখে দ্রুত পালিয়ে যায়।
পরে স্থানীয় লোকজনের সহযোগীতায় জরুরী বিভাগে কিশোরীকে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। এ ঘটনার পর নান্দাইল মডেল থানা পুলিশ অটোরিক্সাটি আটক করে থানায় নিয়ে যায়। সেইসাথে উক্ত কিশোরী ও শিশুর পরিচয় সনাক্তের জন্য নান্দাইল মডেল থানা পুলিশ এবং সংবাদ কর্মীদের সহযোগিতা কামনার পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ব্যাপক প্রচার চালায়।
অপর দিকে ঘটনার পর নান্দাইল মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সরদার মো. ইউনুস আলী এ ব্যপারে নান্দাইল মডেল থানার এসআই সাফায়েত হোসেনকে কিশোরগঞ্জ জেলায় অনুসন্ধান চালানোর কথা বলেন। পরে ব্যাপক অনুসন্ধানে বুধবার (২৩ আগস্ট) সকাল সাড়ে ১১ টার দিকে নিহত উক্ত কিশোরী ও মরদেহের পাশে বসে কান্নারত শিশুটির সঠিক পরিচয় পাওয়া যায়।
নান্দাইল মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সরদার মো. ইউনুস আলী বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, সিএইচটি মিডিয়াসহ মিডিয়াকর্মী ভাইদের সহযোগিতা ও থানার এসআই সাফায়েত হোসেন’র অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে নিহত কিশোরী ও ছোট শিশুটির পরিচয় সনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে। অতঃপর ছোট শিশু সোহাগকে তার মা’ শাহানা খাতুনের কোলে তুলে দেয়া হয়। সেইসাথে নিহত সোহাগী’র মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জ জেলা সদর হাসাপাতাল মর্গে প্রেরনও করা হয়।
উল্লেখ্য, গতকাল ২৩ আগষ্ট সিএইচটি মিডিয়া টুয়েন্টিফোর ডটকম এ “অটোরিক্সায় চাকায় ওড়না পেছিয়ে কিশোরীর মৃত্যূ : পাশে বসে কাঁদছে শিশু” শিরোনামে সংবাদটি প্রকাশিত হয়।